নিজ স্ত্রীর নগ্ন ছবি তুলে ৩ লাখ টাকা দাবি করে আ’লীগ নেতা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্ত্রী শাহানা আক্তার মিকার অশ্লীল ছবি তুলে যৌতুক দাবি করার ঘটনায় দায়ের করা মা’মলায় স্বামী সুমন মিঝিকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে। সুমন উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার)।
এদিকে ৭ জুলাই ইউপি সদস্য সুমন রায়পুর থানায় গিয়ে নতুন ওসি আবদুল জলিলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এরপর ৯ জুলাই সুমনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মা’মলা হয়। স্ত্রীর দায়ের করা মা’মলায় এবার পুলিশের হাতেই গ্রে’প্তার হলেন তিনি।
সোমবার (১৩ জুলাই) বিকেলে সুমনকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তাকে রায়পুর পৌর শহরের প্রধান সড়ক থেকে গ্রে’প্তার করে পুলিশ। রাত ১১টার দিকে মা’মলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, স্ত্রীর দায়ের করা মা’মলার প্রধান আসা’মি সুমন মিঝিকে গ্রে’প্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসা’মিদের গ্রে’প্তারে চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, অশ্লীল ছবি তুলে যৌতুক দাবি ও মা’রধর করার ঘটনায় ৯ জুলাই স্ত্রী বাদী হয়ে স্বামী সুমনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মা’মলা দায়ের করে। অন্য আসা’মিরা হলেন- সুমনের মা নয়ন বেগম, বোন শাহানাজ বেগম ও ভাই মো. টুটুল। মা’মলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সুমন বিয়ে করে।
তখন তিনি শ্বশুর বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে ফার্নিচার নিয়েছে। তাদের সংসারে ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। সুমন নেশাগ্রস্ত ও প’রকীয়া প্রেমে জড়িত। এদিকে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর থেকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীকে মা’রধর করত। এতে তার শাশুড়ি, ননদ ও দেবর সহযোগীতা করত।
প্রায় দেড় বছর আগে মোটরসাইকেল কেনার জন্য স্ত্রীকে দিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা নেয় সুমন। ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর সুমন ফের টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু এতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্ত্রীকে তিনি মা’রধর করেন। এতে তার স্ত্রী বাবার বাড়তে চলে যান। অন্যদিকে গত ৩০ নভেম্বর এফিডেভিটের মাধ্যমে স্ত্রী তাকে তালাক দেয়।
পরে ক্ষমা চাইলে ২৩ ডিসেম্বর তালাক প্রত্যাহার করে নেয় তার স্ত্রী। ফের তারা সংসার শুরু করে। এর মধ্যে সুমন তার স্ত্রীর কিছু অশ্লীল ছবি মোবাইলে ধারণ করে। ছবিগুলো পুঁজি করে চলতি বছর ১ জুলাই সুমন ৩ লাখ টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ করে।
কিন্তু টাকা দেওয়া সম্ভব না বললে একই দিন সুমন তার শাশুড়ি ও নানি শাশুড়িকে বাড়িতে ডেকে নেয়। তাদের কাছে দাবি করা টাকা দিতে বলা হয়। টাকা দিতে পারবে না জানালে তাদের সামনেই স্ত্রীকে মা’রধর করে সুমন। মেয়েকে বাঁচাতে এলে মা ও নানিকে পি’টিয়ে আহত করে সুমনসহ আসা’মিরা। তবে এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সুমন মিঝির পরিবারের কারো বক্তব্য জানা যায়নি।