“আর কতো নারী নির্যাতিত হলে জাতি তার মনুষ্যত্ব ফিরে পাবে“ -ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম
তিন বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে কিশোরী, যুবতী, মধ্যবয়সী সহ সবাই ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অভিজাত হোটেল থেকে শুরু করে রাস্তার পাশের বস্তি এলাকা পর্যন্ত এখন ধর্ষকদের অভয়ারণ্য। পশ্চিমা পোশাকের নারী যেমন ধর্ষনের টার্গেট হচ্ছেন তেমনি হচ্ছেন হিজাব পরিহিতা নারীরাও। নিম্নবিত্ত বা বিত্তহীন নারী কেবল নন, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত থেকে ধনীর দুলালীদেরকেও পোহাতে হচ্ছে ধর্ষণের নরক যন্ত্রণায়। ধর্ষণ একটি ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধি। কিছুদিন আগে নবম শ্রেণির ছাত্রী হিরামনিকে ধর্ষণের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। এর পূর্বে তনু, রিস্তা, নুসরাত এমন হাজারও নারী নৃশংসতার স্বীকার হয়। ধর্ষণের মাত্রা দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। এ কেমন সভ্য সমাজে আমরা বসবাস করছি?
ধর্ষণের জন্য দায়ী অন্যতম কারণসমূহঃ
১.পুরুষের নিচু বা বিকৃত মানসিকতা।
২.নারীকে শারিরিক চাহিদা মেটানোর সামগ্রী মনে করা।
৩.নারী-পুরুষের অবাদ ও অশালীন মেলামেশা।
৪.পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসনের অভাব।
৫.বিচারহীনতার সংস্কৃতি অর্থাৎ সময়মতো বিচার না পাওয়া এবং বিচারের ক্ষেত্রে ভিকটিম পরিবারের হয়রানির স্বীকার হওয়া। ইত্যাদি।
ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরকার ও প্রশাসনের কাছে দাবিঃ
১.ধর্ষণকারীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা।
২.ধর্ষণকারীর জামিন নাকচ করা।
৩.স্বল্প সময়ে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করা।
৪.ভিকটিম পরিবারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; যাতে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয়।
৫.ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দ্রুততম সময়ে কার্যকর করা।
৬.শিক্ষাঙ্গন, জনসমাগমস্থল ও গণপরিবহনে নারীদের চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৭.রাস্তাঘাট ও জনসমাগমস্থল বিশেষ করে স্কুল-কলেজ এলাকায় বখাটেদের দৌরাত্ব শূণ্যে নামিয়ে আনা। ধর্ষণ ও যৌনহয়রানি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা অতি জরুরি।
সামাজিকভাবে আমাদের করনীয় :-
১.ধর্ষণকারীকে সামাজিকভাবে বয়কট করা
২.ধর্ষণকারীকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া।
৩.নির্যাতন প্রতিরোধে সকলকে সাহসের সাথে এগিয়ে আসা।
৪.নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল হওয়া।
৫.পুরুষের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা। ও কন্যা-শিশুকে পণ্য হিসাবে ব্যাবহার অথবা অশ্লীলভাবে উপস্থাপন বন্ধ করা।
৬. সামাজিক ও পারিবারিকভাবে ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
৭.শিক্ষার সকল স্তরে ধর্মীয় অনুশাসনের গুরুত্ব আরোপ করা।
৮.মসজিদের ইমামগণের শুক্রবারের বয়ান ও খুৎবায়, সেই সাথে মন্দির, গির্জাগুলোর ধর্মীয় আলোচনার ভিত্তিতেও বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা।
৯.স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ধর্ষণ ও যৌনহয়রানি প্রতিরোধে ছাত্র-ছাত্রী ও জনগণকে সচেতন করা।
১০.রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সমাজকর্মী এবং সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সোচ্চার হওয়া।
আমরা চাই; আর একটি নারীও যাতে ধর্ষণ নামের অমানুষিকতার স্বীকার না হয়। কোন শিশু যাতে বিকৃত মানসিকতার পুরুষের লালসায় আক্রান্ত না হয়।
লেখক: ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম।
টঙ্গীবাড়ী,মুন্সিগঞ্জ