পাটকল বন্ধ করায় আড়াই লাখ জীবন এখন চরম বিপর্যয়ে: ঐক্যফ্রন্ট

0

সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ এবং স্থায়ী ও অস্থায়ী ৫১ হাজার শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করায় তাদের পরিবারের অন্তত আড়াই লাখ মানুষের জীবনে এক চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে।

পাটকল বন্ধ ও শ্রমিক চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার দেওয়া এক বিবৃতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা এ কথা বলেছেন।

ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিবৃতিদাতারা হলেন- গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (একাংশ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী।

বিবৃতিতে তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় খাতের সবগুলো পাটকল সরকার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাটকলগুলোয় বর্তমানে স্থায়ী শ্রমিক আছেন ২৪ হাজার ৮৮৬ জন। এছাড়া তালিকাভুক্ত বদলি ও দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। অর্থাৎ ৫১ হাজার কর্মীর পরিবারের অন্তত আড়াই লাখ মানুষের জীবনে এক চরম বিপর্যয় তৈরি করা হচ্ছে।

তারা বলেন, এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যখন করোনার ভয়ঙ্কর অভিঘাতের ফলে কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া দূরে থাকুক, সরকার বর্তমানে কর্মে নিযুক্ত মানুষকেও কর্মচ্যুত করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কারণ হিসাবে পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, গত ৪৮ বছরে সরকারকে এই পাট খাতে ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। অথচ এক ওয়াট বিদ্যুৎ না কিনে গত ১০ বছরে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ সরকারের অতি ঘনিষ্ঠ বিরাট কয়েকজন ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকা।

ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ বলেন, পাট খাতে যে লোকসান হয় সেটার জন্য শ্রমিকরা কোনোভাবেই দায়ী নন। রাষ্ট্রায়ত্ত আর সব খাতের মতো প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি, অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণেই এই শিল্পগুলোতে লোকসান হয়। সেই ব্যর্থতার মূল্য আজ দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের।

তারা বলেন, এই চাকরিচ্যুতির আগেও দফায় দফায় শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হয়েছে তাদের বকেয়া মজুরি আদায়ের দাবিতে। তথাকথিত ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ রাষ্ট্রটি তার অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করা নাগরিকদের বেতন মাসের পর মাস বাকি রেখেছিল। এখন সেই শ্রমিকদের ওপর নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়।

পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে পাটকলগুলোর শ্রমিকদের যে কোনো কর্মসূচির সংহতি জানান ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com