ত্বকের যত্নে মৌসুমি ফল
মধুমাস গ্রীষ্ম। সারা বছর এই মাসের অপেক্ষায় থাকে বাঙালী। বাজারজুড়ে এখন মৌসুমি ফলের সমারোহ। রসাল এসব ফল শুধু যে অনেক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ তা-ই নয়, ত্বকচর্চায়ও বেশ কাজে দেয়। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করতে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এই ফলগুলো খুবই উপকারী। উজ্জ্বলতা বাড়ার পাশাপাশি ত্বকের বলিরেখা এবং রোদে পুড়ে যাওয়া দাগ থেকেও রক্ষা পেতে পারেন মৌসুমী ফলের ব্যবহারে। জেনে নিন গ্রীষ্মের সহজলভ্য এই ফলগুলো দিয়ে ত্বকচর্চার উপায়।
বাঙ্গি
মৌসুমি ফলের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে বাঙ্গির জুড়ি মেলা ভার। শুষ্ক ত্বকের যত্নে ফেসওয়াশের পরিবর্তে বাঙ্গি ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়াও আরো কিছু ব্যবহার-
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
বাঙ্গি
মধু
দুধ
লাল আটা
তুলা
ব্যবহারবিধি
প্রথমে বাঙ্গি পেস্ট করেবনিন। এবার এক টেবিল চামচ বাঙ্গির পেস্ট এর সাথে এক টেবিল চামচ দুধ ও এক চা-চামচ মধু মেশান। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
অনেকের ত্বক খুবই তৈলাক্ত। আর এই তৈলাক্ত ত্বকে রোদে পোড়া ভাব দেখা যায় বেশি। এ সমস্যা দূর করতে বাঙ্গির সঙ্গে লাল আটা মিশিয়ে ত্বকে লাগালে উপকার পাবেন।
এছাড়া শুধু বাঙ্গি জুস করে তুলায় ভিজিয়ে মুখে লাগালেও উপকার পাবেন।
আম
আমের মধ্যে আছে ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’। যা ত্বকে ডিপ ক্লিনজিংয়ের কাজ করে।
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
আম
ওটমিল
লেবুর রস
চালের গুড়া
ব্যবহারবিধি
পাকা আমের কাথের সঙ্গে ওটমিল মিশিয়ে মুখে লাগান। ত্বকের ময়লা পরিষ্কারে এটি খুবই কাজে দেবে। যেকোনো ধরনের ত্বকে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
পাকা আমের রসের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান। যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা সান বার্ন বা রোদে পোড়া দাগ দূর করতে এটি ব্যবহার করলে বিশেষ সুফল পাবেন।
তাছাড়া হাত ও পায়ের মরা কোষ তুলতেও আমের রসের ভূমিকা রয়েছে। আমারে রসের সাথে চালের গুঁড়া মিশিয়ে ঘন প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। মিশ্রণটি ত্বকে শুকিয়ে এলে হালকাভাবে হাত দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখুন মরা কোষ পরিষ্কার হয়ে গেছে।
জামরুল ও লিচু
প্রাকৃতিক ক্লিঞ্জার হিসেবে শসা সকলের কাছে পরিচিত। শসার মতো জামরুল ও লিচুর রসও সব ধরনের ত্বকেই প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে।
ব্যবহারবিধি
জামরুল অথবা লিচুর রস রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তুলা দিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তবে যাদের ত্বক শুষ্ক, তারা লিচুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিতে ভুলবেন না।
সফেদা
ত্বকের বলিরেখা দূর করতে জাদুর মতো কাজ করে এই ফলটি।
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
সফেদা
ডিমের সাদা অংশ
ব্যবহারবিধি
সফেদার সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। একটু বয়স বাড়লে ত্বক ঝুলে যাওয়ার যে সমস্যা দেখা যায়, এটি দূর করতেও সাহায্য করবে এই প্যাকটি।
কাঁঠাল
অনেকের ত্বক থাকে অমসৃণ। শরীরে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। এ ধরনের সমস্যায় কাঁঠালের রসের ভূমিকা অনন্য।
প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
কাঁঠাল
দুধ
মধু
তিলের তেল
ব্যবহারবিধি
কাঁঠালের রস করে নিন। এবার রসের সাথে দুধ ও মধু মিশিয়ে পুরো শরীরে লাগাতে পারেন।
যাদের ত্বক একটু বেশি শুষ্ক, তারা দুধ ও মধুর পরিবর্তে তিলের তেল ব্যবহার করুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বেশ কাজ করবে এই মিশ্রণটি। তবে কাঁঠালের গন্ধ যারা একেবারেই সহ্য করতে পারেন না, তারা এটা ব্যবহার না করলেই ভালো।