ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস বিএনপি মহাসচিব মির্জা আলমগীর এর বাণী —

0

”১৬ মে ’ফারাক্কা দিবস’ আমাদের জাতীয় আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ থেকে ৪১ বছর আগে আফ্রো, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার অবিসাংবাদিত মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সারাদেশ থেকে লাখো জনতা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিলে অংশ নেয়। ভারতে গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু করা হয়। যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল আজ প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ঐ এলাকায় পানিতে আর্সেনিকসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। জীববৈচিত্র ও পরিবেশগত মানকে বিবেচনা না করে এবং প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে ভারতকে কয়েক দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়, কিন্তু ভারত সেই সুযোগ নিয়ে অব্যাহতভাবে আজ পর্যন্ত তা চালু রেখেছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে নির্লজ্জভাবে তা মেনে নিয়েছে, ফলে বাংলাদেশের জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়।

এই বঞ্চনা ও দেশের প্রকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্দশার আশংকায় প্রাজ্ঞ ও দুরদর্শী মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী জনগণকে সাথে নিয়ে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল করে ভারত সরকারের নিকট প্রতিবাদ করেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিকট বিষয়টি তুলে ধরেন। তখন থেকে ব্যাপক মানববিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচিত হতে থাকে।

তাই আমি মনে করি আজও ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণে নদীর ধারাকে বাধাগ্রস্থ করে ভারত একতরফা নিজেদের অনুকুলে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে। সর্বশেষ টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়িত হলে এবং তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা না পেলে বাংলাদেশকে আরেক প্রাকৃতিক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হবে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সারা বাংলাদেশ একসময়ে নিষ্ফলা উষর ভূমি হয়ে উঠবে বলে দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই অভিমত প্রকাশ করেছেন।

সুতরাং ১৬ মে ১৯৭৬, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল ন্যায্য পাওনা আদায়ের সংগ্রামে জনগণ অকুতোভয় সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে গিয়েছিলো। তাই প্রতি বছর ১৬ মে ‘ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ যেকোন অধিকার আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে।

আমি ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করি।”

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com