হাত ধোয়ায় ত্বক কেন কর্কশ হয়ে ওঠে? জেনে নিন করণীয়
করোনা প্রকোপে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে ব্যাপক বদল ঘটেছে। নতুন আচরণবিধি নিয়ে এসেছে এই প্রাদুর্ভাব। ভাইরাস থেকে বাঁচতে মানুষ এখন বেশি করে হাত ধোয়ার চর্চা করছেন।
বৈশ্বিক মহামারী রোধে হাত ধোয়ার প্রতি স্বাস্থ্যকর্মীরাও বেশি জোর দিচ্ছেন। কিন্তু বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ায় লোকজনকে বিপাকেও পড়তে হচ্ছে। বহু মানুষ আছেন, যাদের হাত শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। ত্বক ফেটে যাচ্ছে।
হাত ধোয়া কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পর একটি বিষয় সবাই ভুলে যাচ্ছেন। সেটা হচ্ছে, হ্যান্ড ক্রিম।
সাধারণত বহুবার হাত ধোয়ার পর ত্বক ফেটে হাত শুষ্ক হওয়ার সমস্যায় পড়তে পারে যে কেউ। এতে শরীরে বিভিন্ন জীবানু সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
হাত ধোয়ায় ত্বক কেন কর্কশ হয়ে ওঠে?
ত্বকের সবচেয়ে বাইরের স্তর লিপিড বা তেল, কোলেস্টেরল, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং সেরামাইডস দিয়ে তৈরি। এসব লিপিড বাইরের ঝক্কি থেকে সুরক্ষা স্তরের কাজ করে। এছাড়া প্রাকৃতিক আর্দ্রতা থেকে ত্বকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় এই প্রাকৃতিক বেষ্টনী ভেঙে যায়। সেক্ষেত্রে হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার না করলে ত্বক শুষ্ক, লালচে ভাব, চুলকানি, আঁশ ওঠা ও অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। কখনো কখনো এই প্রবণতা মারাত্মক রূপ নিয়ে ত্বক ফেটেও যেতে পারে।
এতে মানুষকে আরও বেশি বিপাকে পড়তে হয়। প্রশ্ন হল, কীভাবে আমরা হাত ধোব ও শুষ্কতা এড়ানোর চেষ্টা করব?
সুগন্ধিমুক্ত ও যথেষ্ট হালকা ধরনের সাবান দিয়ে ময়লা সরিয়ে দিতে পারে। এমনভাবে হাত ধোয়া যাবে না, যাতে পুরু ফেনা তৈরি হয়ে যায়।কারণ এতে ত্বকের প্রাকৃতিক তৈলাক্ততা নষ্ট করে দেয়। হাত ধুইতে হবে পানি ও সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড। কোনোভাবেই গরম পানি দিয়ে ধোয়া যাবে না। ধোয়া শেষে তোয়ালে দিয়ে হাত শুকনো করে সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
ময়েশ্চারাইজার যাতে পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা ভেসলিনের মতো মলম বা ক্রিম জাতীয় হয়, ভুলেও লোশনের মতো হওয়া যাবে না।
এভাবে যত্ন নিলে বারবার হাত ধোয়ার পরেও ত্বক তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারবে। রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের জলীয় ভাব ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজারের একটি পুরু স্তর ব্যবহার করা যেতে পারে।
লেখক: ডা. নাদিয়া রুম্মান, প্রধান নির্বাহী (সিইও), অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজি অ্যান্ড লেজার কনসালটেন্ট, ড. এন অ্যাসথেটিকস।