সিরিয়ান শরণার্থীদের জীবনের করুণ কাহিনী
সিরিয়ার শরণার্থী আহমাদ আল মুস্তাফা তার কন্যা সন্তানের জন্য দুধের ব্যবস্থা করতে পারছেন না। গত বছর লেবাননে চরম অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকেই পরিবারের জন্য ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করা আহমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপর লেবাননে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে পরিস্থিতি তার জন্য আরো খারাপ হয়ে উঠে।
গত কয়েক মাস আগে রেস্টুরেন্টের চাকুরি হারানো ২৮ বছর বয়সি আহমাদ বলেন, “আমাদেরকে এখন আর কেউ নিয়োগ দিতে চায় না।”
তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে তিনি কয়েকশ ডলারের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন । এখন আর কেউ তাকে বাকিতে মাল দেয় না।
আহমাদ বলেন, “তিনি ভবিষ্যতের ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। সামনে কি ঘটতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে আমাদের কোনো ধারণা নেই।”
আহমাদের চলমান অবস্থার মধ্য দিয়ে লেবানন, জর্ডান এবং তুরস্কে থাকা প্রায় ৫৬ লাখ শরণার্থীদের জীবনের করুণ চিত্র উঠে এসেছে। এরা বেশিরভাগই দৈনিক আয় রোজগারের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এসব দেশে চলমান লকডাউন পরিস্থিতির কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের খরচ মেটানো তাদের জন্য এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এদিকে নিজ দেশে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়া লেবাননের নাগরিকরা এখন আর শরণার্থীদের সহ্য করতে পারছেন না। কারণ লেবাননে অর্থনৈতিক মন্দা চলার কারণে চাকুরির বাজার সঙ্কোচিত হয়ে পড়েছে এবং জিনিস পত্রের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে।
২০১৪ সালে সিরিয়া থেকে উত্তর লেবাননে পালিয়ে আসা আহমেদ বলেন, “যখনই আমি কোথাও কাজের জন্য যাই তারা বলেন যে তারা সিরিয়ান নাগরিকদের নিয়োগ দেন না। মূলত আমি এখন বাসায় বসে আছি। অথচ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে।”
তিনি তার এক বছরের কন্যার জন্য ডায়াপার পর্যন্ত কিনতে পারছেন না। এমনকি তার সন্তানের দুধের জন্য প্রতিবেশি এক দাতার কাছে নির্ভরশীল তিনি।
এদিকে লেবাননে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক প্রতিনিধি মিরেলি গিরার্ড বলেছেন, অনেক শরণার্থী এখন ভাইরাসের চেয়ে ক্ষুধাকে বেশি ভয় পাচ্ছেন। পার্সটুডে