রোজায় গ্যাস্ট্রিক নিয়ে সচেতনতা
পবিত্র রমজান মাসে নিয়মিত রোজা রাখলে শরীরের অনেক রোগ এমনকি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে নিয়ম না মেনে রোজা রাখলে অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, দেখা দিতে পারে বদহজম, বমি ভাব, পেটফাঁপা, পেটব্যথার মতো উপসর্গ। এগুলো রোধ করতে রোজায় খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। যেমন
ইফতার বা সাহরিতে বাইরের খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলুন। তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, বেশি মসলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করুন।
সাহরিতে বিরিয়ানি, কাবাব- জাতীয় ভারী খাবারের পরিবর্তে কম মসলাযুক্ত সহজে হজম করা যায় এমন সুষম খাবার গ্রহণ করুন।
ইফতারির শুরুতে আধা গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করে নিতে পারেন। খাবার তালিকায় খেজুর, সবজির স্যুপ, ভাত, মাছের পাতলা ঝোল, মাংস, ডিম, ডাল, পর্যাপ্ত শাকসবজি ও সালাদ রাখুন। গরুর মাংস যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। একবারে বেশি ইফতার না খেয়ে কিছু সময় বিরতি দিয়ে অল্প অল্প করে খাবার গ্রহণ করুন। চা-কফি পরিহার করুন, তবে গ্রিনটি পান করতে পারেন, যা আপনার মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। তারাবি নামাজের পর অল্প করে হলেও খেতে হবে, রাতের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। অবশ্যই ঘুমানোর অন্তত দেড় ঘণ্টা আগে খেয়ে নিতে হবে। ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত সময়ে কমপক্ষে আড়াই লিটার পানি গ্রহণ করুন। এ ছাড়া এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করতে পারেন, এতে পাকস্থলী ভালো থাকবে।
কোনো ভারী খাবার খাওয়া হয়ে গেলে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে খাওয়ার পর ২ চামচ টকদই খেতে পারেন। এ ছাড়া ইফতারের পর দু-এক কুচি আদা চিবিয়ে খেতে পারেন বা এক চামচ জিরার গুঁড়ো হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন। তুলসীপাতা বেটে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। ফুড পয়জনিং ঠেকাতে লেবুর শরবত, কলা, আপেল, পেঁপে খেলে তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যায়। পাশাপাশি এগুলো অ্যাসিডিটি কমাতেও সাহায্য করে।
যাদের পেপটিক আলসার আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের সময়সূচি পরিবর্তন করে নিতে পারেন। তবে যেহেতু সাহরির পরে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয়, তাই খাবার অন্তত ৩০ মিনিট আগে ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, রেবিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল বা ফেমোটিডিন গ্রুপের ওষুধ সেবন করতে পারেন এবং রাতে প্রয়োজন হলে অ্যান্টাসিড খেতে পারেন। এ ছাড়া ইফতারি শেষে মাপস টেকনোলজির ওমিপ্রাজল বা ইসোমিপ্রাজল সেবন করতে পারেন।
খুব বেশি সমস্যা হলে বা শারীরিক পরিস্থিতি ভালো অনুভূত না হলে রোজা রাখা থেকে বিরত থাকতে পারেন। ধর্মমতেও কিন্তু অসুস্থ ব্যক্তি কোনো কারণে রমজান মাসে রোজা না রাখতে পারলে পরে সেটা পালন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।