বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তারেক রহমান এর বাণী—
“বাংলা সাহিত্যের অবিসংবাদিত প্রাণপুরুষ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমি তাঁর অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। আমাদের জাতীয় জীবনের সকলক্ষেত্রে বিশ্বকবির গভীর প্রভাব বিদ্যমান। এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার পাওয়ার বিরল সম্মান অর্জনকারী রবীন্দ্রনাথ তাঁর উপন্যাস, কবিতা ও গানে গভীর জীবনবোধ, প্রকৃতির সাথে সংলগ্নতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি গভীর আত্মনিবেদন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে এক অনাবিল শান্তি ও স্বর্গীয় আনন্দের আবহ তৈরী করে। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে প্রাণ-প্রকৃতি এক অনন্যরুপ ধারণ করে। আমরা গর্ববোধ করি তাঁর রচিত গান আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে পেয়ে। তাঁর অনন্য সৃষ্টিতে চিরাচরিত ধারার বাহিরে স্বাতন্ত্র্যধর্মের পরিচয় মেলে। ধর্ম-লোকাচার, রাজনীতি ও সমাজচিন্তা এবং বিশ্বভাবনায় এই স্বাতন্ত্র্যবোধ তাঁর বিশাল সাহিত্য সংস্কৃতির পরিমন্ডলে বাংলা ভাষাভাষির মানসলোক নির্মানে নূতন মাত্রা যোগ করেছে। বিশ্বকবি, স্বপ্নদ্রষ্টা, রবীন্দ্রনাথ মানব জীবনকে বহমান ও নানা বৈচিত্র্যে উদ্ভাসিত করতে তাঁর সৃষ্টিতে শিল্পমন্ডিত ঐশ্বর্য্যরে মায়াবী স্বপ্নের জগৎ বিনির্মান করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অনন্য সৃষ্টিতে একদিকে যেমন স্বজাতির মুঢ়তা, স্থবিরতার বিপন্ন ছবি ফুটিয়ে তুলেছিলেন, আবার অন্যদিকে তিনি জাতীয় জীবনের সব অচলায়তন ভেঙ্গে বিশ্বের অতি অগ্রসর জাতিসমূহের কীর্তিময় অর্জনগুলোকে গ্রহন করার আহবান জানিয়েছিলেন। আবার স্বজাতির অনিন্দ্য সুন্দর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উপাদান সমূহ এবং মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ সূর ও বাণীর অনন্য ব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর প্রতিভাদীপ্ত সৃষ্টিকর্মে। তাঁর সঙ্গীত প্রাণে স্বর্গীয় প্রশান্তির আবহ তৈরী করে। তাঁর সাহিত্য কর্মে শান্তি, মানবতা, মহত্ত্ববোধ ও পরমত সহিঞ্চুতার বাণী যুগে যুগে মানুষকে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে, তাই তাঁর সৃষ্টিকর্ম জাতীয়তার গন্ডি পেরিয়ে দেশ দেশান্তরে হয়ে উঠেছে কল্যাণের অকৃত্রিম আলেখ্য। মানব প্রেম, প্রকৃতি প্রেম ও দেশপ্রেম তাঁর লেখনির প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করেছে। আজও আমরা সবাই তাঁর লেখনি দ্বারা উদ্বুদ্ধ। কথা সাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন।
আমি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।”