‘মোর নামটাও নেকো বাবা’

0

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মাষ্টার পাড়া বাঁধের নিচে বসবাস বৃদ্ধা জহিরনের। বয়স হবে আশির উর্দ্ধে। নব নির্মিত বাঁধের রাস্তার ধারে বসে কাঁপছিল। মোটরসাইকেল দেখে দৌড়ে আসে গাড়ির সামনে লাটি ভর করে দাড়িয়ে খুব বিনয়ের সাথে বলে বাবা মোর নামটাও নিকি নেও বাবা। খুব কষ্টে আছোং থাকার জায়গা তো নাই। এহন খাবারেও খুব কষ্ট। চেয়ারম্যান মেম্বার তো কিছুই দিলে না। তোমরা মোর নামটা নিকি নেও আর মোক কিছু একনা দেন।

শুধু জহিরন নয় তার মতো অনেকেই ভিড় করছিল আর নিজেদের কষ্ট মাখা কথা গুলো বলছিল খোঁজ নেয়নি কেউ তাদের যদিও মেধাবী কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে কয়েক পরিবার সাহায্য পেয়েছেন বলে অনেকে জানান।
জহিরন বেওয়া (৮৫) ৭১’সালে হারিয়েছেন স্বামীকে, নদী ভেঙ্গে নিয়েছে শেষ আশ্রয়স্থল। বারবার নদী ভাঙ্গন দাড় করিয়েছে ওয়বদা বাঁধে। বেশ কিছু বছর চলে বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে। দুই ছেলে এক মেয়ে ছিল তার এরমধ্যে পরপারে চলে যায় এক ছেলে। অন্য আর এক ছেলে বিয়ে করে থাকার ব্যবস্থা না থাকায় পাড়ি জমায় চরে। সেখানেও কাটছে তার কষ্টের জীবন। স্বামী পরিতেক্ত মেয়ে নিয়ে জহিরন থাকতেন বাঁধের উপর। মেয়ে সকিনা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেই চলতো তাদের সংসার। অবশেষে বাঁধ সংস্কার শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তিক সরিয়ে দেয়া হয় তাদের। কোন উপায় না থাকায় বাঁধের রাস্তার নিচে ছোট একটি ঘর তুলে কষ্টে জীবন যাপন শুরু করেন জহিরন ও মেয়েসহ নাতীরা। এর উপর চলে আসে করোনা নামক ভাইরাস। বন্ধ হয়ে যায় মেয়ে সকিনার কাজকর্ম চলে আসে বাড়িতে। কষ্ট নামক চাকাটার গতি আরো বেড়ে যায়। বৃদ্ধা বয়সে বিপাকে পড়ে জহিরন। না আছে আশ্রয় না আছে খাবারের ব্যবস্থা। সরকারী ভাবে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হলেও জহিরন বেওয়ার ভাগ্যে জোটেনি কোন ত্রাণ। জহিরন জানান, বাবারে কোন বলে ভাইরাস আইছে মেয়েটার কামও নাই কারো বাড়িত কিছু চাবারও যাওয়া যায় না চেয়ারম্যান মেম্বার সরকারী লোকজনও তো খবর নেয় না তোমরায় কন কেমন করি বাঁচি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বলেন আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে তালিকা তৈরি করছি তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে সহায্য দেয়া হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com