চাকরি হারানোর শঙ্কায় সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারি
বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাবের পর দেশেও মহামারীর আকার হয়ে ওঠা করোনাভাইরাস জনিত কভিট-১৯ এর এই সংকটজনক সময়ে চাকুরি হারানোর ভয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সূর্যের হাসি ক্লিনিকের প্রায় দুই হাজার কর্মী। এতে এসব পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
পরিবার পরিকল্পনা সেবা, গর্ভবতী মায়ের পরিচর্যা, বাড়িতে যেয়ে গর্ভবতী মায়েদের সাধারণ প্রসব সেবা, ইপিআই এর মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে ইউএস এইড এর সহযোগিতায় দেশে সূর্যের হাসি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। সারা দেশের ৩৬৯টি উপজেলায় এ ক্লিনিক রয়েছে।
সূর্যের হাসি নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরের ১৫৮টি ক্লিনিক বন্ধের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে গত ৫ই এপ্রিল একটি আবেদন করেন। এর আগে ৭৪টি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হয়। এসব ক্লিনিকে ম্যানেজার, প্যারামিডিক্স, সার্ভিস প্রমোটর, ক্লিনিক এইট, একাউটেন্ট, অ্যাম্বুলেন্স চালক, নিরাপত্তাকর্মী, ক্লিনারসহ বিভিন্ন পদে কর্মরতরা এতে অনিশ্চিয়তায় পড়েছেন। পদ ভিন্নতায় তারা মাসে ১০ থেকে ৩৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান।
ওই তালিকার মধ্যে ফরিদপুরের বোয়ালমারী, মধুখালী ও সিমিত আকারে কার্যক্রম চালু আলফাডাঙ্গা উপজেলার তিনটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকে মোট ২৮ জন কর্মরত রয়েছেন। এ ছাড়া যুক্ত রয়েছেন ২১জন স্বেচ্ছাসেবী। যারা প্রতিমাসে সাতশ’ টাকা করে ভাতা পান।
এ ক্লিনিকগুলি বন্ধ হয়ে গেলে তারা চাকুরিচ্যুত হবেন এ আশঙ্কা থেকে বোয়ালমারী উপজেলার ক্লিনিক ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম গত ৫ মে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ঝোটন চন্দের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নিকট ‘১৫৮টি সূর্যের হাসি ক্লিনিক বন্ধের আদেশ স্থগিত প্রসঙ্গে’ বিষয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন।
লিখিত ওই আবেদনে বলা হয়, ‘দেশের মানুষ যখন করোনার ভয়াবহ ছোবল থেকে বাঁচার জন্য ঘরে বন্দি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের মানুষকে করোনার হাত থেকে মুক্ত করার জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং সূর্যের হাসি নেটওয়ার্কে স্বাস্থ্য কর্মীরা যখন করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, ঠিক সে মুহুর্তে ১৫৮টি সূর্যের হাসি ক্লিনিক বন্ধ করে ২০০০ কর্মীকে বাধ্যতামূলক ভাবে চাকরীচ্যুত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে ২০০০ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার সদস্য সাধারণ ভাবে খেয়ে পরে জীবন ধারণ করা প্রশ্নের সম্মুখী হয়ে পড়েছে।’
ফরিদপুর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সর্দার মো. হান্নান বলেন, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের বন্ধের চিঠি আমরা পেয়েছি। তবে ফরিদপুর সদরের দুটি শাখার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, দাতা দেশ টাকা কমিয়ে দেওয়ায় পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। তবে সূর্যের হাসি ক্লিনিকের কার্যক্রম আমাদের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখছিল।