ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দাবি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের
ডিজিটাল আইনে করা এক মামলায় জনমনে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার এবং আরও সাত জনকে অভিযুক্ত করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউর)।
শুক্রবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, সরকারের সমালোচনার কারণে ফেসবুকে গুজব ছড়ানো ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
রাজধানীর রমনায় থানায় দায়ের করা ডিজিটাল আইনের একটি মামলায় গত কয়েকদিনে ৪ জন কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী।
ডিজিটাল আইনে তাদের বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গুজব ও করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়।
এই ঘটনা মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে লংঘন করেছে মন্তব্য করে গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানায় এইচআরডব্লিউ। সেইসঙ্গ ডিজিটাইল আইন বাতিল করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া প্রধান ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, মহামারিকে ব্যবহার করে ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকার কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টদের গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, কেবল বিদ্রূপমূলক পোস্ট করার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এমন মামলা দায়েরের পরিবর্তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উচিত যে কোনো সমালোচনা গ্রহণ করা এবং কভিড -১৯ মোকাবিলায় সরকারের প্রতিক্রিয়াতে কোনো ফাঁকফোঁকর থাকলে সেটিকে শনাক্ত করা।
অ্যাডামস আরও বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের উপলব্ধি করা উচিত যে কভিড -১৯ রোগের বিরুদ্ধ লড়ার জন্য বড় মাধ্যম হচ্ছে বাকস্বাধীনতা। ফলে সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট, চিকিৎসক এবং নার্সদের হয়রানি করা সরকারের বন্ধ করতে হবে। সরকারের উচিত জরুরি স্বাস্থ্য সামগ্রী, সহায়তা, স্বচ্ছতা নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেগুলো মোকাবিলা কর।
প্রসঙ্গত গত কয়েকদিনে কার্টুনিস্ট আহম্মেদ কবির কিশোর, ব্যবসায়ী মোস্তাক আহম্মেদ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মো. দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই মামলা অভিযুক্ত করা হয়েছে মিনহাজ মান্নান, প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল ও সাহেদ আলম, সায়ের জুলকারনাইন, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনকে।