তালিকায় নাম আছে, চাল নেই

0

কুমিল্লার দেবীদ্বারে একটি ইউনিয়নে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর তালিকায় নাম থাকা অনেক হতদরিদ্রের ভাগ্যে জুটছে না ১০ টাকা কেজির চাল।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রস্তুত করা তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি বরাদ্দের চাল বিতরণ করা হলেও করোনা পরিস্থিতির খাদ্য সংকট মুহুর্তেও তালিকায় থাকা অনেক হতদরিদ্ররা চাল পাচ্ছে না। এ ঘটনায় সম্প্রতি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক এবং দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

রাজামেহার ইউনিয়নের চাটুলী গ্রামের বাসিন্দা কামরুল হাসান চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন- দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. কবির হোসেন এলাকার হতদরিদ্রের নাম ব্যবহার করে সরকারের খাদ্য বান্ধন কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছে। ওএমএস ডিলার তাজুল ইসলাম এর সহযোগিতায় তালিকায় অনেক হতদরিদ্রদের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম সঠিক ভাবে লিখলেও গ্রামের নাম এলোপাথারী লিখে তালিকা করে।

করোনাভাইরাস সতর্কতায় নিম্নআয় বা হতদরিদ্র পরিবারগুলো এমনিতেই অসহায় হয়ে পড়েছেন। মেম্বার কবির হোসেন অনেক হতদরিদ্রদের নাম তালিকায় দেখিয়ে গত ১৭ এপ্রিল ডিলার থেকে চাল উঠিয়ে আত্মসাৎ করে।

ওই তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা হতদরিদ্র কুলসুম আক্তার। স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দিন মজুর। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে কর্মহীন। চার সন্তান, স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শ্বাশুরী নিয়ে ৮ সদস্যের পরিবার। খুব অভাব অনটনে সংসার চলে তার।

তিনি জানান, মেম্বারকে যখনই বলি তিনি (ইউপি মেম্বার কবির হোসেন) কখনও বলেন চাল আসেনি, আবার কখনও বলেন শেষ হয়ে গেছে। এমন তাল বাহানা করেন। কিন্তু আজ কয়েকদিন যাবৎ জানতে পারি তালিকায় আমার নাম আছে। কিন্তু আমি তো কখনও চাল পায়নি।

তালিকার ৩৯ নম্বরে থাকা গাংচর গ্রামের ছালাউদ্দিন। পেশায় রিক্সা মিস্ত্রি। স্ত্রী-সন্তান সহ ৭ সদস্যের সংসার। সংসারের ঘানি টানতে রীতিমত হিমশীম খাচ্ছেন তিনি।

তিনি জানান, মেম্বার কবির হোসেন ১০টাকা কেজির চাল দিবো কইয়্যা আমার কাছ থেইক্কা আইডি কার্ড নিচ্ছে। আর কোন খবর নাই। এই পর্যন্ত চাউল-টাউল কিছুই পাইছি না।

কুলসুম ও ছালাউদ্দিন এর মতো এমন অনেক হতদরিদ্র রয়েছে ওই তালিকায়। তাদের নামে চাল উঠে কিন্তু তারা পায় না।

এ ব্যাপারে ওএমএস ডিলার তাজুল ইসলাম জানান- তালিকা করেন ইউনিয়ন মেম্বার। আমরা শুধু চাল বিতরণ করি এবং বিতরণকালে মেম্বার নিজে উপস্থিত থেকে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করেন। তার বাহিরে আমার কিছু জানা নেই।

ওয়ার্ড মেম্বার কবির হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাকিব হাসান এর সাথে যোগাযোগ করতে সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com