করোনার মাঝে করুনার নির্মমতার শিকার রওশনারা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের মানুষ যখন প্রায় ঘরবন্দি এই সময় যশোরে এক নারীকে নির্যাতন করে চুল কেটে পুলিশে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে অন্য এক নারী ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনার শিকার রওশনারা (৪০) যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার জামাল হোসেনের স্ত্রী। ঘটনার তিনদিন পর মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রওশনারা অভিযোগ করেন, তিনি যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার শাহাজানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কিন্তু ওই বাড়িতে শাহাজানের স্ত্রীর করুনা বেগম নারী ঘটিত নানান অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেন। এ কারণে ১৫ দিন আগে তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে পাশে আমির আলীর বাড়িতে ঘর ভাড়া নেন।
রওশনারার অভিযোগ, গত ৩০ এপ্রিল করুনা বেগমের বাড়িতে স্থানীয় লোকজন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি ঘটনা ধরে ফেলে। এসময় জড়িতদের মারপিট ও জরিমানা করা হয়। কিন্তু এ ঘটনায় ও ধরিয়ে দেয়ার পেছনে রওশনারার হাত রয়েছে এমন সন্দেহ করেন করুনা। এর জের ধরে ১ মে সন্ধ্যায় করুনা বেগম, তার মেয়ে রিনা খাতুন, রেশমা হিজড়া, সুমি বেগম, রানা সাথী, বিপ্লব ও ভোলা বাড়িতে ঢুকে রওশনারাকে বেধড়ক মারপিট করে চুল কেটে দেয়। পরে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে সত্যতা না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। এরপর যশোর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি ২ মে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে করুনা বেগম জানান, রওশনারা চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা। তার বাড়িতে থেকে মাদকের কারবার করায় এবং ২২ হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া করায় রওশনারাকে তিনি বাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এ কারণে রওশনারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ঘটনার দিন রেশমা হিজড়ার সাথে তার মারামারি হয়েছে। এরপর নিজে নিজে চুল কেটে তাকেও ঘটনার সাথে জড়ানোর ষড়যন্ত্র করছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মনিরুজ্জামানের সাথে। তিনি জানান, রওশনারা যেভাবে সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেছে ঘটনাটি সেরকম নয়। সে মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে দুটি নিয়মিত মাদক মামলা রয়েছে। বাড়িভাড়া নিয়ে দু’পক্ষের মারামারির পর ২ মে থানায় একটি অভিযোগ দেয় রওশনারা। কিন্তু ওই সময় সে চুলকাটা বা নির্যাতনের অভিযোগ করেনি। আবার বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে বলে পরদিন লিখিতভাবে অভিযোগ প্রত্যাহারও করে নেয়। এলাকায় হিজড়াদের দু’পক্ষের বিবাদের সুযোগে একটি পক্ষ ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছে বলেও প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন বলে ওসি উল্লেখ করেন।
তবে পরে অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে রওশনারার কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ তিনি প্রত্যাহার করেননি।