দেশে কী পরিমাণ বাটপারি চলছে, বলে শেষ করা যাবে না: আলাল
দেশে এখন কী পরিমাণ বাটপারি চলছে তা বলে শেষ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ।
রবিবার (৩ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘কোভিড-১৯ : বৈশ্বিক মহামারী এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মুক্ত আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
আলাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো একটি ফ্যাসিস্ট দল ক্ষমতায় বসে আছে। মানুষ কোনও প্রতিবাদ করতে না পেরে দুঃখে-কষ্টে তাদেরকে নিয়ে ব্যঙ্গ করছে। কিন্তু আমরা মানুষের দুঃখ-কষ্ট আর ব্যঙ্গকে কাজে লাগাতে পারছি না ।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এখন কী পরিমাণ যে বাটপারি চলছে তা বলে শেষ করা যাবে না। ১৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ঘোষণা করা হলো- সারা দেশ বিপদজনক, আর ২৫/২৬ এপ্রিল সব গার্মেন্টস খুলে দেয়া হলো। গতকাল না পরশু শ্রম অধদফতর ঘোষণা করেছে, আইডি কার্ড না দেখালে ঢাকায় ঢুকতে দেয়া হবে না। সেই আইডি কার্ডটা দেখবে কে?’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের যত সংস্থার কথা বলা হয়েছে সবগুলোই ধনীদের কাছে পুচু পুচু করে। এই দেশে যতগুলো ব্যাংক মালিক দেখবেন তারা সবাই গার্মেন্টসের মালিক। এক ব্যাংক থেকে চুরি করে অন্য ব্যাংকে রাখে আবার চুরি করা টাকা ভাগাভাগি করে নেয়। ছোটবেলায় শুনেছি, চোরের দশ দিন গৃহস্থের একদিন। কিন্তু বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি ‘চোরের সারাদিন গেরস্থের নাই একদিনও’।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কুড়িল বিশ্বরোড থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক পর্যন্ত কয়েক হাজার মহিলা ও শিশু বসে আছে ত্রাণের আশায়। প্রধানমন্ত্রী বড় বড় কথা বলেন, তিনি শেখ মুজিবুরের জন্মশতবর্ষ পালন করেন। আমরা সবাই শেখ মুজিবকে সম্মান করি। কিন্তু সেই শতবর্ষ পালন করতে যে খরচটা সেটা যদি এই গরিব মানুষদের দেয়া হতো তাহলে কেমন হতো। এই সরকার সবচেয়ে দরিদ্রতম জেলায় সবচেয়ে কম ত্রাণ দেয়, আর ধনী জেলায় বেশি দেয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে দেশপ্রেম আছে। যদি তাদের কাছে এই ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয় তাহলে আমার মনে হয় আরও ভালো হতো।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্নার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মুনির হোসেন কাশেমী, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মাহবুবুল হক, এবি পার্টির অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল ওহাব মিনার প্রমুখ।
এছাড়া স্কাইপে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন) এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
আলোচনা সভায় করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতিবিদ-বিশেষজ্ঞ-পেশাজীবীদের সমন্বয়ে তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘জাতীয় পুনর্গঠন কমিটি’ গঠনসহ সরকারকে ৮ দফা প্রস্তাবনা দেয় নাগরিক ঐক্য।