স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের সাথে একমত নন রিজভী
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর বিষয়ে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিদিন ব্রিফিং করে যে তথ্য দেয় এই তথ্যের সাথে একমত নন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার দাবি, প্রকৃতপক্ষে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার আরো বেশি। দেশ ঊর্ধ্বগামী সংক্রমণের মধ্যে পড়েছে। এটা নিরাময়ের জন্য সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনের উদ্যোগে উত্তরখান থানায় ত্রাণ বিতরণের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বিশ্বে ২১০টি দেশে করোনা মহামারি ছড়িয়েছে। এরকম মহামারি আমরা কখনো দেখিনি। এরকম পরিস্থিতিতে সরকারের যে প্রস্তুতি নেয়া দরকার ছিল তা সরকার গ্রহণ করেনি। তারা নিজেদের অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। প্রতিদিনই করণা আক্রান্ত সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের লকডাউন আগে করা উচিত ছিল। এবং বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য পৌঁছে দেয়া দরকার ছিল। আগাম প্রস্তুতির কারণে ভিয়েতনাম, ভুটানসহ অন্যান্য দেশে করোনায় আক্রমণ ঘটাতে পারেনি। আমাদেরও যথেষ্ট সময় ছিল কিন্তু সরকার অন্য জায়গায় মনোযোগ দেয়ায় দেশে এখন মহামারি আকার ধারণ করছে। কোটি কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
সরকারি ত্রাণে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ঘরের মধ্যে, খরের পালার মধ্যে চাল খাটের মধ্যে তেল পাওয়া যাচ্ছে। জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান মেম্বার এবং আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মসাৎ করছে। প্রতিদিন সারাদেশে ত্রাণের চাল ডাল তেল ধরা পড়ছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে। দেশ যখন মহামারীতে বিপর্যয়ে পড়ে তখন আওয়ামী লীগ আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যায়। তাদের ভাগ্য খুলে যায়। জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ আত্মসাৎ করে নিজেদের পকেট ভারি করছে আর মানুষ না খেয়ে হাহাকার করছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। আজকে গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা নেই বলেই সরকার এসব অন্যায় অনিয়ম করতে পারছে।
সরকারের ত্রাণ বিএনপির নেতাকর্মীরা না পেয়েও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পকেটের টাকায় অসহায়, গরীব দিন আনে দিন খায় এমন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিদিনই তাদের হাতে ত্রাণ তুলে দিচ্ছে, বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, এখন সরকারের অন্যায় অনিয়মের প্রতিবাদ করলে সমস্যা। করোনা মোকাবেলায় সরকারের ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল। মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ ধরনের একটা সত্য কথা বলাতে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অনেক ডাক্তারদের বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে মাস্ক বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে চায়না থেকে আনা হচ্ছে। কিন্তু শোনা যাচ্ছে এটি কেরানীগঞ্জে তৈরি করে চায়নার নাম দেয়া হচ্ছে। এই মাস্ক ত্রুটিযুক্ত। এসবের সাথে সরকারের মন্ত্রীদের ছেলেরা, আত্মীয়স্বজনেরা জড়িত। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একটা জবাবদিহিমূলক সরকার থাকলে এরকম হত না। ভোটারবিহীন সরকার অগণতান্ত্রিক সরকার থাকলে এসব অন্যায় করা সম্ভব। গণবিরোধী কাজ করা সম্ভব।
তিনি আরো জানান, খুলনা ও নেত্রকোনায় টিসিবির পণ্য কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা টিসিবির কাছ থেকে জোর করে নিয়ে তারা কালোবাজারে বিক্রি করছে। টাকা আত্মসাৎ করছে।
ঢাকা মহানগর যুবদলের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রতিদিনই অসহায়, দুঃস্থ দিন আনে দিন খায় এমন মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এবং সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরখান থানা বিএনপির সভাপতি আহসান উদ্দিন আহসান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বেপারী, সিনিয়র সহসভাপতি মোতালেব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর মোহাম্মদ নুরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল সরকার, যুবদলের রোস্তম আলী, এনামুল হক, ছাত্রদলের আনোয়ার সরকার, আশাদুল হক শুভ, শ্রমিক দলের দেলোয়ার হোসেন, মুজিবুর রহমান, জাসাসের আবুল কালাম, মারুফ প্রমুখ।