চরম অর্থসংকটে জাতিসংঘ, কর্মীদের আগামী মাসের বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা
চরম অর্থসংকটে পড়েছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন অঙ্গসংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিদের আগামী মাসের বেতন দেওয়ার অর্থও নেই সংস্থাটির ফান্ডে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ বাজেট কমিটির এক বৈঠকে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানান, সদস্য দেশগুলো তাদের বরাদ্দকৃত অর্থ পরিশোধ না করলে আগামী নভেম্বর মাসে কর্মীদের বেতন দিতে পারবেন না তিনি। অঙ্গসংস্থাগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াটাও সম্ভব হবে না। গুতেরেস বলেন, গত এক যুগে এই প্রথম সংস্থাটি চরম অর্থসংকটে পড়েছে। এ বছর সদস্য দেশগুলোর প্রতিশ্রুত সাহায্য পূরণ না হওয়ায় জাতিসংঘের অর্থ তহবিলে চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এ সময়, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশকে উদ্দেশ্য করে তিনি জানান, শিগগিরই তহবিলে অর্থ জমা না পড়লে এই নভেম্বরেই সংস্থাটির আংশিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে।
জাতিসংঘকে আর্থিকভাবে সাহায্যকারী দেশগুলোর শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবছর সংস্থাটির রাজনৈতিক, মানবিক ও সামাজিক যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ২২ শতাংশ (প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা) অর্থই জমা পড়ে ওয়াশিংটনের অর্থসাহায্য থেকে।
এবছর যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা অর্থ তহবিল এখন পর্যন্ত পরিশোধ করেনি বলে জানিয়েছেন মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। পাশাপাশি অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোকেও তিনি প্রতিশ্রুত অর্থ দ্রুত তহবিলে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান।
বৈঠকে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, বারবার চাওয়ার পর চলতি বছর ১২৮টি দেশ থেকে তহবিলে মাত্র ১৭ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে যা অঙ্গসংস্থাগুলোর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। প্রতিবছর বিভিন্ন খাতে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয় জাতিসংঘকে।
চলতি বছরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও বাজেট ঘাটতি রয়েছে। তহবিলের ২৮ শতাংশ ব্যয় করা হয় যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অনগ্রসর দেশগুলোতে শান্তি আনয়নের কাজে। তবে এবছর জাতিসংঘকে ২৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করতে হয়েছে এই খাতে।
শান্তিরক্ষা মিশনে জাতিসংঘকে সৈন্য সহায়তা করে থাকে ভারত, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, নেপাল ও রুয়ান্ডা। আর মূলত জাতিসংঘকে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে উন্নত দেশগুলো।
এদিকে জাতিসংঘের পাল্টা বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, জাতিসংঘকে এবছর ১৬ হাজার কোটি অর্থ দেয়ার পর আরও অর্থসাহায্য দেয়া ওয়াশিংটনের জন্য বোঝা হয়ে যায়। সংস্থাটির বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমাতে জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।