সরকারী ত্রাণের স্লিপ বিক্রি করলেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি
করোনাভাইরাসের প্রকোপে কর্মহীন হয়ে পড়া ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য দেয়া সরকারী ত্রাণের স্লিপ বিক্রি করলেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি। টাকা না দেয়ায় যেমন ত্রাণ পায়নি অনেকে তেমনি টাকা দিয়েও স্লিপ না পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে হতদরিদ্র মানুষসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সে সাথে সরকারী ত্রাণ প্রদানের নামে যারা গরীব অসহায় মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে সচেতন মহল থেকে।
জানা যায়, উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে সরকারী ত্রাণ বিতরণ করা হয় গত মঙ্গলবার। ওই ত্রাণের প্রায় ২৫টি স্লিপ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড খালিশা মেইলের পাড় এলাকায় বিতরণ করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি ও হাজারীহাট মোহাম্মদীয়া দাখিল মাদরাসার জীব বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক আজম আলী সরকার। এই ত্রাণের স্লিপ দেয়ার জন্য তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে আদায় করেন ১শ’ টাকা করে। এতে ২৭ জন নারী-পুরুষ আজম আলীকে টাকা প্রদান করেন। কিন্তু স্লিপ দেয়ার সময় ২৫টি স্লিপ বিতরণ করলেও অবশিষ্ট দুইজনের স্লিপ বা টাকা কিছুই দেয়া হয়নি। এরা হলেন আতিউরের স্ত্রী মমতা ও আশরাফের স্ত্রী।
এছাড়া টাকা না দেয়ায় স্লিপ দেইনি বলে অভিযোগ করেছেন আলমের স্ত্রী শিল্পী। তিনি বলেন, আজম বলেছে যে টাকা দিবে সে স্লিপ পাবে। ত্রাণ নিতে হলে টাকা দিয়েই স্লিপ নিতে হবে।
ওই এলাকার টাকা দিয়ে স্লিপ নিয়ে ত্রাণ পাওয়া মানুষগুলোর মধ্যে জিকরুলের ছেলে জিল্লুর, রশিদুলের স্ত্রী সাইতি, আমিনুলের স্ত্রী শাহানা, কাল্টিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা, বাচ্চুর স্ত্রী মিনুসহ আরও অনেকে অভিযোগ করেন যে, আজম আলী ১০ কেজি করে ত্রাণ দিবে বলে ১শ’ টাকা করে নিয়ে আমাদের স্লিপ দিয়েছে। স্লিপ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তারা চাল উত্তোলন করেছেন। তবে সকলেরই অভিযোগ ৮/৯ কেজি করে চাল পেয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে খাতামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরীর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, আমার মেম্বার বা গ্রাম পুলিশের কেউ স্লিপ দিয়ে টাকা নেয়নি। তবে কে বা কারা স্লিপ বিক্রি করেছে তা আমার জানা নেই। তাহলে কি করে স্লিপ কিনে নেয়া ব্যক্তিরা আপনার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ত্রাণ পেলো এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ১ নং ওয়ার্ডের উল্লেখিত মানুষগুলো আমার পরিষদ থেকে চাল নিয়েছেন। কিন্তু কে তাদের স্লিপ দিয়েছে তা আমার জানা নেই।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আজম আলী সরকার জানান, তেলের খরচ হিসেবে কিছু টাকা নিয়েছি। তবে তা মাত্র ১৫টি স্লিপ বাবদ। আপনারা বললে তাদের টাকা দ্বিগুন হারে ফেরত দিবো।