সরকার ঘোষিত অর্থনৈতিক প্যাকেজ প্রণোদনার বিশ্লেষণ —বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমকরোনাভাইরাসের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ঘোষিত অর্থনৈতিক প্যাকেজ প্রণোদনা একটি গঠনমূলক বিশ্লেষণ
বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলন
চেয়ারপার্সন কার্যালয়, গুলশান-২, ঢাকাসকাল ১১টা, শুক্রবার, এপ্রিল ১৭, ২০২০প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,আসসালামু আলাইকুম।বিগত ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র পক্ষে করোনাজনিত প্রভাব মোকাবেলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার ইকোনমিক প্যাকেজ (জিডিপির ৩%) ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রস্তাবিত প্যাকেজের ভেতর না ঢুকেই খুবই কটু ভাষায় বিএনপি মহাসচিবকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন এবং প্যাকেজটিকে ‘কল্পনা-বিলাস’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। অথচ পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর ৭২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা এবং পহেলা বৈশাখ ১৪২৭ উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে সর্বমোট ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা প্রমাণ করে যে বিএনপি ঘোষিত প্যাকেজটি ছিল বাস্তবভিত্তিক একটি সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী প্রস্তাবনা।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজটি কলেবরে বড় হলেও এটি মূলত একটি শুভংকরের ফাঁকি। প্যাকেজটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে প্রণোদনা বলা হলেও মূলত অধিকাংশই ব্যাংকনির্ভর ঋণ-প্যাকেজ যা বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী মহলকে দেয়া হবে ব্যাংক- গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। এতে সরকারের প্রণোদনা নিতান্তই অপ্রতুল। যেমন গার্মেন্টস মালিকদের জন্য ৫ হাজার কোটি ঋণ, শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের মালিকদের জন্য ৩০ হাজার কোটি ঋণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মালিকদের জন্য ২০ হাজার কোটি ঋণ, কৃষি খাতে ৫ হাজার কোটি ঋণ, EDF সম্প্রসারণ ১২,৭৫০ কোটি ঋণ, প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট ফিন্যান্স স্কীমে ৫ হাজার কোটি ঋণসহসর্বমোট ৭৭,৭৫০ কোটি টাকার ঋণ-প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এর মধ্যে সরকার সুদের ভর্তুকি বাবত দেবে ৩ হাজার কোটি টাকা মাত্র। অর্থাৎ ৭৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার ঋণ প্যাকেজের মধ্যে মূলত সুদ ভর্তুকির ৩ হাজার কোটি টাকাই হচ্ছে সরকারি প্রণোদনা। অবশিষ্ট অর্থ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক এবং সেন্ট্রাল ব্যাংক তাদের স্বাভাবিক ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে বিতরণ করবে।এতে সরকারের খরচ হবে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা।আর বাকি অর্থ আসবে ব্যাংক সূত্র থেকে। প্রশ্ন হচ্ছে ব্যাংকগুলোর অবস্থাতো বর্তমানে খুবই শোচনীয় পর্যায়ে রয়েছে। নজিরবিহীন ব্যাংক লুট, লক্ষ-কোটি টাকার অধিক ঋণ খেলাপি এবং সুশাসনের অভাবে ব্যাংকগুলো এমনিতেই দারুন liquidity crisis এ ভুগছে। চলতি অর্থ-বছরে সরকার ঘাটতি অর্থায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই projected পরিমাণের চেয়ে অধিক পরিমাণ ঋণ ব্যাংকগুলো থেকে নিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় বন্ধ। সামনের দিনে অবস্থা অধিকতর খারাপ হবে। সরকারের রাজস্ব আহরণেও ভাটা চলছে। সামনে চাহিদার ঘাটতির কারণে গ্রাহকদের deposit প্রবাহও নেতিবাচকই থাকবে। এমতাবস্থায় ব্যাংকগুলো কিভাবে ৭৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার ঋণ-প্যাকেজের জন্য অর্থ সংকুলান করবে তা বোধগম্য হচ্ছে না।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আপনারা সবাই অবগত রয়েছেন বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতেই ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ পাচ্ছে কেবলমাত্র সরকারি ক্যাডার এবং সরকারি আশীর্বাদপুষ্ট কিছু নব্য ধনী এবং সীমিত সংখ্যক ব্যবসায়ী। এতে ভিন্নমতাবলম্বীদের কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। অথচ প্রস্তাবিত ব্যাংক-ঋণ প্যাকেজটি থেকে বর্তমানে বিরাজমান ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করা হলে সরকারদলীয় লোকজনই লাভবান হবে।প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এ ঋণ-প্যাকেজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে বলেই আমাদের আশংকা।সরকারের উচিত হবে বিএনপি’র প্রস্তাব অনুযায়ী এসব খাতে প্রস্তাবিত ঋণ-প্যাকেজের জন্য সরকারি তহবিল থেকে বিশেষ অর্থ বরাদ্দ করা। কেননা ব্যাংকের অর্থ, অর্থাৎ depositor’s money র ওপর নির্ভর করে এ অর্থ প্রদানের প্রস্তাবটি ত্রুটিপূর্ণ এবং অর্থের অভাবে ব্যাংকগুলো শেষ পর্যন্ত ঋণ প্রদানে ব্যর্থ হবে।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,বিগত বছরগুলোতে পোশাক শ্রমিকরা বাংলাদেশকে যথেষ্ট দিয়েছেন। তাদের দুঃসময়ে রাষ্ট্রের এখন ঋণ পরিশোধের সময়। করোনাজনিত শাটডাউনেরফলে কাজে যোগ না দেয়ার কারণে কোন গার্মেন্টস শ্রমিককে যেন ছাঁটাই করা না হয় সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে। গার্মেন্টস শিল্পকে বাঁচাতে হলে মালিক-শ্রমিককে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। BGMEA এবং সরকারের সমন্বয় দরকার। এই সমন্বয়ের চরম অভাবের কারণে এই শিল্পে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। যেই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো এই মুহূর্তে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছে না, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে প্রাথমিকভাবে ৩ মাসের বেতন পরিশোধনিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকরা বেতনের দাবীতে রাস্তায় থাকার কারণে করোনা ঝুঁকি আরও বাড়ছে।সরকার প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী ঘোষিত ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ ব্যাংক থেকে যেসব প্রতিষ্ঠানের মোট উৎপাদিত পণ্যের ৮০% পণ্য রপ্তানি হয় কেবলমাত্র সেসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন-ভাতার জন্য ঋণ নেওয়া যাবে। প্রশ্ন হলো এবারের ঋণ প্যাকেজ দেয়া হচ্ছে শাটডাউন ঘোষণার কারণে গৃহবন্দি শ্রমিকদের খাওয়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকুলান করার জন্য যেন তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে, শাটডাউন সময়ে ঘরের বাইরে না আসে। রপ্তানিতে উৎসাহিত করা এই প্যাকেজের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। প্রশ্ন হল ৮০% এর কম পণ্য রপ্তানি করে এ জাতীয় গার্মেন্টস ও শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বেতনের কি হবে। শাটডাউন চলাকালে এসব শ্রমিক বেতন থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। অথচ অন্যান্যদের মতো এদেরকেও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান অনিবার্য। সরকার এদের বিষয়টি উপেক্ষা করলো। এদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,গণপরিবহন বন্ধ না করেই সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ সাধারণ সরকারি বেসরকারি কর্মচারীদের উৎসবমুখরভাবে গ্রামে ফিরে যাওয়া, আবার ‘চাকরি হারানোর ভয়ে’ ৫ এপ্রিল গণপরিবহনের অভাবে পায়ে হেঁটে নিদারুণ কষ্ট করে ঢাকা ফেরত আসা, গার্মেন্টস বন্ধ থাকায় দলে দলে পুনরায় বাড়ি ফেরত যাওয়া- এর সবটাতেই তুঘলকি কাণ্ড ঘটে গেল। এর ফলে কমিউনিটি পর্যায়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বেড়ে গিয়ে পুরো জাতিকে নিদারুণ ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। সরকার এর মূল দায় এড়াতে পারে না।এদিকে টিসিবি কর্তৃক OMS এর আওতায় চাল, ডাল বিক্রি এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন লেভেলে চলমান ভিজিডি/ ভিজিএফ প্রকল্পের আওতায় চাল বিতরণ শুরু হলে সারা দেশে চাল চুরির মহোৎসব শুরু হয় যা পত্রপত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সয়লাব হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ত্রাণ বিতরণে নজিরবিহীন দলীয়করণের কারণে ভিন্নমতাবলম্বী চরম দুঃস্থদের বেঁচে থাকার ন্যূনতম উপাদান চাল-ডাল থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ত্রাণ দেয়ার ফটোসেশন বা ভিডিও ধারণ করে আবার জোর করে ত্রাণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার অভূতপূর্ব লোমহর্ষক সচিত্র চিত্র ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে চাল-চোরকে বাদ দিয়ে ত্রাণ নিতে আসা লোকদের আসামী করে মামলা দায়েরের মত ঘটনাও ঘটেছে। চাল চুরির এই হিড়িক স্বাধীনতা পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি বলেছিলেন, “সবাই পায় সোনার খনি আমি পেয়েছি চোরের খনি।” আবার বলেছিলেন, “আমি যা ভিক্ষা করে আনি, সব চাটার গোষ্ঠী খেয়ে ফেলে, আমার গরীব কিছুই পায় না।” এই জন্যই বিএনপি প্যাকেজ প্রস্তাবনায় বারবার গুরুত্ব সহকারে সুপারিশ করেছে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করতে, সর্বাত্মক দলীয়করণের এ নষ্ট সময়ে রাজনৈতিক কর্মী ও টাউটদের ত্রাণ বিতরণ বা আর্থিক প্রণোদনা বিতরণে যেন সম্পৃক্ত করা না হয়।প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দ,আমরা হতাশার সাথে লক্ষ করেছি দেশের এরকম একটা পরিস্থিতিতে সংবেদনশীল নানা বিষয়ে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতা ও বিলম্বিত সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। চুরির হিড়িকের প্রেক্ষিতে সরকার OMS এর আওতায় ১০ টাকা সের দরে চাল বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করায় মানুষ হতবাক। এ সিদ্ধান্তে হতদরিদ্র, সাময়িক সংকটে পড়া মানুষেরা সরাসরি খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে পড়েছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। সামাজিক দূরত্ব সধরহঃধরহ করে চাল গ্রহীতাদের ভিড় সামলানো ও কঠোর শৃঙ্খলভাবে চাল বিক্রি/ বিতরণ নিশ্চিত করার দিকে না গিয়ে, চাল বিক্রি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি। এ যেন মাথা ব্যথা হলে ওষুধ না দিয়ে মাথা কেটে ফেলার শামিল। চুরি বন্ধ ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করে অনতিবিম্বে হতদরিদ্রদের মধ্যে পুনরায় চাল বিক্রি শুরু করতে হবে। ত্রাণ বিতরণ ও ঙগঝ এর চাল বিক্রি তথা সার্বিক ত্রাণ ব্যবস্থায় একটা পরিবর্তন আনা দরকার।প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দ,এই কারণেই করোনা পরিস্থিতি, আর্থিক সমস্যা মোকাবেলা ও ত্রাণ বিতরণ নজরদারি করার জন্য একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের ওপর আমরা বারবার গুরুত্বারোপ করেছিলাম। এতে সুসমন্বিত, সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। আমরা পুনরায় এ জন্য জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করছি। টাস্ক ফোর্সের আওতায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করে ত্রাণ বিতরণে একটি স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন বলে মনে করি। নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের ভাষায়, কোনো খাদ্যের ঘাটতি নয়, খাদ্য বন্টনে অনিয়ম দুর্নীতি সিদ্ধান্তহীনতা, সুশাসনের অভাব দুর্ভিক্ষের কারণ হতে পারে। করোনাপ্রসূত নানামুখী সংকট দীর্ঘ মেয়াদে বিলম্বিত হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। তাই এখনই খাদ্য ও ত্রাণ বন্টনে এবং করোনা পরবর্তী পুনর্বাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ প্রক্রিয়াটিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, সরকার প্রথম থেকেই অর্থনৈতিক প্যাকেজ বিনির্মাণে অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। শুরু থেকেই হুট করে পোশাক শ্রমিকদের বেতন সহায়তার নামে প্রধানমন্ত্রী মালিকদের অনুকূলে বিনা সুদে সর্বোচ্চ ২% সার্ভিস চার্জ দিয়ে ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করলেন। এরপর করোনার সম্ভাব্য প্রভাব উত্তরণে নতুন করে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করা হলো। আংশিক লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিহীন দিনমজুর,দিন এনে দিন খায় এ শ্রেণীর শ্রমিক ও গরিব দুঃস্থ জনগণ, কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রি, ডেইরি খাত, বিধবা, বয়স্ক, স্বামী নিগৃহীতা প্রভৃতি অসহায় শ্রেণী উপেক্ষিত থেকে যায়।এমনকি করোনা মোকাবেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রথম সারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ আইন-শৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্বাস্থ্য/ জীবন বীমা ও নগদ প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি এবং পিপিই, টেস্টিং কিট ও ভেন্টিলেটর সংগ্রহ, পৃথক করোনা হাসপাতাল, আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টিও সুবিবেচনা পায়নি।বর্তমান দলীয় ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার স্বাভাবিকভাবেই ব্যবসায়ীদের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। কিন্তু দিন এনে দিন খায়, স্বাস্থ্যও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত বাদ পড়াটাকে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অথচ সংবাদে জানা যায়, ত্রিশের ঊর্ধ্বে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। তিনজন আইসিইউতে রযেছেন। সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মঈন উদ্দিন বীরের মতো কাজ করতে করতে মৃত্যুবরণ করলেন। আমরা চিকিৎসকদের স্যালুট জানাই। ডাঃ মঈন উদ্দীনকে জাতীয় বীর ঘোষণা করা হোক। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আমরা বিএনপি থেকে যথাক্রমে ১ কোটি, ৭৫ লক্ষ ও ৫০ লক্ষ টাকার জীবন বীমা ঘোষণার প্রস্তাব করেছিলাম।প্রধানমন্ত্রী পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণে অবশ্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ১০০ কোটি টাকার বিশেষ সম্মানি ভাতা প্রদানের এবং তাদেরকে ৫-১০ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বীমা এবং মৃত্যুর কারণে এই বীমার অংক ৫ গুণ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। এই নগদ সম্মানী ও বীমার পরিমাণ যথেষ্ট মনে করি না। এটা মূলতঃ ‘টোকেন’ ঘোষণা ছাড়া আর কিছুই নয়, তবুও সরকারকে সাধুবাদ জানাই বিলম্বে এবং আংশিক হলেও আমাদের সুপারিশ বিবেচনা করার জন্য।প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,কৃষিআমরা আমাদের প্রস্তাবে কৃষি শ্রমিক, প্রান্তিক কৃষক, ভূমিহীন কৃষকদেরকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে আর্থিক সাহায্য দেয়ার কথা বলেছিলাম। সকল কৃষি ঋণ মওকুফ করতে এবং শাটডাউনের কারণে আসছে মৌসুমে উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণ সমস্যার প্রেক্ষিতে কৃষকদেরকে তাদের উৎপাদিত ফসলের minimum support price দিতে বলেছিলাম, যাতে কৃষকের মেরুদন্ড ভেঙে না যায়। দুঃখজনক হলো সরকারের প্যাকেজে এসব প্রস্তাবনা অনুপস্থিত। অন্যদিকে সরকার বিত্তবান কৃষকদের ৪% সুদে ৫ হাজার কোটি টাকার running capital দিবেন বলেছেন। এখানেও বৈষম্য দেখা যায়। সরকার গার্মেন্টস মালিকদের ব্যাংক ঋণ দিচ্ছেন বিনাসুদে কেবল মাত্র সর্বোচ্চ ২% সার্ভিস চার্জ নিয়ে, বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ৪.৫% সুদে এবং SME গুলোকে ৪% সুদে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রদেয় ঋণের ৫০% সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবেন অথচ কৃষিখাতের running capital প্রদানে কোন ধরনের সুদ ভর্তুকির ঘোষণা নেই। অথচ কৃষি আমাদের অর্থনীতির একটি বিশাল অংশ দখল করে আছে।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,আমরা বলেছিলাম আসছে মৌসুমী ধান/চাল সংগ্রহ করে গুদামজাত করার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে। এতে এই দুঃসময়ে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবে এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য খাদ্য ঘাটতি এড়ানো সম্ভব হবে। কিন্তু সরকার মাত্র ২ লক্ষ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের জন্য ৮৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এতে করে কৃষি ও কৃষকের প্রতি সরকারের সংবেদনশীলতার অভাবই প্রকৃষ্ট হয়ে উঠলো।কৃষি যন্ত্রপাতি বাবদ ২০০ কোটি এবং কৃষি ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ মূলতঃ বাজেট বরাদ্দেরই পূন:কথন। নতুন কোনো বরাদ্দ নয়।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণস্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ (ভিজিডি, ভিজিএফ ইত্যাদি), শহুরে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য OMS এর ১০ টাকা সের দরে চাল বিক্রয়, সামাজিক সুরক্ষা স্কীমের আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা প্রদান ইত্যাদি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এর বিপরীতে যথারীতি বাজেট বরাদ্দ রয়েছে। অতএব এই খাতে বরাদ্দকৃত যথাক্রমে ২৫০৩ কোটি, ২৫১ কোটি, ৮১৫ কোটি টাকা করোনাজনিত কারণে সরকারের কোনো নতুন বরাদ্দ নয়। বাজেট বরাদ্দের এ অর্থ করোনা প্রাদুর্ভাব না হলেও সংশ্লিষ্ট স্কীমের আওতায় একটি নিয়মিত বরাদ্দএবং এটি নতুন বা অতিরিক্ত কোন প্রণোদনা বা বরাদ্দ নয়। অথচ প্রণোদনা প্যাকেজে এ সকল খাতে ৩৫৬৯ কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।অপরদিকে আমরা প্রস্তাব করেছিলাম এ সকল খাতে সরাসরি সরকারি তহবিল থেকে৮ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদানের জন্য যাতে গরীব সাধারণের উপকারের পাশাপাশি বাজারের চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং অর্থ প্রবাহ সংকট কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,আবাসনের ঘোষণাআমরা সুপারিশ করেছিলাম, শাটডাউন চলাকালে ছিন্নমূল, ভবঘুরে, ভিক্ষুক পাগল জাতীয় আশ্রয়হীনদের জরুরী আশ্রয়কেন্দ্র বা আবাসনের ব্যবস্থা করে তাদেরকে প্রয়োজনে রান্না করা খাদ্য সরবরাহ করতে যাতে এ মুহূর্তে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তারা অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে রুদ্ধ থাকে।কিন্তুসরকার এমন কোনো ঘোষণা দেয়নি। বরং জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত বিশাল বাজেটের অংশ বিশেষ ২১৩০ কোটি টাকার আবাসন প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছেন। এটি নতুন কোনো বরাদ্দ নয়। আমরা মনে করি জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আবাসন খাতে ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত অর্থকেই এই প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত করে প্যাকেজের কলেবর বৃদ্ধি করা হয়েছে মাত্র।বিগত ৪ এপ্রিল বিএনপি ঘোষিত অর্থনৈতিক প্যাকেজ প্রস্তাবটি বিশেষজ্ঞ মহলে সমাদৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসূচীর আওতায় জিডিপি’র ৩% অর্থাৎ ৮৭ হাজার কোটি টাকার খাত-ভিত্তিক প্যাকেজ প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। আমরা বলেছিলাম শাটডাউন পরবর্তীকালে উক্ত প্যাকেজ প্রস্তাবনাটি প্রয়োজনের নিরিখে সংশোধন করতে হবে যাতে করে সবগুলো খাতকে যথাসম্ভব শাটডাউন পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই যে তিন স্তরে ঘোষিত সরকারি প্যাকেজ প্রস্তাবনায় আমাদের প্রদত্ত অনেকগুলো সুপারিশ আংশিক হলেও বিবেচনায় আনা হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যসহ বেশ কয়েকটি খাতের অনেকগুলো প্রস্তাব সরকারের সুবিবেচনা পায়নি। আমরা প্রস্তাব করেছিলাম প্রাথমিকভাবে সরকারি কোষাগার থেকে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের জন্য। চলতি অর্থবছরের অপ্রয়োজনীয় ও অনুৎপাদনশীল প্রকল্প বাদ দিয়ে, অপচয় রোধ ও কঠোর কৃচ্ছ্বতা সাধন করে এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত রেমিট্যান্স রিজার্ভ তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে এ বিশেষ তহবিল ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেও এটি মূলত লোক-দেখানো আই ওয়াশ মাত্র। কেননা ঘোষিত প্যাকেজের অধিকাংশই হয় সরকারি বেসরকারি ব্যাংক এ গচ্ছিত depositor’s money থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রদেয় ব্যাংক-ঋণ অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের চলমান ঋণ (EDF) প্রকল্প ও নয়া সৃষ্ট pre-shipment credit finance scheme ঋণ এবং কৃষি খাতে চলতি মূলধন বাবদ ৭৫০ কোটি টাকা, অথবা বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ (গার্মেন্টস ৫ হাজার কোটি + বৃহৎ শিল্প ৩০ হাজার কোটি + SME ২০,০০০ কোটি + EDF সম্প্রসারণ ১২,৭৫০ কোটি +pre-shipment credit finance scheme ৫০০০ কোটি + কৃষিখাতে চলতি মূলধন বাবদ ঋণ ৫০০০ কোটি)মোট৭৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, অথবা বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ যা করোনাভাইরাসজনিত দুর্যোগ পরিস্থিতির উদ্ভব না হলেও বিশেষ কোনো প্রকল্প এবং উক্ত খাতসমূহের বিপরীতে ব্যয় করা হতো।(খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ভিজিডি/ ভিজিএফ ২৫০৩ কোটি + ওএমএস ২৫১ কোটি + বয়স্ক বিধবা ভাতা ৮১৫ কোটি + ধানক্রয় ৮৬০ কোটি + কৃষি যন্ত্রপাতি ২০০ কোটি + কৃষি ভর্তুকি বাবদ ৯,৫০০ কোটি + জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আবাসন প্রকল্প ২১৩০ কোটি সবর্মোট ১৬,২৫৯ কোটি টাকা)। অতএব দেখা যায় ব্যাংক ঋণ বাবদ প্রদেয় ৭৭,৭৫০+ ১৬২৫৯ (বাজেট বরাদ্দ+জন্মশতবার্ষিকী বাবদ = ৯৪,০০৯ কোটি বাবদ মূলত সরকারি কোষাগার থেকে কোনো বিশেষ বরাদ্দ নয়। চিকিৎসক ও নার্সদের সম্মাানি বাবদ ১০০ কোটি, চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের জন্য বীমা বাবদ ৭৫০ কোটি এবং দিনমজুরদের জন্য এককালীন অর্থপ্রদান বাবদ ৭৬০ কোটি টাকা, এ সর্বমোট ১৬১০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে। এর সাথে ব্যাংক ঋণের সুদের ভর্তুকি বাবদ সরকার প্রদেয় ৩ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে প্রণোদনা দাঁড়ায় ৪,৬১০ কোটি টাকা মাত্র। অতএব ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্যাকেজ বা জিডিপি’র ৩.৩% হিসেবে ঘোষিত সরকারি অর্থনৈতিক প্যাকেজটি একটি শুভংকরের ফাঁকি মাত্র। ৪৬১০ কোটি টাকা জিডিপি’র ০.১৬ শতাংশেরও কম।যদি দাবী করা হয় যে বাজেট বরাদ্দ কিংবা কোনো বিশেষ প্রকল্প থেকে অর্থ দেওয়া হলেও তা সরকারি খাত থেকেই প্রদত্ত, সে ক্ষেত্রেও ঘোষিত প্যাকেজের আকার দাঁড়ায় ৯৫,৬১৯ কোটি -৭৭,৭৫০ কোটি= ১৭,৮৬৯ কোটি যা জিডিপির প্রায়০.৬২ শতাংশ মাত্র। আমরা মনে করি করোনা ভাইরাস এর প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ যোগান দিয়ে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে। যেন অন্যান্য খাতের কর্মকান্ড বিঘিœত না হয়।দিন এনে দিন খায় এ শ্রেণীর দিনমজুর ও অন্যান্য পেশার লোকজনই এ মুহুর্তে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ এদের জন্য এ প্যাকেজে ঘোষণা করা হয়েছে মাত্র ৭৬০ কোটি টাকা যা নিতান্তই অপ্রতুল। বিএনপি এ খাতে ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করেছে, কেননা এ শ্রেণীর গরীব দুঃস্থ জনগণই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং এদেরই জরুরি আর্থিক সহযোগিতা ও খাদ্যের দরকার।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,আমরা মনে করি বিএনপি ঘোষিত অর্থনৈতিক প্যাকেজে উপস্থাপিত সুপারিশগুলো অত্যন্ত বাস্তবসম্মত। জরুরিভাবে করোনা মোকাবেলায় পরীক্ষা কিট ও ভেন্টিলেটর সংগ্রহ, হাসপাতাল নির্মাণ, ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাস মোকাবেলায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে দক্ষ জনবল ও আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সম্বলিত বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন, কৃষকদের আসছে মৌসুমে ফসলের minimum support price প্রদান, SME গুলোর জন্য পৃথক credit line প্রদান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন এনে দিন খায় এই ক্যাটাগরির কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর ও গরিব জনসাধারণের মুখে খাবার তুলে দেয়ার লক্ষ্যে ৬ মাসের জন্য অর্থ প্রদানের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব, দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে এসকল অর্থ বন্টন, কোনোভাবেই দলীয় ক্যাডারদের রিলিফ বন্টনে সম্পৃক্ত না করা- অন্যান্যদের মধ্যে প্রস্তাবগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত বলে আমরা মনে করি। গার্মেন্টস, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প, কৃষি, পোল্ট্রি, মৎস্য, ডেইরি, ংself-employed, start-ups, বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ইত্যাদি সেক্টরে কোষাগার থেকে আর্থিক প্রণোদনামূলক প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক। বাণিজ্যিক ব্যাংক এর depositor’s money নয়। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে নয়। বরঞ্চ এ অর্থ একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে বন্টন করার সুপারিশ করছি।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,করোনা দুর্যোগের নানামুখী প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী হবে বলে মনে করা যায়। এমতাবস্থায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে সুসমন্বিত ও সুবিবেচিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, ত্রাণ বিতরণ, বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজ বন্টন ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য পুনরায় একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব করছি। এ টাস্ক ফোর্সে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অর্থনীতিবীদ, সমাজবিজ্ঞানী, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করে এ টাস্ক ফোর্সকে অর্থবহ ও গতিশীল করার মাধ্যমে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আমাদের সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা এ মহাদুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো ইন-শা-আল্লাহ।আল্লাহ হাফেজ।বাংলাদেশজিন্দাবাদমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরমহাসচিববাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি