শিশুর পায়ুপথে গরম ডিম ঢুকিয়ে বর্বর নির্যাতন
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার গুনধর ইউনিয়নে ১০ বছরের এক শিশুকে দোকান ঘরের ধর্ণার সাথে উল্টো করে টানিয়ে পায়ুপথে গরম ডিম ঢুকিয়ে নির্যাতন করার ঘটনা ঘটেছে। শিশুটিকে নির্যাতন করেছে গুনধর বাজারের মো: মানিক হোসেন (২৪) নামে এক দোকানদার। এর আগে শিশুটির মুখে একের পর এক গরম আলু ঢুকিয়ে গামছা দিয়ে নাক-মুখ বেঁধে বেদম পিটানো হয়।
গত সোমবার (১৩ এপ্রিল) রাতে গুনধর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে শিশুটিকে মেরে ফেলার ভয় দেখানোয় ঘটনার জানাজানি হয় বুধবার রাতে।
নির্যাতিত শিশুটির নাম শাহনূর। সে গুনধর সাহেব বাড়ির সাখাওয়াত মিয়ার ছেলে। নির্যাতনকারী মানিক একই গ্রামের খাঁ হাটির মৃত আবদুল আওয়াল এর ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, বাবার সাথে শিশুটির মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ৮ বছর আগে। এর পর থেকেই শিশুটির মা তার আরো দুই সন্তানকে নিয়ে বিধবা বৃদ্ধ মায়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। শিশু শাহনূর তা নানীর বাড়িতে থেকে ওই দোকানদারের ফুট-ফরমায়েশ করতো। বিনিময়ে মাঝেমধ্যে খাবার পেতো।
সোমবার রাতে শিশুটিকে পঁচা ভাত খেতে দেয়া হয়। দুর্গন্ধযুক্ত ভাত না খেয়ে ফেলে দেয়ায় মানিক হোসেন শিশুটির ওপর অমানুষিক এই নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে মাথায় পানি ঢেলে কিছুটা সুস্থ করে বলে দেয়া হয় এই ঘটনা কাউকে জানানো হলে মেরে বস্তায় ভরে তাকে নদীতে ফেলে দেয়া হবে।
ভয়ে এ ঘটনা কাউকে জানায়নি শিশুটি। বুধবার বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে জানায় সে। লোমহর্ষক এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় এখন তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়। এলাকাবাসী ন্যাক্কারজনক এই ঘটনার বিচার চাইছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতিত শিশুটির নানীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শিশুটি বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। শিশুটির নানী রুমু বেগম (৭০) শিশুর শরীরের নির্যাতনের অবস্থা এ প্রতিবেদককে দেখান। গরম ডিমের নির্যাতনে শিশুটির পায়ুপথের আশপাশের চামড়া ঝলসে গেছে। পায়ুপথে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষতের। রুমু বেগম জানান, শিশুটিকে কিশোরগঞ্জে সৈয়দ নজরুল মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। করোনার কারণে তার ভর্তি নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে নির্যাতনকারী মানিক হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, শিশুটি আমার দোকানের টাকা চুরি করেছিল, এর জন্য কয়েকটি ছেলে তাকে এই শাস্তি দিয়েছে। আমি শুধু তাকে কয়েকটি চর থাপ্পর দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় লিখবেন না। আমি শিশুটির পরিবারকে ওষুধপত্র কিনে দেবো।
এ বিষয়ে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার বিকালে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় আসেনি। ঘটনাটি এইমাত্র শুনলাম। আমি পুলিশ পাঠাচ্ছি। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।