কর্মহীনদের সাহায্য বন্টনে খুলনা বিএনপি নেতা মঞ্জুর ছয় দফা

0

করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মহীন মানুষের সাহায্যে খুলনায় সরকারি খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি সম্পর্কে ছয়টি পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর শাখার সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু।

বৃহস্পতিবার প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে ঐতিহ্যবাহী বন্দর ও শিল্পনগরী খুলনায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ মানুষ প্রায় তিন সপ্তাহ কর্মহীন ঘরে অবস্থান করছেন। মহানগরীর জনসংখ্যার বিরাট অংশের মানুষ দৈনিক শ্রমের উপর নির্ভরশীল।

রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক-মাহেন্দ্র চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফুটপাত ব্যবসায়ী, হ্যান্ডলিং শ্রমিক, স’মিল শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চিংড়ি ও মৎস্য শ্রমিক, ইমারত শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে অমানবিক জীবন-যাপন করছেন। জুটমিলের প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক ১১ সপ্তাহ মজুরী পাননি। এছাড়া মাঝারী-ক্ষুদ্র ও কুঁটির শিল্প, কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মহীন নিম্ন আয়ের মানুষ। সবমিলিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, নভেল করোনা ভাইরাসে কর্মহীন খুলনার মানুষকে দেয়া সরকারের মানবিক সাহায্য কর্মসূচীতে দেয়া সামগ্রী অত্যন্ত অপ্রতুল। সেইসাথে অব্যবস্থাপনা, রাজনীতি ও দলীয়করণ এবং অসমবন্টন নীতিমালার কারণে নিরন্ন মানুষদের মধ্যে অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। দুই দফায় ৩১টি ওয়ার্ডে মাত্র ১৯ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হলে, শ্রমজীবী মানুষের সিংহভাগ মানুষ এই সাহায্যের আওতায় আসেনি। এদিকে, গত তিনদিন আগে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে খুলনার প্রতিনিধিদের টেলি কনফারেন্সের আলোচনায় সংকটের সঠিক তথ্য উপস্থাপিত হয়নি বরং অনেক কিছু করে ফেলার সাফল্য দাবি করা হয়েছে। এতো বড় একটি জাতীয় মহাদুর্যোগের প্রস্তুতি খুবই সামান্য। কতদিন এ অবস্থা চলবে তার সীমা আমাদের জানা নেই।

বিবৃতিতে তিনি চলমান এ সমস্যা ও সংকট মোকাবেলায় খুলনাবাসীর স্বার্থে ছয় দফা প্রস্তাব দেন।

প্রস্তাবগুলো হচ্ছে (ক) অবিলম্বে সর্বদলীয় ত্রাণ কমিটি, পর্যায়ক্রমে মহানগর, থানা, ওয়ার্ড কমিটি গঠন, (খ) শ্রমজীবী মানুষের বাস্তবভিত্তিক সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে, প্রয়োজনে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাহায্য নিতে হবে, (গ) ত্রাণসামগ্রী বন্টন নীতিমালা হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও স্বজনপ্রীতি বর্জিত এবং তালিকা হতে হবে বিতর্কের উর্ধে, এক্ষেত্রে অবশ্যই সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে তত্তাবধায়ক, (ঘ) সর্বক্ষেত্রে সমন্বয় সাধনের জন্য কমিটি গঠন করতে হবে, (ঙ) খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিকদের ১১সপ্তাহের পাওনা দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে এবং (চ) খুলনা মহানগরীর কমপক্ষে তিন লাখ মানুষের অন্ন সংস্থানের জন্য দ্রুত সরকারের কাছে চাহিদাপত্র প্রদান করতে হবে।

জনাব মঞ্জু বিবৃতিতে আরো বলেন, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাধনের প্রয়োজন খুবই জরুরী। জাতীয় মহাদুর্যোগে অবশ্যই আমাদের দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধে উঠে জনগন ও দেশকে বাঁচাতে হবে। আমাদের মনে রাখা দরকার, রাষ্ট্রের সকল সম্পদের মালিক জনগন। এই মহাসংকটে আমি, আমরা সকলেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের যাত্রী। তাই সংকীর্ণ মানসিকতা পরিহার করে জনকল্যাণে রাষ্ট্রযন্ত্র, সকল রাজনৈতিক দল-মতকে এক সাথে কাজ করতে হবে। মহান আল্লাহ্র প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা হোক সকল সম্প্রদায়ের মিলিত শক্তিতে দেশ গড়ার হাতিয়ার।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com