খুলনায় খাবারের জন্য রাস্তায় মানুষ, বিক্ষোভ
খুলনার রূপসা উপজেলায় খাবারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। কয়েক দিন ধরে খাবার না পেয়ে বাধ্য হয়ে তারা রাস্তায় নেমে আসেন বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এসব মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। উপজেলার পূর্ব রূপসা বাজার পার্শ্ববর্তী আদর্শগলির শত শত নারী-পুরুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেন।
করোনারভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে বাজারের বাঁশের বেরিকেড ভেঙে মিছিল করতে করতে পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কে সেনাবাহিনীর টহল গাড়ি পেয়ে তাদের কাছে দাবি তুলে ধরেন।
তারা দাবি করেন, এলাকার প্রতিটা মানুষ ঘরে থাকলেও তাদের কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বা খাদ্য আসেনি। মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে বললে তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এলাকার নেতারাও খোঁজ নিচ্ছে না। এদিকে পরিবারের সদস্যরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
তারা জানান, মাছ কোম্পানিগুলোর মালিক বেতন দিচ্ছে না। এদিকে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। কাজ-কাম নেই। অথচ টিভিতে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী গরিব মানুষকে সহায়তা পাঠিয়েছেন। সরকার ১০ টাকা কেজি করে চাল দিচ্ছিল তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন অসহায় মানুষগুলো। এছাড়া যারা দিন এনে দিন খেয়ে এতদিন জীবনযাপন করছিলেন তারাও পড়েছেন মহাবিপাকে।
বিক্ষোভের সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে তাদের বাড়িতে পাঠান।
পরে নৈহাটী ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বুলবুল সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে বলেন, কর্মহীনদের জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ পাচ্ছি তা দিয়ে কিছুই হচ্ছে না। এলাকায় ব্যাপক খাদ্যঘাটতি থেকে যাচ্ছে। আমার কাছে বিতরণের জন্য অল্প কিছু চাল আছে, দেখি তা দিয়ে কতদূর কী করতে পারি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার বলেন, রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে চার-পাঁচ হাজার অভুক্ত মাছ কোম্পানির শ্রমিক রয়েছেন। একটা কোম্পানি ছাড়া বাকি কোম্পানি শ্রমিকদের এখনো বেতন দেয়নি। আমি মালিকপক্ষের সাথে বেশ আগে থেকে কথা বলেছি। ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সাথেও কথা বলেছি যাতে শ্রমিকদের বেতন সময়মতো দেয়া হয়।
তিনি জানান, রূপসা একটি বিশাল জনবসতি এলাকা। এখানে সরকারি সহযোগিতার চাল এসেছে ৬১ টন। যা মাত্র সাত হাজার পরিবারকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু পূর্ব রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নেই নিম্নআয়ের শ্রমিক রয়েছেন পাঁচ-ছয় হাজার।
শ্রমিকদের বিক্ষোভের বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসক ও ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতাকে জানিয়েছেন।