পহেলা বৈশাখ, ১৪২৭ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাণী —
বাংলা নববর্ষের এই উৎসবমূখর দিনে আমি দেশ-বিদেশের সকল বাংলাদেশীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আবহমানকাল ধরে নুতন আঙ্গিক, রূপ, বর্ণ ও বৈচিত্র নিয়ে জাতির জীবনে বার বার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। আবহমানকাল ধরে গড়ে উঠা আমাদের ভাষা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অহংকার মিশে থাকে নতুন বছরের শুভাগমনে। আমাদের হৃদয়ে উদ্ভাসিত হয় দেশমাতৃকার অতীত গৌরব ও ঐশ্বর্য। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিশালত্ত্ব, শাশ্বত প্রাচীনতা পবিত্র এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ, তাই ১লা বৈশাখের এদিনে এক উদ্দীপ্ত প্রেরণায় জেগে উঠে জাতির আত্মপরিচয়। প্রতিবছর নববর্ষ হিরন্ময় অতীতের আলোকে সম্মুখ পানে, অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে তাগিদ দেয়।
নানা ঘটনা ও দূর্ঘটনার সাক্ষী ১৪২৬ সালের চৌকাঠ ডিঙ্গিয়ে ১৪২৭ সালের প্রভাতে অজানা কাল-প্রাঙ্গনের সীমানায় আমরা উপস্থিত হয়েছি। গত বছরের দুঃখ, অবসাদ, ক্লান্তি, হতাশা ও গ্লানিকে অতিক্রম করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা নিয়ে এসেছে বাংলা নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনের সংস্কৃতির দ্যোতক। বাংলা সন-তারিখ আমাদের প্রাত্যহিক জীবন, দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অপরিহার্য অনুষঙ্গ, তাই এটি জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সূদীর্ঘকাল ধরে গড়ে ওঠা ভাষা ও কৃষ্টির জমাট মোজাইককে ভেঙ্গে ফেলার জন্য বিদেশী আধিপত্যবাদী প্রভুরা সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমাদের এ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চলছে এক ভয়াবহ দুর্দিন। করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিশে^র বিপুল জনগোষ্ঠী আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে দিনযাপন করছে। তামাম দুনিয়াজুড়ে অসংখ্য মানুষ এই করোনাভাইরাসের আক্রমণে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের আক্রমণে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং বেশ কিছু মানুষের জীবনহানী ঘটেছে। তাই আজকের এই উৎসবের দিনে আমি দেশের জনগণকে অনুরোধ জানাবো-বিশ^ব্যাপী এই মহাসংকটকালে তারা সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করেন। আমরা এই দুঃসহ সময়ে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকবো। এই সংকটকালে আমি দলের নেতাকর্মীদের আহবান জানাচ্ছি-তারা যেন দুস্থ অনাহারী মানুষকে সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন। সকল সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনা মহামারী মোকাবেলা করতে হবে।
নববর্ষের প্রথম দিনে আমি সকলের কল্যাণ কামনা করছি। নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে প্রবাহিত হোক শান্তির অমিয় ধারা, সবার জীবন হয়ে উঠুক সমৃদ্ধময়। বৈশাখের বহ্নিতাপে সমাজ থেকে চিরতরে বিদায় হোক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি। নববর্ষের এই নতুন সকালে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে সকলের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং জাতীয় সকল পর্যায়ে সুখ ও শান্তি কামনা করি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে মানুষরা করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত, শান্তি ও আক্রান্তদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
১৪২৭ বাংলা সনের নতুন প্রভাতের প্রথম আলোতে আমি দেশবাসীকে আবারও জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
শুভ নববর্ষ।