সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা নাকচ করলেন শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্ট
করোনাভাইরাসের কারণে শ্রীলঙ্কায় নববর্ষের সব আয়োজন ভণ্ডুল হওয়ার পর রোববার সরকার ঘোষণা করে যে ৪ মে থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফরা কাজে যোগ দেবেন। আর ক্লাস শুরু হবে ১৪ মে থেকে। এর এক দিন আগে ঘোষণা করা হয় যে ১১ মে থেকে সব স্কুলে দ্বিতীয় সাময়িকের ক্লাস শুরু হবে।
এই ঘোষণা এক ধরনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার লক্ষণ এবং এখন লকডাউনে থাকা শ্রীলঙ্কার জনগণ একে স্বাগত জানিয়েছে।
তবে দুই দিন কোন করোনাভাইরাসের রোগী পাওয়া না গেলেও আবার নতুন রোগী সামনে এসেছে। রোববার রাত পর্যন্ত মোট করোনা রোগী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৩ জনে। সেরে উঠেছে ৫৬ জন। আর মারা গেছে ৭ জন।
সাধারণ মানুষ যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার জন্য মরিয়া তখন সরকার নির্বাচন নিয়ে সাংবিধানিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে বলে মনে করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
২ মার্চ শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেয়া হয়। ২৫ এপ্রিল নতুন নির্বাচন হওয়ার কথ ছিলো। কিন্তু মধ্য মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়।
বিরোধী ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) পার্লামেন্ট অধিবেশন ডাকতে বললেও তাতে আগ্রহী নয় গোতাবায়ার প্রশাসন।
এদিকে সাজিথ প্রেমাদাসার সামাগি জানা বালাভেজায়া (এসজেবি)’র সঙ্গে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ও তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপকাসা বৈঠক করেছেন বলে রোববার সানডে টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে।
বৈঠকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় নেয়া জরুরি ব্যবস্থা ও পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। শুকনো রেশন ও সবজি পেতে গিয়ে কিছু মানুষ যে রকম কঠিন অবস্থায় পড়েছে তা প্রেমাদাসা তুলে ধরেন বলে জানা গেছে। তবে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলো স্থগিত নির্বাচন।
ইসি চেয়ারম্যান মাহিন্দা দেশাপ্রিয়া চান যেন নির্বাচনের নতুন তারিখ ঠিক করে দেয় সু্প্রিম কোর্ট। কিন্তু তার এ পরামর্শ গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়ে বাতিল করে দেন গোতাবায়ার সচিব।
আগের পার্লামেন্ট বহাল করার সম্ভাবনাও বাতিল করে দেন প্রেসিডেন্ট। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে সংবিধানে মেনেই তিনি পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়েছেন। তাই এতে কোন সাংবিধানিক সঙ্কট দেখছেন না।
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম দিকে পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বলে আসছিলেন যে পরিকল্পনা মতো নির্বাচন হবে কিন্তু নির্বাচন স্থগিত করে ইসি।
সানডে আইল্যান্ড পত্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়, ইসি’র সদস্য প্রফেসর রত্নজীবন হুলি স্বীকার করেছেন যে করোনার কারণে স্থগিত হওয়া সাধারণ নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা ইসির দায়িত্ব। তবে সাংবিধানিক সঙ্কট এড়ানোর বিষয়টি প্রেসিডেন্টের হাতে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাধারণভাবে মনে করা হয় যে শ্রীলঙ্কা ভালোভাবেই কোভিড-১৯ মোকাবেলা করতে পেরেছে। প্রতিদিনই সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বড় আকারের সংক্রমণ ঘটেনি।