মনের পর্দা বড় পর্দা- কয়েকদিন যা পড়লাম ও বুঝলাম : মোবাশ্বিরাতুল জান্নাত
মোবাশ্বিরাতুল জান্নাত
কয়েকদিন যা পড়লাম ও বুঝলাম।
মনের পর্দা বড় পর্দা –
সূরা নূরের ৩০ -৩১ আয়াতে এসেছে
হে নবী! মুমিন পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্হান সমূহের হেফাজত করে। এটা তাদের জন্যে উত্তম। যা তারা করে আল্লাহ সে বিষয়ে পুরোপুরি অবহিত। আর হে নবী! মুমিন স্ত্রী লোকদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্হান সমূহের হেফাজত করে ও নিজেদের সাজসজ্জা না দেখায়।
তো আমরা পর্দা বলতে পুরুষদের দৃষ্টি সংযত ও নারীদের সৌন্দর্য ঢেকে রাখাকেই জানি। কেন জানি মাঝের লাইনগুলো স্কিপ হয়ে যায়। মুমিন স্ত্রীদেরকেও কিন্তু দৃষ্টি সংযত রাখার কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু সত্য কথা আমরা পর্দা মেনে চলা বোরখা পড়া মেয়েরাও এ ব্যাপারে একে বারে উদাসীন। নিজেকে ঢেকে রেখেছি কিন্তু চোখকে সংযত রাখতে পারিনা।
বান্ধবীদের মাঝে গল্পের একটা হট টপিক ক্রাশ খাওয়ার গল্প। আজকে অমক স্যার ক্লাস নিছে হা করে তাকিয়ে ছিলাম। ঐ ভাইয়া এত হ্যান্ডসাম।
ছেলেদের মত মেয়েদেরও হুট হাট ছেলেদের উপর ক্রাশ খাওয়ার গল্পগুলো কমন। এবং আমরা এগুলোকে মজা হিসেবে খুব সুন্দর দুষ্টামির ভঙ্গিমায় গল্প করতে পছন্দ করি। এবং এতে সংকোচবোধ করি না এমনকি আপাদমস্তক পর্দায় আবৃত বোনটিও। এটা আমাদের কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার।
তো মনের পর্দা বড় পর্দা বলা অপর্দানশীন নারী আসলেই কি মনের পর্দা করছি? এবং আপাদমস্তক ঢাকা আমিও কি আসলেই পুরোপুরি পর্দা করছি?
এবার আসি সূরা নূরের ১৯ নাম্বার আয়াতে
“যারা ইচ্ছা করে যে, মুসলমানদের মধ্যে নির্লজ্জতার প্রচার হোক, তাদের জন্যে পৃথিবীতে ও আখিরাতেও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।”
এই যে আমরা ড্যাশিং, হ্যান্ডসাম, সুইট কিউট লুক নিয়ে আলোচনা করি এটাও এক ধরনের অশ্লীলতামূলক কথা বার্তা। এটা ইসলামের দৃষ্টিতে অনুচিত এবং শাস্তিদায়কও। জেনে বা না জেনেই অসচেতনভাবে আমরা কাজটা করে যাচ্ছি।
এবার দুটো হাদীসের কথা বলি
১.
হযরত উম্মে সালমাহ রাঃ হতে বর্ণিত,
একদা তিনি ও হযরত মায়মুনা রাঃ রাসূল (সাঃ) এর নিকট বসে ছিলেন। হঠাৎ সেখানে ইবনে উম্মে মাকতুম এসে প্রবেশ করলেন। রাসূল (সাঃ) উম্মে সালামা ও মায়মুনা রাঃ কে বললেন, তোমরা (আগন্তুক) লোকটি থেকে পর্দা কর। আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী (সাঃ)! লোকটিতো অন্ধ আমাদেরকে দেখতে পাচ্ছে না। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, তোমরা দুজনও কি অন্ধ যে, তাকে দেখতে পাচ্ছ না? ( আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ)
২. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্ণিত। রাসূল(সাঃ) বলেছেন আল্লাহ ইরশাদ করেন-
দৃষ্টি তো ইবলীসের বিষাক্ত তীরগুলোর মধ্যে একটি। যে ব্যাক্তি আমাকে ভয় করে এ দৃষ্টি ত্যাগ করবে, তার বিনিময়ে আমি তাকে এমন ঈমান দেব, যার স্বাদ সে অন্তরে অনুভব করতে পারবে। ( তিরমিযী)
পর্দা নিয়ে উদাসীনতা ও দ্বিধা দ্বন্দ্ব থাকায় যেটুকু পড়লাম তার মধ্যে থেকে এটুকু লিখতে ইচ্ছা করলো তাই লিখলাম। ভুল ভ্রান্তি থাকলে সেটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত ত্রুটি।
পরিশেষে আব্দুল্লাহ মাহমুদ নজীবের ‘তারাফুল’ থেকে একটা লাইন বলে শেষ করতে চাই-
“যে চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখার স্বপ্ন দেখি,সেই চোখ দিয়ে কি হারাম কিছু দেখা যায়??”