চিকিৎসকদেরকে পিপিই দিলো জেডআরএফ ও ড্যাব

0

বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সঙ্কট থেকে বাংলাদেশের মানুষ যাতে দ্রুত বেরিয়ে আসতে পারে সে জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। এ লক্ষ্যে বর্ধিত আকারে কর্মতৎপরতা শুরু করেছে উভয় সংগঠন।

আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ও অন্যদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) প্রদান করেছে জেডআরএফ ও ড্যাব। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ডক্টরস অ্যাসোসিশেয়ন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুস সালাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) আহমেদ শফিকুল হায়দার পারভেজ, অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান, ডা: শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ্, প্রকৌশলী মাহবুব, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক ড: আব্দুল করিম, এ্যামট্যাবের বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ শাখা ছাত্রদলের ডা: রাকিবুল ইসলাম আকাশ, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান ছাড়াও হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের ডেপুটি ডাইরেক্টর ডাঃ এনামুল সহ চিকিৎসক, নার্স সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের পরামর্শে এই কার্যক্রমে নানাভাবে সম্পৃক্ত থেকে সহযোগিতা করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ শাখা ছাত্রদল।

রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসকদের মাঝে পিপিই প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী জেডআরএফ এবং ড্যাবের এই কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সমস্ত দেশবাসী এখন বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভয়ে ভীত এবং মারাত্মক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। পরীক্ষিতদের মধ্যে করোনা রোগী শনাক্তকরণের হার প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। ঢাকাসহ সারাদেশর ২০ জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের থাবা লক্ষ্য করা গেছে। এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের জাতীয় ঐক্য দরকার।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় (বৃহস্পতিবার) দেশের ১০টি জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন কমপক্ষে ১৫ জন। এমন হিসাব প্রায় প্রতিদিনের। সত্যিকারার্থে জনস্বাস্থ্য নিয়ে এ সরকার কিছুই করেনি। সরকারের মন্ত্রীদের মুখে দেশে উন্নয়নের জোয়ারের খবরে এতদিন দেশ ভেসে গেছে! তাহলে স্বাস্থ্যে খাতের এত বেহাল দশা কেনো? হাসপাতালে নেই কোনো আধুনিক সরঞ্জামাদি। পরীক্ষা করতে নেই সামগ্রী, রোগ ডায়ালাইসিসের কোনো ব্যবস্থা নেই, তেমন কোনো আইসিউ নেই, ১৭ কোটি মানুষের জন্য ভেন্টিলেটর আছে মাত্র ১৭শ। হাসপাতালে চিকিৎসক নেই, নার্স নেই। হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছে ঢাবি শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের বর্তমানে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

রিজভী বলেন, যখন থেকে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব শুরু হয়েছে সরকার তখন থেকেই কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেই মেডিকেল সেক্টরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সরকারের অবহেলার কারণেই স্বাস্থ্যখাতে চরম সঙ্কট বিরাজ করছে। এই সঙ্কটের মধ্যেও অনেক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিবেদিতভাবে কাজ করছেন। তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। যার যার অবস্থানে থেকে সবাইকে সচেতনভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এই দরিদ্র দেশে এই মুহূর্তে দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষ এখন কর্মহীন। চাল-ডাল যোগাড় করতে তারা যদি সামাজিক দূরত্বের দেয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসেন সংক্রমণ প্রতিরোধ তখন অসম্ভব হয়ে পরবে। কারণ ক্ষুধার আক্রমণ করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর। তাই রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ওইসকল জনগোষ্ঠীর জন্য আপদকালীন সহযোগিতাই পারে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বিএনপি বেশকিছু প্রস্তাবনা জাতির সামনে পেশ করেছে।

রুহুল কবির রিজভী অনুষ্ঠানের আয়োজকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও দেশনায়ক তারেক রহমান প্রবাসে। কিন্তু ইতিমধ্যেই তিনি আপনাদেরকে এবং সর্বস্তরের দলীয় নেতা কর্মীদের এই মহামারি মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। আজকে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এবং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) যৌথভাবে তার ডাকে সাড়া দিয়ে হটলাইনের মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ দিতে শুরু করেছেন। আপনাদের নির্বাহী পরিচালক ডা: ফরহাদ হালিম ডোনার এই মুহূর্তে অসুস্থ। এ অবস্থায়ও অন্য সহকর্মীরা মিলে বর্তমানে চলমান কর্মসূচিকে আপনারা বর্ধিত আকারে বেগবান করে যাচ্ছেন। বিএনপি তথা মহামারি আক্রান্ত জাতির পক্ষ থেকে আপনাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাই এবং আপনাদের সফলতা কামনা করি। সকলকে এই মহামারি মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো পরামর্শ এবং প্রাথমিক জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য ২৪ ঘন্টার মোবাইল হটলাইন চালু করেছে জেডআরএফ ও ড্যাব। রোগের ধরণ বুঝে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে ফোনে সংযুক্ত করার পাশাপাশি সমস্যা জেনে টেলিফোনেই রোগিকে প্রেসক্রিপশন দেয়া এবং মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে রোগীর চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ রোগীর বাড়ি পৌঁছানোর জন্য একটি টিম বিনামূল্যে সেবাদানে নিয়োজিত আছেন। এছাড়াও দেশের প্রায় সব বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরতদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ড্যাব।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com