‘হোম কোয়ারেন্টাইনেই’ থাকবেন খালেদা জিয়া: ফখরুল
নির্ধারিত ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হলেও দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ‘হোম কোয়ারেইনটাইনে’ই থাকবেন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে এখন সারা বিশ্বের যে অবস্থা এবং সারা দেশ এখন লকডাউনের মতো হয়ে গেছে- এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তো ১০০% তাঁকে (খালেদা জিয়া) কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেখানে উনি সেইফ আছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন উনি সম্পূর্ণ হোম কোয়ারেন্টাইন পরিবেশেই থাকবেন। আমরা আশা করি, এর মধ্যে (কোয়ারেন্টাইন অবস্থায়) উনি ভালো থাকবেন। যখন এই (করোনা ভাইরাস সংক্রমণ) পরিস্থিতির সমস্যাটা কমবে তখনই পরবর্তী অবস্থার কথা আমরা চিন্তা করবো।’
দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম যথেষ্ট অসুস্থ। এখনো ইনফ্যাক্ট ইম্প্রুভমেন্ট উনার অসুখের খুব বেশি হয় নাই। একটা মূল বিষয় ছিলো যে, তাঁকে চিকিসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া। আমাদেরও এ দাবি ছিলো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা (সরকার) বলেছেন যে, দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসা সেবার যে অবস্থা তাতে করে তো সব ডাক্তারাও সার্ভিস দিতে পারছেন না। যতটুকু পারছেন তাঁর ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে দেখেছেন এবং চিকিৎসা দিচ্ছেন। আমরা আশা করি যে, এর মধ্যে উনি ভালো থাকবেন।’
‘ডা. জোবাইদা রহমানের তত্ত্বাবধায়নেই চিকিৎসা’- খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসার সবকিছু লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধায়ন করছেন। আজকে উনার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ হচ্ছে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিবারের সদস্যরা তাঁর সাথে দেখা-সাক্ষাত করতে পারবেন।’
গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। সেদিন বিকেল ৫টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় আসেন এবং ওইদিন থেকেই ‘ফিরোজা’র দোতলায় তিনি কোয়ারেন্টাইনে আছেন। সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন আছেন। এই ১৪ দিন কেউ নিচে নামেননি বলে জানান তার ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক।
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে ভুগছেন।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে নির্জন কারাবাস এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়ার কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ পর্য়ায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। হাত-পায়ে আর্থারাইটিজের প্রচণ্ড ব্যথার কারণে উনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। এই ব্যাথা উপশমের ফিজিও থেরাপি দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) ডায়েবেটিক এখনও যথাযর্থ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।’
‘ফিরোজা’য় গেইটে পাহারারত নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, ম্যাডামের বাসায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসক টিমের সদস্যরা ও কয়েকজন নিকট আত্মীয়-স্বজন আসছেন।