ট্রাম্পের হুমকি, জবাবে করোনা নিয়ে রাজনীতি না করার আহ্বান
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ইস্যুতে বিশ্ব নেতাদের এক কাতারে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস। একই সঙ্গে, তিনি বলেছেন, করোনা নিয়ে রাজনীতির শেষ দেখতে চায় হু।
বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এই আহ্বান জানান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত করা হয় করোনাভাইরাস। এরপর বিশ্বের ২০৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ, মহামারির শুরু থেকেই চীনের পক্ষে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমনকি জাতিসংঘের এই সংস্থাকে অর্থ সহায়তার বিষয়ে আরেকবার ভাবা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তার পরিপ্রেক্ষিতে হু-র পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য এল।
তবে ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ‘প্রত্যেকটি জাতিই আমাদের অনেক কাছের। আমরা বর্ণান্ধ (কালার-ব্লাইন্ড)।’
করোনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা নিয়ে মঙ্গলবার প্রথম আক্রমণ করে বসেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই আক্রমণের পুনরাবৃত্তি করে বুধবার প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘সংস্থাটিকে অবশ্যই সঠিক জায়গায় অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
এরপর আরেক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের এই সংস্থাটিকে ভবিষ্যতে আর কোনো অর্থায়ন করা হবে কি-না, তা ভেবেচিন্তে দেখা হবে।’
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘সংস্থাগুলোকে (হু) কাজ করত হবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তার ফল পেতে হবে।’
তবে কোভিড-১৯ শুরুর পর থেকে এ রোগটি সম্পর্কে জানতে চীনের সঙ্গে হু-র কাজ করা ‘প্রকৃতপক্ষে জরুরি’ ছিল বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বুধবার সংস্থাটির প্রধান টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘দয়া করে জাতীয় পর্যায় থেকে ঐক্য বজায় রাখুন। কোভিড নিয়ে কোনো রাজনীতি করবেন না। দ্বিতীয়ত, বৈশ্বিক পর্যায়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে সততা-সমমর্মিতা বজায় রাখুন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কাছ থেকে আমরা সৎ নেতৃত্ব কামনা করি।’
“এক্ষেত্রে আমরা চাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়, সেই বিষয়ে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধররা নেতৃত্ব দিক। দয়া করে আপনারা ‘কোভিড পলিটিক্সকে কোয়ারেন্টাইনে’ রাখুন”-যোগ করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডাটা বলছে, সংস্থাটির অন্যতম বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র। এর বাজেটের ১৫ শতাংশই আসে দেশটি থেকে।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘ভাইরাসটি (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে কাজ করা এবং এর উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের এক সঙ্গে কাজ করার এটাই উপযুক্ত সময়।’