নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালের তিনজন করোনায় আক্রান্ত, জরুরি বিভাগ বন্ধ
নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক, ওয়ার্ডবয় ও নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই তিনজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
সোমবার (৬ এপ্রিল) রাতে ওই তিনজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আসাদুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের রসুলবাগ এলাকাতে একজন নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মারা যাওয়ার আগে ওই নারীকে ১০০ শয্যা হাসপাতালে আনা হয় প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও পরবর্তীতে আরও দুইজন আক্রান্ত রোগী তথ্য গোপন করে ১০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এসব কারণে জরুরি বিভাগের কয়েকজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সোমবার পাওয়া রিপোর্টে চিকিৎসক নার্স ও ওয়ার্ডবয়সহ তিনজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। ওই তিনজনকে ইতোমধ্যে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সে কারণেই আপাতত জরুরি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার জরুরি বিভাগ জীবানুমুক্ত করা হবে। জরুরি বিভাগ বন্ধ থাকলেও বহির্বিভাগ ও অন্যান্য সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে ও থাকবে।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, করোনায় মৃত্যু হওয়া নারী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। যার কারণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে সোমবার রাতে আমরা জানতে পেরেছি হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসকসহ কয়েকজনের শরীরে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। করোনার রিপোর্টটি পাওয়ার পরই আমরা জরুরি বিভাগের সব কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনে এটিকে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধ করতে পুরো হাসপাতালকে জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে মুছে আবার চালু করবো। যতদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলবে ততদিন জরুরি বিভাগ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। তবে বহির্বিভাগ চালু থাকবে সীমিত পরিসরে।
এর আগে গত ৩০ মার্চ বন্দরের রসুলবাগ এলাকার পুতুল নামে ৫০ বছর বয়সী একে নারী ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে মারা যান। পরে আইইডিসিআরকে খবর দিলে তারা এসে রোগীর মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। ২ দিন পর ২ এপ্রিল রিপোর্ট আসে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। কুর্মিটোলা নেয়ার আগে পুতুলকে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত পুরো নারায়ণগঞ্জ থেকে ৫৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ২৩ জন করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে।