আজ মানুষের ওপর পরীক্ষামুলক প্রয়োগ হচ্ছে করোনার টীকা

0

করোনার শক্তিশালী একটি টীকা বা ভ্যাকসিন আজই একজন রোগীর ওপর পরীক্ষামুলকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ খবরে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। যদি এই ভ্যাকসিন তার সক্ষমতা দেখাতে পারে, তাহলে সবার আগে এটি হতে পারে এই মহামারি সৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ওষুধ। এই কর্মযজ্ঞে অর্থায়ন করেছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষধনী বিল গেটস। 
অনলাইন বিজনেস ইনসাইডার এ খবর দিয়েছে। 
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের কমপক্ষে ২০টি টিম আলাদা আলাদাভাবে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে টীকা বা ওষুধ আবিষ্কারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এর আগে মডার্না নামের মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠান প্রথম মানুষের ওপর তাদের টীকা প্রয়োগ করে। এক্ষেত্রে ইনোভিও দ্বিতীয়।


বিল অ্যান্ড মেলিন্দা গেটস ফাউন্ডেশন ও অন্য অলাভজনক কিছু প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে যে টীকা আবিষ্কার করেছে পেনসিলভ্যানিয়ার ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস, তা আজ প্রথম কোনো রোগীর দেহে পরীক্ষামুলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। ইনোভিও হলো পেনসিলভ্যানিয়ার ওষুধ উৎপাদনের একটি ছোট প্রতিষ্ঠান। তারা আশা করছে এ বছরের শেষ নাগাদ তারা এই টীকার কমপক্ষে ১০ লাখ ডোজ উৎপাদনে সক্ষম হবে। সারা বিশ্ব যখন মৃত্যুর অন্ধকার উপত্যকায় গুমড়ে মরছে, তখন ইনোভিওর এই ঘোষণা নতুন করে কোটি কোটি মানুষের মধ্যে সাহস যোগাচ্ছে।

ইনোভিও ক্লিনিক্যালি এই টীকা পরীক্ষা করার রেগুলেটরি ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর এখন নতুন উদ্যমে কাজ করছে। তারা এ জন্য নির্বাচন করেছে সুস্থ কিছু স্বেচ্ছাসেবক। তাদের দেহে এই টীকা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হবে। প্রথম ব্যক্তির শরীরে আজ সোমবার প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা হবে। এই টীকার নাম দেয়া হয়েছে ইনো-৪৮০০। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষামুলকভাবে মানুষের ওপর করোনা ভাইরাসের টীকা প্রয়োগ করা হয়েছে। মধ্য মার্চে সেই কাজটি করেছে ম্যাচাচুসেটসের বায়োটেক বিষয়ক প্রতিষ্ঠান মডার্না। তারপরই দ্বিতীয় হিসেবে এ কাজ করছে ইনোভিও।

ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউস অব হেলথ-এর সংক্রামক রোগ ইউনিটের দীর্ঘদিনের নেতৃত্বে থাকা ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বার বার বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে নিরাপদ ও কার্যকর কোনো টীকা আসছে কিনা তা জানতে কমপক্ষে এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।

ইনোভিওর এই টীকা নিয়ে গবেষণা চালানোর কাজে সামনে এগিয়ে এসেছেন ফিলাডেলফিয়ার ৪০ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবী। তারা সমবেত হয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভ্যানিয়ার মেডিকেল স্কুলে, মিসৌরির কানসাস সিটিতে সেন্টার ফর ফারমাসিউটিক্যাল রিসার্চে। তাদের ওপর প্রয়োগ করা হবে এই টীকা। প্রতিজন ব্যক্তিকে মোট দুই ডোজ টীকা দেয়া হবে চার সপ্তাহের ব্যবধানে। অর্থাৎ আজ প্রথম ডোজ দেয়ার চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে। ইনোভিও বলছে, তারা আশা করছে এর ফল এই গ্রীষ্মের শেষের দিকে পাওয়া যাবে। আর সেটা হবে দ্রুততম সময়ের গবেষণা এবং ফল নিরাপদ হবে বলে তাদের প্রত্যাশা। যদি ওই পরীক্ষার ফল ইতিবাচক হয় তাহলে আরো এক দফা গবেষণা করা হবে এই টীকা নিয়ে। তাতে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতখানি কার্যকর এই টীকা তা পরীক্ষা করা হবে।

বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে তার প্রেক্ষিতে এমন কোনো টীকা বাজারে এলে তা নিয়ে রীতিমতো এক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। কারণ, বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই, যারা এই টীকা তাদের নাগালে পাওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়বে না। প্রতিটি দেশেই রয়েছে করোনা সংক্রমণ। 
তার প্রেক্ষিতে ইনোভিও বলেছে, এরই মধ্যে তারা তাদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছে। তার আওতায় ২০২০ সালের শেষ নাগাদ তারা ১০ লাখ টীকা বাজারে ছাড়তে সক্ষম হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com