ভারতে কোয়ারেন্টিনে তাবলিগ জামাতের ২৫ হাজার সদস্য
ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে গত মাসে তাবলিগ জামাতে অংশ নেওয়া ২৫ হাজার অংশগ্রহণকারীকে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতে ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে হরিয়ানা রাজ্যের পাঁচটি গ্রাম সিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের তাবলিগ জামাতের একটি আয়োজন গত ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে শুরু হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব ও কিরগিজস্তানের প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ ওই আয়োজনে অংশ নেয়। ১৫ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলে। অনুষ্ঠান শেষেও অনেকে সেখানে অবস্থান চালিয়ে যেতে থাকে। ২৪ মার্চ ভারতজুড়ে লকডাউন শুরুর সময়েও সেখানে প্রায় দেড় হাজার মানুষের অবস্থান ছিল। ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হট স্পট হয়ে উঠেছে নিজামুদ্দিনের ছয় তলা ভবনের ওই জমায়েত।
ভারত সরকার দাবি করেছে, ওই জমায়েতে অংশ নেওয়াদের মধ্য থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, আসাম, দিল্লি, হিমাচল, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মির, ঝাড়খন্ড, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তামিল নাড়ু, তেলেঙ্গানা, উত্তরাখন্ড এবং উত্তর প্রদেশ থেকে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটিতে মোট আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত ১ হাজার ৪৪৫ জনের সঙ্গে তাবলিগ জামাতের যোগসূত্র রয়েছে।
সোমবার পর্যন্ত সরকারি তথ্য অনুসারে, ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ২৮৮ জন। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩২৮ জন।
ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ভারতে ৪.১ দিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হয়েছে। গত মাসে নিজামুদ্দিনের ঘটনা না ঘটলে এই মাত্রায় সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগতো প্রায় ৭.৪ দিন।
সরকারি সূত্রের বরাতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ভারতজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন শেষ হওয়ার পরও অতি মাত্রায় করোনা প্রভাবিত এই ৬২ জেলায় বিধি-নিষেধ জারি থাকার সম্ভাবনা প্রবল। আগামী ১৪ এপ্রিল ভারতে করোনা লকডাউনের সময়সীমা শেষ হবে। সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়টি একটি ভৌগলিক সীমানার মধ্যে আটকে রয়েছে। ফলে, ভীতির কোনও কারণ নেই। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ভারতে ৮০ শতাংশের বেশি সংক্রমণ হয়েছে ৬২ টি জেলা থেকে।