চীনের পরীক্ষাগারেই তৈরী হয়েছে করোনাভাইরাস : আরো শক্ত প্রমাণ ব্রিটেনের!
করোনাভাইরাস এখন ইউরোপ আর আমেরিকায় ত্রাস চালাচ্ছে। চীনের পর ইউরোপকে ভরকেন্দ্র বানিয়েছে করোনা ভাইরাস। ইতালি, ফ্রান্স, স্পেনের পর ব্রিটেনেও মৃত্যু মিছিল চলছে। আক্রান্তের সংখ্যাও হু হু করে বাড়ছে। মারাও যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে মানুষ। ধনী দেশ, গরিব দেশের কোনো বাছবিচার নেই। আরো ভয়াবহ বিষয় হলো, এর চিকিৎসা করার প্রয়োজনীয় উপকরণের সঙ্কট পর্যন্ত মারাত্মক। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইতালির মতো ধনী দেশগুলো পর্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম পাচ্ছে না।
করুণ পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে ব্রিটেনে। যুক্তরাজ্যের হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের পরিবেশ ও সরঞ্জামের শোচনীয় অবস্থা উঠে এসেছে নিবিড় পরিচর্যা বিভাগের একজন চিকিৎসকের বক্তব্যে। করোনাভাইরাসের কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, যাদের অবস্থা সঙ্কটময় তাদের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতালগুলো।
মূলত নিবিড় পরিচর্যা সেবা বা আইসিইউ বাড়াতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু তাদের অভিযোগ যথাযথ সাপোর্ট বা সরঞ্জাম তারা পাচ্ছেন না।
বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তারা যে বিষয়টিতে জোর দিয়েছেন তা হলো সরঞ্জামের অভাব। তাদের গণমাধ্যমে কথা বলতেও নিষেধ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের একজন কর্মরত চিকিৎসক বিবিসির সাথে কথা বলতে রাজি হয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে। আমরা তার নাম পরিবর্তন করে দিয়েছি এখানে।
ড. রবার্টস, খাদের কিনারায় থাকা একটি হাসপাতালের কথা বলছেন। এই হাসপাতালের আইসিইউ এখন কোভিড-১৯ রোগীতে পরিপূর্ণ।
যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই করোনাভাইরাস আক্রান্ত হতে পারেন এমন ব্যক্তির থেকে ২০ সেন্টিমিটারের মতো দূরত্বে থেকে কাজ করছেন ডাক্তাররা, যেখানে সাধারণ মানুষকে বলা হচ্ছে ২ মিটার হতে হবে ন্যূনতম দূরত্ব।
রবার্টস বলছেন, যে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে তাদের জীবনে সেটা এখনই ভাবাচ্ছে, তারা এখন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন এবং নিজেদের পিপিই নিজেরাই তৈরি করছেন।
রবাটর্স বলেন, “এটা বাস্তব চিন্তা, নিবিড় চিকিৎসা যেসব নার্স দিচ্ছেন তাদের এটা এখনই প্রয়োজন। তারা যেখানে কাজ করছেন সেখানে ভাইরাস অ্যারোসলের মতো করে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের বলা হচ্ছে খুব সাধারণ টুপি পরতে যেটায় ছিদ্র আছে। যেটা কোনো সুরক্ষাই দিচ্ছে না।”
এটা প্রচন্ড রকমের ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কর্মীরা বিনের ব্যাগ ও অ্যাপ্রোন পরে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যের সরকার সরঞ্জাম বিতরণ নিয়ে যে ঝামেলা হচ্ছে সেটা স্বীকার করেছেন।
দেদার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও প্রতিষেধক মেলেনি। এমনকি জীবাণু উৎপত্তি নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। অনেকেরই অভিযোগ, জৈব অস্ত্রে শত্রুদের ঘায়েল করতেই পরীক্ষাগারে এই মারণ জীবাণু বানাছিল চীন। সেখান থেকেই জীবাণু সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকা আগেই এই অভিযোগ জানিয়েছিল। এবার তাদের সুরে সুর মেলাল ব্রিটেনও। রানির দেশের পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি কমিশন তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রিটেনের সংবাদপত্র ‘ডেইলি মেইল’ কোবরা কমিশনের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে লেখে, বিজ্ঞানীরা যতই বলুন, ইউহান প্রদেশের গবেষণাগারে জীবাণু তৈরির তথ্য উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে তারা ২০১৮ সালে চীনের সংবাদপত্র পিপলস ডেইলি চায়নার একটি প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ‘চীনের ভাইরোলজি ইন্সটিটিউট ইবোলার চেয়ে ভয়ঙ্কর এক জীবাণু নিয়ে গবেষণা করছে। মজাদার বিষয় হলো, ৩০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো ওই প্রতিষ্ঠানটি বণ্যপ্রাণী বাজার থেকে মাত্র দশ মাইল দূরে রয়েছে।’ আবার অসমর্থিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, মারণ জীবাণুতে প্রথম আক্রান্ত হয়েছিলেন ইউহানের ওই পরীক্ষাগারের বিজ্ঞানীরা। পরে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে ‘ডেইলি মেইল’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোবরা কমিশনের এক সদস্য জানান, ইউহানের গবেষণাগারে যে এই জীবাণু তারি হয়েছিল, সেই আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
ব্রিটেনের এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা করেছেন চীনা দূত জেং রং। তার কথায়, “বিশ্বেব স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিয়ে চীন চিন্তিত। তাদের স্বার্থে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে। চীন বিশ্বের সমস্ত দেশকে এই মহামারি মোকাবিলায় সাহায্য করছে। কিন্তু সেই চেষ্টাকে অপমান করা হল। চীনেই যদি এই ভাইরাস তৈরি হতো, তাহলে সেখানে এত মানুষকে মরতে হতো না।”
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন/বিবিসি