সারাদেশে সমগ্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ইতালির তুলনায় দেশে মৃত্যুর হার অনেক বেশি: ফখরুল
স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী এই প্রস্তাবনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সরকারের রোগ পরীক্ষা এবং আক্রান্তের পরিসংখ্যানের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সঠিক তথ্য নিয়ে অনেকেই সন্দেহ করছেন। এখন প্রয়োজন পরীক্ষা, পরীক্ষা আর পরীক্ষা।
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দেশে করোনায় মৃত্যুর হার ১০.৪ শতাংশ অথচ ইতালিতে মৃত্যুর হার ১০.২ শতাংশ। নিঃসন্দেহে রোগ পরীক্ষার স্বল্পতাই এই হিমশীতল মৃত্যুহারের কারণ। প্রতি হাজারে কোরিয়া যেখানে টেস্ট করেছে ৬ জন, সেখানে বাংলাদেশ প্রতি ১০ লক্ষে টেস্ট করেছে মাত্র ৬ জন। এটা কি উদাসীনতা না উদ্দেশ্যে প্রণোদিত, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ মহা দুর্যোগের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ তথ্যের অস্বচ্ছতার কারণে জাতিকে কোন চড়া মূল্য দিতে হয় কিনা সেটাই আশংকা।
দেশে বেশিরভাগ মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও হটলাইনে ফোন করে সেবা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে, কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত দেশে করোনা পরীক্ষার কিট নিতান্তই অপ্রতুল। হসপিটালগুলোতে পিপিই ও পরীক্ষা কিটের অভাবে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তদের চিকিৎসা করছে না। এমনকি অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালগুলো ভর্তি করছে না।
এখন প্রয়োজন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা চিহ্নিত করার জন্য বিপুল পরিমাণে পরীক্ষা কিট ও চিকিৎসক-নার্সদের জন্য পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং রাজধানী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্তসংখ্যক প্রাতিষ্ঠানিক করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র, সম্পূর্ণ পৃথক কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন, পর্যাপ্ত আইসিইউ স্থাপন ও ভেন্টিলেটর সরবরাহ, নিরাপদ দূরত্বে সম্পূর্ণ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করা।
মহা বিপদের ঝুঁকি থেকে চিকিৎসক-নার্সদের সুরক্ষা দেয়া রোগ নিরাময়ের পূর্বশর্ত। তাই জরুরিভিত্তিতে করোনা চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে পর্যাপ্তসংখ্যক পিপিই ও আনুষঙ্গিক টেস্টিং কিট সরবরাহ করতেই হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বারংবার তাগিদ সত্বেও বাংলাদেশ সর্বনিম্ন টেস্টিং দেশের অন্যতম।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ করোনার তৃতীয় স্তরে পৌঁছেছে। অর্থাৎ করোনা এখন কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমিত হওয়া শুরু হয়েছে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নীতিমালা অনুযায়ী সকলকে আরো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।