নিজের অবস্থা স্থিতিশীল, দেশবাসীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন খালেদা জিয়া
গত ২৫ মার্চ মুক্তির পর থেকেই হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডন থেকে পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা।
তবে পারিবারিক এবং দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নিজের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি নিয়মিত টিভি দেখছেন, পত্রিকা পড়ছেন। নানা মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখছেন। তিনি দেশবাসীকে এই মহামারী প্রতিরোধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া দেশের এ সংকটকালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীসহ সমাজের বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দীর্ঘ ২ বছরের অধিক সময় ধরে কারাবন্দি থাকা অবস্থায় ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটিজ আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগেছেন। খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন, বিএনপি প্রধানের হাত-পায়ের ব্যথাটা বেশি। তার শারীরিক অসুস্থতাও অনেক বেশি। তিনি হাঁটতে পারেন না। ব্যথা উপশমের জন্য গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে থেরাপি দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে তার ব্যথার কিছুটা উপশম হচ্ছে।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তার সুস্থতার অগ্রগতি ধীর। এজন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। পূর্ণাঙ্গ সুস্থ করতে দীর্ঘ সময় লাঘবে এবং আধুনিক চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার বলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকলেও টিভি ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে তিনি দেশের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। দেশের এই মহাসংকটের সময়ে দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের সচেতন, সতর্ক থাকার পাশাপাশি অসহায়, গরিব, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছি। তিনি দেশের বর্তমান মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন , দেশের মানুষকে এই মহামারীর আগ্রাসন থেকে মহান রাব্বুল আলামীন যেন রক্ষা করেন।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কোয়ারেন্টিনে থাকার কারণে এখন প্রধান কাজ হল ম্যাডামকে একা থাকতে দেয়া। উনি আগের চেয়ে মানসিকভাবে ভালো আছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় তার পুরনো রোগগুলো জটিল আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে আগের ওষুধগুলোই চলছে। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নতুন করে ওষুধ দেয়া শুরু হবে।’