করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে ৪১ চিকিৎসাকর্মীর মৃত্যু

0

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে ইতালির চিকিৎসাকর্মীরা। ভাইরাসটির সংক্রমণ শুরুর পর দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান, অ্যাম্বুলেন্স কর্মীসহ স্বাস্থ্যখাতের অন্য কর্মীরাও রয়েছেন। সংক্রমণ শুরুর প্রাথমিক অবস্থায় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবের মধ্যে অসুস্থদের সংস্পর্শে আসায় তারা আক্রান্ত হন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ইতালির ৪১ জন চিকিৎসাকর্মী মারা গেছেন।

মারাত্মক ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ২১৫ জনের। ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বেশি উপদ্রুত হয়েছে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় লোমবার্দে এলাকা। সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবের মধ্যে ওই এলাকায় অসুস্থদের সংস্পর্শে আসার পর সবচেয়ে বেশি চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।

লোমবার্দের ব্রেসসিয়া শহরের পোলিয়ামবুলাঞ্জা হাসাপাতালের সংক্রামক রোগের চিকিৎসক রবার্তো স্টেলিনা বলেন, ‘আমাদের ওপর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সমস্যা হলো যখন এই ঝড় শুরু হয় থকন আমরা অপ্রস্তুত ছিলাম। হয়তো বুঝতেও পারিনি পরিণাম কী হতে যাচ্ছে। জরুরি পরিস্থিতির প্রথম দিকেই কয়েক জন চিকিৎসক মারা যায়, তখন আমরা এই ঝড়ের বিষয়ে কিছুই জানতাম না। মারা যাওয়া কয়েক চিকিৎসককে আমি চিনতাম। এখন আমরা অনেক বেশি প্রস্তুত এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি’।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ ধরনের কক্ষ, ও সরঞ্জামের দরকার পড়ে। ইতালির চিকিৎসকেরা বলছেন, খুব কম রোগীদেরই বিশেষ ধরনের কক্ষে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ফলে ভাইরাসটি সহজে ছড়াতে পেরেছে।

মিলানের এক হাসপাতালের অ্যানাসথেসিস্ট জিওভান্না বলেন, ‘আমাদের লড়াই চলছে। ক্লান্তি নিয়ে চিন্তার অবসর নেই কারণ আপনি যখ কোভিড-১৯ রোগী দেখবেন আর তাদের রোগাক্রান্ত জীবন দেখবেন তখন মনে পড়তে বাধ্য হবে যে আপনার মা, বাবা কিংবা দাদাও এই বিছানায় পড়ে থাকতে পারেন’।

লোমবার্দের এক চিকিৎসক আন্না বলেন, শারিরীক ক্লান্তির চেয়ে মানসিক অবসাদই বেশি ভোগাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে কাজ করছি, চিকিৎসক হিসেবে তা কখনোই কল্পনা করিনি’। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ডাক্তারেরই নিজ নিজ ব্যক্তিগত পরিস্থিতি আছে। আমার ক্ষেত্রে যেমন আমি গত পাঁচ সপ্তাহ ধরে সন্তানদের দেখতে পাইনি’।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com