আরাকান আর্মিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠি ঘোষণা দিলো মিয়ানমার
আরাকান আর্মি (এএ) সোমবার জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠিকে বেআইনি সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। সরকার বলেছে যে, আরাকান আর্মির কর্মকাণ্ড জনগণের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে এবং দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করছে। আরাকান আর্মি এই মুহূর্তে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর সাথে তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।
সোমবার যে আদেশ জারি করা হয়েছে, সেখানে প্রেসিডেন্ট উ উইন মাইন্ত ঘোষণা দিয়েছেন যে, আরাকান আর্মি, তাদের রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান (ইউএলএ) ও সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলো ও ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড ও লক্ষ্য দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে এবং ১৫ (২) ধারা অনুযায়ী এগুলো অনৈতিক কর্মকাণ্ড। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল সো তুত এই আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি সন্ত্রাসদমন বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করছেন।
লে জেনারেল সো তুত একইসাথে একটি আদেশ জারি করেছেন, যেখানে ইউএলএ এবং আরাকান আর্মিকে সন্ত্রাসী গ্রুপ ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যারা রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও হুমকি সৃষ্টি করছে এবং স্থানীয় বেসামরিক ব্যক্তিদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও নিরাপত্তা আউটপোস্টে হামলা চালাচ্ছে।
সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন দ্য ইরাবতীকে জানিয়েছেন যে, সরকার এবং সামরিক বাহিনী আরাকান আর্মিকে শান্তি প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল “কিন্তু তারা তাদের সহিংস কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে”।
তিনি বলেন, “তারা তাদের বোকামি কাজকর্ম অব্যাহত রাখার কারণে তাদেরকে অবৈধ সংগঠন ঘোষণা করা হয়েছে। তাতমাদাউ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছিল যাতে তাদেরকে অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং সরকার এখন সেটা করেছে”।
২০১২ সাল থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগত ও সশস্ত্র গ্রুপগুলো সমান অধিকার ও স্বাধীকারের দাবিতে লড়াই করে আসছে এবং বর্তমানে সরকারের সাথে তাদের শান্তি আলোচনা চলছে। দেশের ২০টির মতো অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই দেশজুড়ে অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং তারা একটা গণতান্ত্রিক ফেডারেল ইউনিয়ন গড়ার জন্য রাজনৈতিক আলোচনার দিকে যাচ্ছে।
আরাকান আর্মিও সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক অস্ত্রবিরতি নিয়ে দর কষাকষি করছিল কিন্তু ফেব্রুয়ারি থেকে দুই পক্ষের মধ্যে কোন আলোচনা হয়নি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন আরও বলেছেন, “বিভিন্ন গ্রুপগুলোর মধ্যে আমাদেরকে পার্থক্য করতে হবে। ঠিক করতে হবে কারা শান্তি চায় এবং আইনি ও সামরিক উভয় দিক থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে”।
মুখপাত্র বলেন যে, রাখাইন রাজ্যের স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ যারাই এই গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন যে, “আইন সকলের জন্য সমান”।