‘আগাম বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়েছে, তাই দাম অস্বাভাবিক
দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার কথা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘আগাম বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়েছে, তাই দাম অস্বাভাবিক। দ্রুতই বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ বুধবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে আয়োজিত ‘ওয়ার্কশপ অন টিসিপি প্রজেক্ট অন ফল আর্মিওয়ার্ম (এফএডব্লিউ) এন্ড ই পেস্ট’ প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ইশতেহারে যা যা রয়েছে তার সব বাস্তবায়ন করা হবে। বিশ্বাস রাখুন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ওয়াদা এটা অবশ্যই পালন করা হবে। দেশে আর কারোই অভুক্ত থাকার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কৃষি নিয়ে অহংকার করেন, গর্ব করেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে অপ্রচলিত ফলের বাগান করেছেন। তিনি কৃষির উন্নয়নের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন। সরকার পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য অবশ্যই নিশ্চিত করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু গার্মেন্টস-এর ওপর নির্ভরশীল থাকবো না, কৃষিও দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। এক সময়ের খাদ্য ঘাটতির দেশ আজ খাদ্য রপ্তানির যোগ্যতা অর্জন করেছে। এখন কৃষির আধুনিকায়নের কাজ চলছে। আমরা এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বাংলাদেশ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে দানাদার খাদ্য তালিকায় ভুট্টার তেমন অবদান ছিলনা। দেশের কৃষি বিজ্ঞানীদের উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে, ফলে দেশের ভুট্টার উৎপাদন দিন দিন বেড়ে চলছে। ভুট্টা এখন যুক্ত হচ্ছে পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে। ভুট্টার ভবিষ্যৎ খুবই ভালো। তবে কৃষি তথা ভুট্টার জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে বিভিন্ন কিট পতঙ্গ, যার মধ্যে বেশি ক্ষতিকর হচ্ছে ফল আর্মিওর্ম, যেটি দমনের কোন কীটনাশক নেই। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতিকর কিট পতঙ্গ নজরদারি কৃষির জন্য মঙ্গলজনক।’ সোলার পদ্ধতিতে পরিবেশ বান্ধব কিট-পতঙ্গ দমন করার জন্য ই-পেস্ট কার্যক্রম খুবই উপযোগী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, ‘ফল আর্মিওয়ার্ম ছাড়াও অনেক ধরনের কিট পতঙ্গ রয়েছে, সেগুলোর নজরদারির জন্য এবং সোলার সিস্টেম-এর মাধ্যমে কীটপতঙ্গ দমনের জন্য এই প্রকল্প সত্যি কৃষির জন্য ভালো। আমরা এসকল কিট পতঙ্গ দমন করে ২০২১ সালের মধ্যে ভুট্টার উৎপাদন ৬১ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করবো। এ ক্ষেত্রে একটা বিষয় না বললেই নয় আমাদের কৃষির কীটনাশক ডিলাররা যে পোকার জন্য যে ঔষধ নয়, তারা সেই ঔষধ কৃষকদের দিচ্ছে, ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিত করতে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ফল আর্মিওর্ম যেহেতু মাটিতে বাসা বাঁধে এটি দমনের একমাত্র উপায় হচ্ছে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা। সরকারের প্রচেষ্টায় সাড়া দিয়ে এফএও আর্মিওর্ম দমনে সহযোগিতা করছে, এটা খুবই ভালো। আমরা চাই একজন কৃষকও যেন এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. মুঈদের সভাপতিত্বে ওয়ার্কশপে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।