বাংলাদেশকে ‘লকডাউন’র পরামর্শ ডব্লিউএইচওর
বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় বাংলাদেশে আংশিক বা পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিএইচও)। একই সাথে দেশে জরুরি অবস্থা জারিরও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে ডব্লিউএইচও’র প্রতিনিধি ও যুক্তরাষ্ট্রের কমিউনিকেবল ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশনের (এসডিসিপি) প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে বসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিদায়ী মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। বৈঠকে শেষে তিনিই এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানান।
বৈঠকে ডব্লিউএইচওর বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. বারদান জুং রানা, জরুরি জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. এল সাক্কা হাম্মান, সিডিসিপির যুক্তরাষ্ট্রের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ ও ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সামনের দিনগুলোতে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করার শঙ্কা প্রকাশ করে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি আগামী দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এটাকে প্রতিরোধের জন্য এখনই সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে।
ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধিদের দেয়া পরামর্শের বিষয়গুলো গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তুলে ধরে সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা একটি জনবহুল শহর, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে সম্পূর্ণ লকডাউন করা কঠিন। তারপরও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা ঢাকা কিংবা অন্য কোনও এলাকা আংশিক লকডাউন কিংবা ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা যায় কিনা সে বিষয়ে ভাবতে আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন। সেটি আমরা সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে পৌঁছে দেবো।
মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেন লকডাউন এবং জরুরি অবস্থা জারি করে ভালো ফল পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন মেয়র। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু কিছু এলাকা আংশিক লকডাউন করা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। অনেক দেশ জরুরি অবস্থা জারি করেছে। লকডাউন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করায় তারা ভালো ফল পেয়েছেন। সে দেশগুলোতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির গতি কমেছে। কোথাও কোথাও আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে চলে এসেছে।
সাঈদ খোকন আরো বলেন, আজকে আমাদের পর্যালোচনার সময় এসেছে। লকডাউন করলেও ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে কীভাবে বা কত সময় লকডাউন করা যায়, সেসব বিষয়ে পর্যালোচনার বিষয় রয়েছে।
এদিকে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. বারদান জুং রানা বলেন, আমরা তো এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। এটা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। আমরা কেউ ঝুঁকির বাইরে নই। প্রত্যেককেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক হতে হবে। শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, বিশ্বের অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থাও সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
উল্লেখ্য, কোনো এলাকা লকডাউন বলতে বুঝায় কেউ সেখানে প্রবেশ করতে বা সেখান থেকে বের হতে পারবেন না। ইউরোপের কয়েকটি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহরে এরই মধ্যে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।