বিশ্ব নজিরবিহীন সংকটে, পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়: জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মহামারী আকারে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড ১৯) ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব নজিরবিহীন সংকটে পড়েছে। ভাইরাসটির মোকাবেলায় দেশে দেশে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তা এ জটিল বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় যথেষ্ট নয়। বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দুয়ারে পৌঁছে গেছে।

বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সে সাংবাদিকদের জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেন, এটা এমন এক সময়, যখন বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে সমন্বিতভাবে উদ্ভাবনী কর্মপন্থা ঠিক করে কাজে নামতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আজ এমন এক নজিরবিহীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি যখন সাধারণ কৌশল কোনো কাজে আসবে না।’ তিনি বলেন, আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে এক বিশ্ব মন্দা, যার মাত্রা হয়তো অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। এ ভাইরাস বিশ্বজুড়ে কেড়ে নিয়েছে ১০ হাজারের অধিক মানুষের প্রাণ, আক্রান্ত হয়েছে আড়াই লাখের বেশি মানুষ।

গুতেরেস আরও বলেন, ‘বিশ্ব এখন একটি শত্রুর মুখোমুখি, আমরা লড়ছি এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে। বিশ্বনেতাদের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা একজোট হয়ে জরুরি ভিত্তিতে এ বিশ্ব সংকট মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করুন।’ ১৯৯৫ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা গুতেরেস স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানান সরকারগুলোর প্রতি। একই সঙ্গে যেসব দেশ এখনও যথেষ্ট প্রস্তুতি নিতে পারেনি, তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে তিনি ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কোনো ধনী দেশ যেন এটা মনে না করে যে শুধু তার দেশের নাগরিকদের সমস্যা মিটলেই সংকটের সমাধান হয়ে যাবে। বরং নিজেদের স্বার্থেই তাদের উচিত অন্য দেশগুলোকে সহায়তা করা, কেননা যে কোনো সময় যে কোনো দিক থেকে সংকটের উদ্ভব হতে পারে।

আগামী সপ্তাহে জি-২০ দেশগুলোর জরুরি বৈঠকে যোগ দেবেন জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেন, জি-২০ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আমার জোর আহ্বান, আপানারা আফ্রিকা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকে নজর দিন। তাদের আমাদের সহযোগিতা করতেই হবে, কারণ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখন তাদের দিকেই যাচ্ছে এবং তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা খুবই নাজুক। ফলে উন্নত দেশগুলোর সহায়তা এখন তাদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। আমরা যদি সেই সহযোগিতা দিতে না পারি, তার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। মৃত্যু হতে পারে লাখ লাখ মানুষের।