বিনয় কল্যাণ বয়ে আনে
বিনয় ও নম্রতা মহান আল্লাহ প্রদত্ত অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে অন্যতম। মানবীয় যতগুলো মহৎ গুণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম মহৎ গুণ। এ গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি ইহকালে সর্বসাধারণের মধ্যে হয় সম্মানিত, গ্রহণযোগ্য, স্মরণীয় ও বরণীয়। আর পরকালে হয় জাহান্নামের লেলিহান অগ্নিশিখা হতে মুক্ত ও আল্লাহর রহমতে ধন্য।
আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারক রহ: বলেছেন, ‘বিনয় ও নম্রতার মূল হলো, তুমি তোমার দুনিয়ার নিয়ামতের ক্ষেত্রে নিজেকে তোমার নিচের স্তরের লোকদের সাথে রাখ, যাতে তুমি তাকে বোঝাতে পার যে, তোমার দুনিয়া নিয়ে তুমি তার চেয়ে মর্যাদাবান নও। আর নিজেকে উঁচু করে দেখাবে তোমার চেয়ে দুনিয়াবি নিয়ামত নিয়ে উঁচু ব্যক্তির কাছে, যাতে তুমি তাকে বোঝাতে পার যে, দুনিয়া নিয়ে সে তোমার ওপর মর্যাদাবান নয়’।
সুফিয়ান ছাওরি রহ: তার শিষ্যদের বলেন, ‘তোমরা কি জান নম্রতা কী? তারা বলল, আপনি বলুন, হে আবু মুহাম্মাদ! তিনি বললেন, প্রত্যেক বিষয়কে যথাস্থানে রাখা। কঠোরতাকে স্বস্থানে, নম্রতাকে তার স্থানে, তরবারিকে যথাস্থানে, চাবুককে তার স্থানে রাখা’।
বিনয় ও নম্রতার ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশনা : কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, ‘রহমানের বান্দা তো হচ্ছে তারা, যারা জমিনে নেহায়েত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং জাহেল লোকেরা যখন তাদের সম্বোধন করে, তখন তারা নেহায়েত প্রশান্তভাবে জবাব দেয়।’ [সূরা ফোরকান : ৬৩]
আল্লাহ তা’আলা বিনয় ও নম্রতার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে মুহাম্মদ! আপনি আপনার অনুসারী মোমিনদের প্রতি বিনয়ী হোন।’ [সূরা আশ-শুয়ারা : ২১৫]
মহান আল্লাহ তাঁর বিনয়ের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর বিশেষ দয়ায় আপনি তাদের প্রতি বিনয়ী হয়েছেন। যদি আপনি বদমেজাজি ও কঠিন হৃদয়ের অধিকারী হতেন, তাহলে লোকেরা আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেত।’ [সূরা আলে ইমরান : ১৫৯]
আল্লাহ তা’আলা মানুষকে একে অপরের সাথে নম্র ব্যবহার করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়স্বজনকে দান করার নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎ কাজকর্ম ও সীমালঙ্ঘনজনিত সব কাজ থেকে নিষেধ করেন, তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে করে তোমরা এ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারো।’ [সূরা নাহল : ৯০]
কুরআনে আরো বলা হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহ পাকের ইবাদত করো, কোনো কিছুকেই তাঁর সাথে অংশীদার বানিও না এবং মাতা-পিতার সাথে ভালো ব্যবহার করো, যারা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, এতিম, মিসকিন, আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পথচারী, সঙ্গী ও তোমার অধিকারভুক্ত দাস-দাসী, অবশ্যই আল্লাহ পাক এমন মানুষকে কখনো পছন্দ করেন না, যে অহঙ্কারী ও দাম্ভিক।’ [সূরা নিসা : ৩৬]
নবীদের বিনয় ও নম্রতা :
পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য পাপাচারী ছিল ফেরাউন, যে নিজেকে সবচেয়ে বড় প্রভু বলে দাবি করেছিল। আল্লাহ তা’আলা মূসা আলাইহিস সালামকে সে পাপিষ্ঠ ফেরাউনের নিকট কোমল ভাষায় ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘তোমরা উভয়ে ফেরাউনের কাছে যাও, সে খুব উদ্ধত হয়ে গেছে। অতঃপর তোমরা তার সাথে নম্র ভাষায় কথা বলো, হয়ত বা সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভীত হবে।’ [সূরা ত্বা-হা : ৪৩-৪৪]
নূহ আলাইহিস সালাম তাঁর সম্প্রদায়কে অত্যন্ত নম্রতার সাথে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন, যাতে করে তারা তা গ্রহণ করে। ফলে তিনি তাদের স্বজাতি বলে সম্বোধন করেছেন। এখানে ‘ক্বউম’ বলে তিনি তাদেরকে বুঝিয়েছেন যে, তিনি তাদের মধ্য হতে একজন। আর সম্প্রদায়ের লোকজন পরস্পর-পরস্পরের কল্যাণকামী হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি তাদের বংশগত ভাই হিসেবে তাদের কাছ থেকে বংশীয় কোমলতা, মায়া-মমতার আকাক্সক্ষী ছিলেন, যাতে করে সম্প্রদায়ের লোকজন তাঁকে তাদের দূরবর্তী ও অমঙ্গলকামী হিসেবে আখ্যায়িত না করে। পবিত্র কুরআনে এসেছে, ‘স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন (নূহের সম্প্রদায়কে) তাদের ভাই নূহ আলাইহিস সালাম বলল, তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?’ [ সূরা আশ শুয়ারা : ১০৬] এখানে ‘আখি’ বলে বংশীয় ভাই বুঝানো হয়েছে এবং এর দ্বারা পরস্পরের মঙ্গল কামনার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। সম্প্রদায়ের সর্দার ও মোড়লগণ তাঁর দা’ওয়াতের জবাবে বলল : আমরা মনে করি যে, আপনি প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে রয়েছেন। এহেন পীড়াদায়ক ও মর্মন্তুদ কথার জবাবে নূহ আলাইহিস সালাম উত্তেজিত ও ক্রোধান্বিত হওয়ার পরিবর্তে সাদাসিধে ভাষায় তাদের সন্দেহ নিরসনে প্রবৃত্ত হলেন এবং নিজের পরিচয় তুলে ধরলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায় আমার মধ্যে কোনো পথভ্রষ্টতা নেই। বরং আমি বিশ্ব পালনকর্তার পক্ষ থেকে পয়গম্বর। আমি যা কিছু বলি পালনকর্তার নির্দেশেই বলি এবং আল্লাহ তা’আলার পয়গামই তোমাদের কাছে পৌঁছাই।’ [সূরা আল আ’রাফ : ৬১-৬২]
অনুরূপভাবে তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী হিসেবে সাব্যস্ত করলে তিনি বিনীত সুরে বলেন, ‘হে আমার কওম! একটু ভেবে দেখ। যদি আমি আমার রবের পক্ষ হতে স্পষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকি, আর তিনি যদি তাঁর পক্ষ হতে আমাকে রহমত দান করে থাকেন। তারপরেও যদি তা তোমাদের চোখে না পড়ে তাহলে, আমি কি ইহা তোমাদের ওপর তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে দিতে পারি?’ [সূরা হুদ : ২৭-২৮] এমনিভাবে তিনি বিরুদ্ধবাদীদের যাবতীয় সন্দেহের নিরসন করেছেন।
বিনয় ও নম্রতার ব্যাপারে রাসূলের নির্দেশনা : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে তো কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ [মুসলিম : ৬৭৬৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দান করার ফলে সম্পদ কমে না। ক্ষমার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা ব্যক্তির সম্মানই বৃদ্ধি করে থাকেন। আল্লাহর জন্য যদি কেউ বিনয় প্রকাশ করে তবে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তার মর্যাদা সুউচ্চ করেন।” [তিরমিজি : ২০২৯, মুসলিম : ২৫৯০]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ তা’আলা আমার কাছে ওহি পাঠালেন যে, তোমরা পরস্পর নম্রতা অবলম্বন করো। যাতে কেউ যেন কারো ওপর গর্ব না করে এবং কেউ যেন কারো ওপর অত্যাচার না করে।’ [মুসলিম : ৭৩৮৯]
রাসূলের জীবনে বিনয় ও নম্রতা : নবীজী যেমন আল্লাহর প্রেরিত নবী ছিলেন তেমনি ছিলেন শাসক। তবে নবীজী ছিলেন বিনয়ী শাসক। অন্যান্য শাসকের মতো তার ভয়ে সবাই কাঁপতে থাকুক- তিনি তা পছন্দ করতেন না। আবু মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, ‘এক লোক নবীজীর সাথে কথা বলতে এলো। তখন ভয়ে সে কাঁপছিল। নবীজী বললেন, শান্ত হও। আমি কোনো রাজা-বাদশা নই। আমি একজন সাধারণ নারীর সন্তান।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩৩১২]
অনেক সময় কোনো কোনো বেদুঈন এসে নবীজীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বসত। নবীজী সেগুলো হাসিমুখেই সহ্য করতেন। আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, ‘একদিন আমি নবীজীর সাথে হাঁটছিলাম। তাঁর গায়ে ছিল মোটা পাড়ের নাজরানী চাদর। হঠাৎ এক বেদুঈন এসে প্রচণ্ড জোরে চাদর টান দিলো। আমি দেখলাম, জোরে টান দেয়ার কারণে নবীজীর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। এরপর বেদুঈন লোকটি বলল, তোমার কাছে আল্লাহর যে সম্পদ রয়েছে তা থেকে আমায় দিতে বলো। তিনি বেদুঈনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন এবং বাইতুল মাল থেকে তাকে কিছু দিয়ে দিতে বললেন।’ [সহিহ বুখারি : ৩১৪৯]
আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, ‘এক মহিলা মানসিকভাবে একটু বিকারগ্রস্ত ছিল। সে নবীজীকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছে আমার কিছু প্রয়োজন ছিল। নবীজী তখন বললেন, হে অমুকের মা! বলো, তোমার প্রয়োজন পূরণের জন্য কোথায় যেতে হবে? নবীজী তখন মহিলার প্রয়োজন পূরণ করে দেন।’ [সহিহ মুসলিম : ২৩২৬]
আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, ইহুদীরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ‘আসসামু আলাইকা’ ‘আপনার মৃত্যু হোক’। উত্তরে তিনি বললেন, ওয়ালাইকুম। তখন আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহু বললেন, তোমাদের মৃত্যু হোক, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি অভিশম্পাত বর্ষণ করুন এবং তোমাদের ওপর রুষ্ট হোন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আয়েশা! থাম, নম্রতা অবলম্বন করো, কঠোরতা ও অশালীনতা পরিহার করো’। [বুখারি, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৩২]
সাহাবিদের জীবনে বিনয় ও নম্রতা : দুই বিখ্যাত সাহাবি আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু ও ওমর রাদিআল্লাহু আনহু কথা বলছিলেন। হঠাৎ আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহুর কথায় ওমর রাদিআল্লাহু আনহু মারাত্মক রেগে গেলেন। এমনকি ওই স্থান ছেড়ে চলে গেলেন। আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু খুবই লজ্জিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে ওমরের পেছনে পেছনে ছুটতে লাগলেন আর বলতে লাগলেন, ‘ভাই ওমর, আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।’ ওমর রাদিআল্লাহু আনহু ফিরেও তাকাচ্ছেন না! এক পর্যায়ে তিনি বাড়ি চলে গেলেন, পেছনে পেছনে আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহুও তার ঘরের দরজায় পা রাখলেন। কিন্তু ওমর রাদিআল্লাহু আনহু আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু এর মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেন।
উদ্বিগ্ন আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু ছুটে গেলেন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে। একটু পর ওমর রাদিআল্লাহু আনহুও সেখানে হাজির। আসলে দু’জনই অনুতপ্ত, লজ্জিত। ওমর রাদিআল্লাহু আনহু নিজের দোষ স্বীকার করে সব বর্ণনা দিলেন, কিভাবে আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহুর মুখের ওপর দরজা লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। সব শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওমর রাদিআল্লাহু আনহুর ওপর খুবই অসন্তুষ্ট হলেন। আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু আর সহ্য করতে পারলেন না। তিনি বলতে লাগলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! ভুল আমারই হয়েছে, তার কোনো ভুল নেই।’ তিনি ওমর রাদিআল্লাহু আনহুকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন।’ [সহিহ বুখারি : ৪২৭৪]
সুবহানাল্লাহ। কী চরিত্র, কী বিনয়, কী আচরণ! সোনার মানুষ ছিলেন তাঁরা, সত্যিই সোনার মানুষ।
বিনয়ী ও নম্র ব্যক্তিদের সম্মান
কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং বিনীত হয়েছে তাদের রবের প্রতি, তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে।’ [সূরা হুদ : ২৩]
বিনয়ী ব্যক্তি হাশরের মাঠেও পাবেন বিশেষ মর্যাদা। হাদিসের ভাষায়, ‘সার্মথ্য থাকা সত্ত্বেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বিনয়ের পোশাকে যে নিজেকে আবৃত করবে, আল্লাহ তা‘আলা কেয়ামতের ময়দানে তাকে ডেকে সব সৃষ্টির সামনে নিয়ে আসবেন এবং তাকে তার পছন্দমতো একজোড়া ঈমানের পোশাকে সুসজ্জিত করে সাজাবেন।’ [তিরমিজি : ২৪৮১]
আয়েশা সিদ্দিকা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘হে আয়েশা, আল্লাহ তা‘আলা অতি নম্র ব্যবহারকারী। সুতরাং তিনি নম্রতা ভালোবাসেন। তিনি নম্রতার জন্য এমন কিছু দান করেন যা কঠোরতার জন্য দান করেন না; এমনকি অন্য কিছুর জন্যও তা দান করেন না।’ [মুসলিম : ৬৩৬৫]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে জানাব না যে, কারা জাহান্নামের জন্য হারাম বা কার জন্য জাহান্নাম হারাম করা হয়েছে? জাহান্নাম হারাম আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী প্রত্যেক বিনয়ী ও নম্র লোকের জন্য’। [তিরমিজি : ২৪৮৮]
বিনয় মানুষকে উচ্চাসনে সমাসীন ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বে পরিণত করতে সহায়তা করে। বিনয়ীকে মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। যে যত বেশি বিনয়ী ও নম্র হয় সে তত বেশি উন্নতি লাভ করতে পারে। এ পৃথিবীতে যারা আজীবন স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় আসন লাভ করে আছেন তাদের প্রত্যেকেই বিনয়ী ও নম্র ছিলেন।
আমাদেরও হতে হবে বিনয়ী ও নম্র। নিজের কোনো সাফল্য দেখে কিংবা পার্থিব প্রাচুর্য লাভ করে গর্ব-অহঙ্কারে ফুলে ওঠা যাবে না। বরং মাটির মানুষকে সবসময় থাকতে হবে মাটির মতো বিনয়ী। নম্র ও বিনয়ী হলে কিন্তু আমাদেরই লাভ। মানুষ আমাদের ভালোবাসবে। বুকে টেনে নেবে। বিনয়ী ও নম্র মানুষকে সবাই ভালোবাসে। আল্লাহ তা’আলাও ভালোবাসেন।
লেখক : প্রবন্ধকার