মার্চ ২১ বিএনপির সাবেক মহাসচিব ওবায়দুর রহমান’র ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী

0

শনিবার, মার্চ ২১, ২০২০, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপির তৃতীয় মহাসচিব এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জননেতা কে এম ওবায়দুর রহমান এর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।

তিনি মার্চ ২১, ২০০৭, সালে বিএনপির জাতীয় স্থায়ীকমিটির সদস্য থাকা অবস্থায় ৬৬ বছর বয়সে রাজধানীর একটি হসপিটালে ইন্তেকাল করেন। তিনি মে ৫, ১৯৪০, ফরিদপুরের নগরকান্দার লস্করদিয়া গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম খন্দকার আতিকুর রহমান এবং মাতা রাবেয়া বেগম।

তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন।

ওবায়দুর রহমান স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে নগরকান্দা হাইস্কুল থেকে কৃতিত্ব সহকারে মেট্রিক পাশ করে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি হন। রাজেন্দ্র কলেজে তিঁনি ছাত্র জীবনে কলেজ ছাত্র সংসদ এর ভিপি নির্বাচিত হন এবং ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় একবার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দুইবার ছাত্রলীগের সভাপতি’র দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২-৬৩ শিক্ষা বর্ষে তিঁনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)’র জিএস নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুাথানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিঁনি তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা বর্তমান নগরকান্দা, সালথা ও কৃষ্ণপুর থেকে এমপি, নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় এমপি নির্বাচিত হয়ে তৎকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী’র দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যোগদান ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে বিএনপি গঠন করার ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন এবং তৎকালীন সরকারের মৎস ও পশু পালন মন্ত্রণালয়সহ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জীবনে তিঁনি পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপি’র মহাসচিব নিযুক্ত হন এবং মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটি’র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৬৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দশ বছরের অধিককাল কারান্তরীণ ছিলেন।

কে এম ওবায়দুর রহমান ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাস করেন।

ওবায়দুর রহমান ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৬২-১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে তিনি আইয়ুব বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অভিযোগে তাঁকে পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছয়দফা আন্দোলন এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ওবায়দুর রহমান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ফরিদপুর জেলা সমন্বয় ও প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক হিসেবে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে ফরিদপুরে যুব সমাজকে সংগঠিত করেন।

এপ্রিল মাসে পাকিস্তানি সৈন্যরা ফরিদপুর পুনর্দখল করলে তিনি ভারতে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের পুরুলিয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পলিটিক্যাল মোটিভেটর এবং পরে কলকাতায় আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।

তাঁর একমাত্র সন্তান শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন এবং বর্তমানে তিনি বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটি’র ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কেএম ওবায়দুর রহমান’র মৃত্যুবার্ষিকীতে শনিবার, মার্চ ২১, ২০২০ সকাল ৯টায় স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ জনগণ তাঁর সমাধিতে দোয়াপাঠ করবেন। সারাদিন কোরান তেলওয়াত ও বাদ আসর মিলাদমাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটরিয়ামে স্মরণসভা ও দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com