সরকারের শক্ত হাতে মোকাবিলা জরুরি -আবদুল আউয়াল মিন্টু
সরকারের শক্ত হাতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা জরুরি বলে মনে করেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন- এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেছেন, চীন-ইতালির মতো বাংলাদেশের সরকার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবে না। ফলে অর্থনীতি বড় ধাক্কা খাবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, একজন মারা গেছেন। ফলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আছে, এটা সত্য কথা। সবচেয়ে বড় আশঙ্কা দেশে করোনাভাইরাস বিস্ফোরণ আকারে একবার ছড়িয়ে পড়লে তা মোকাবিলা কঠিন হবে। আমাদের পণ্য আমদানি কমে গেছে। রপ্তানিও বড় ধাক্কা খাবে। দেশের অর্থনীতিতে যে ব্যাপক ধাক্কা আসছে, তা থেকে রেহাই পাওয়া মুশকিল হবে। মাল্টিমুড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আউয়াল মিন্টুর মতে, দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঝুঁকিতে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। শিল্প-কারখানায় বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের বেশ কিছু খাতে এরই মধ্যে প্রভাব পড়ছে। কাঁচামাল সংকটে পড়েছে শিল্প-কারখানা। সংকুচিত হচ্ছে উৎপাদন। দীর্ঘ তিন মাস ধরে চীনের সঙ্গে আমদানি- রপ্তানিতে বিশ্বের অনেক দেশ মহাসংকটে পড়েছে। ফলে শুধু চীনের সঙ্গে যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা রয়েছে, সেটা বন্ধ হয়নি। ভাটা পড়েছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়ও। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কয়েকটি খাতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু করেছে। আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, চীনের পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোতে করোনাভাইরাস ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে পড়েছে। এটা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। এতে শিল্পের উৎপাদনে ক্ষতি হবে। এখন সরকারের উচিত হবে আপদকালীন জরুরি ও বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ। এটা আমরা আশানুরূপ দেখছি না। তার পরও বলছি, শিল্প-কারখানাগুলো যেন বন্ধ না হয়, সেজন্য সরকারের এখনই সজাগ থাকতে হবে। শ্রমঘন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সুরক্ষার দিকেও নজর রাখতে হবে। এফবিসিসিআইর সাবেক এই সভাপতি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ও বিপর্যয়ের মুখে। স্থানীয় বাজারে পণ্যমূল্যের ওপর প্রভাব পড়ছে। ফলে আগামীতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। সরকারের উচিত হবে, প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং মূল্য কারসাজি বন্ধ করা। আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। তাই ক্রেতাদের মনের ভাব বুঝতে হবে। সব কিছু একটা ধাক্কা খাবে। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনলে কোনো কোনো খাতে উৎপাদন শূন্যের কোটায় নেমে আসবে। করোনাভাইরাসের কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে তৈরি পোশাকশিল্প, অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স শিল্প, ফিনিশড লেদার ও লেদার গুডস, কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিস, লাইভ অ্যান্ড চিলড ফুড, প্লাস্টিক শিল্প, ইলেকট্রিক্যাল মার্চেন্ডাইজ ম্যানুফ্যাকচারার্স শিল্প, কম্পিউটার ও কম্পিউটার অ্যাক্সেসরিজ শিল্প, মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যান্ড হসপিটাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স, ইলেকট্রনিক্স শিল্প, মুদ্রণশিল্প, জুট স্পিনার্স শিল্প ও চশমা শিল্প।