সব ফরম্যাটেই খেলতে চান ফিজ
বাড়ি চলে যাবেন? মানে সাতক্ষীরা? ‘এখনো বলতে পারছি না।’ অনিশ্চিত ফিজ। খেলা নেই মাঠে। করোনাভাইরাসের কারণে ঢাকা লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড বন্ধ। আবার কবে খেলা শুরু হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন কেউ। মোস্তাফিজুর রহমানও তাই ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারছেন না। তবে বাড়ি যে তাকে ডাকছে এবং সেই ডাক ফিজ খুব শুনতে পাচ্ছেন তা সহজে বোঝা যায়, ‘বাড়িতে মা-বাবা আছে তো। দেখি যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে যাব।’
বাড়ি যাওয়া না যাওয়া নিয়ে যেমন অনিশ্চয়তা তেমনি তার কণ্ঠে আরও এক অনিশ্চয়তা নিজের ইয়র্কার নিয়ে, ‘ইয়র্কারটা আমার আগের মতো হয় না। আগের মতো কনফিডেন্স পাই না। তবে চেষ্টা করছি।’ কাজ চলছে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য ভেতরে ঢোকানো ডেলিভারি নিয়ে। বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের সঙ্গে সামান্য আলাপ হয়েছে এ নিয়ে, ‘খুব বেশি একটা পরামর্শ নেই। শুধু একটা গ্রিপ দেখিয়ে দিয়েছেন। কবজিটা একটু ঠিক রাখতে বলেছে।’
যে কাটারের জন্য সেই ২০১৫-এর অবিশ্বাস্য শুরু থেকে এত যশ, হাঁকডাক তার, সেই কাটার আজকাল পড়ে ফেলছেন বিশ্বের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান। কাঁধের অস্ত্রোপচার সাবলীলতা কেড়ে নিয়েছে খানিকটা। ভেতরে-বাইরে দেওয়া সব কাটার ধার হারিয়েছে। ব্লকহোলে বল করতে গিয়ে মনে হচ্ছে কোথাও কোনো সমস্যা আছে। আবার সেøায়ারগুলো নিয়ে ভাবনার জায়গা আছে বেশ, ‘নাইনটিনের একটা ছেলের কাছেও একটা টিপস পেয়েছি। সেøায়ার বলটা নিয়ে বলছিলÑ সাইড থেকে না করে ওপর থেকে করলে ভালো। আমারও ভালো লেগেছে। ভালো একটা পরামর্শ দিয়েছে।’
জাতীয় দলে তিনি আছেন। সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই নিয়মিত মুখ। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতে যার টেস্ট শুরু সেই ফরম্যাটের ক্রিকেটের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আর নেই মোস্তাফিজ। বিসিবি লাল বলের চুক্তিতে তাকে রাখেনি। সাদা বলের চুক্তিতে থাকলেও ক্যাটাগরি ‘বি প্লাস’। মানে কাটার মাস্টার চূড়ান্ত রকমের অপরিহার্য নন। ‘আমি সব বলেই খেলতে চাই।’ এই এক কথায় নিজের ইচ্ছের সবটা জানিয়ে দেন ২৪ বছরের বাঁহাতি ফাস্ট বোলার। বুঝতে পারছেন নিজেকে নিয়ে আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে। ‘আমার জন্য ভালো। আমি বুঝব আমার উন্নতি করতে হবে। বুঝব যে এ দিয়ে থাকার যোগ্য আমি না।’ ফিজ বলছিলেন, ‘তখন আমি আরও উন্নতি করব আমার বোলিংয়ে যেন ভালো জায়গায় যেতে পারি।’
খেলা না থাকলেও গতকাল মিরপুর অ্যাকাডেমি মাঠে চলে এসেছিলেন মোস্তাফিজ। সেখানেই তার মুখ থেকে অনেক দিন পর কিছু কথা সরল। ‘এখন আমার সম্পর্কে সবাই জানে। প্রথমে তো জানত না আমি কেমন।’ সামর্থ্য ঠিকই আছে। সমস্যা যেখানে সেটা নির্দিষ্ট করে দিয়ে ফিজ বলছিলেন, ‘আগে আমি সহজেই উইকেট পেতাম। আর এখন আমার জন্য এটা একটু কঠিন হয়ে গিয়েছে।’
এখন দেশের বাইরে বেশি খেলতে হচ্ছে। ফিজের কাটার ঘরের উইকেটে বেশি ধরে। বলটা ঘোরে ভালো। চোখধাঁধানো একসময়ের ইয়র্কার আগের মতো হয় না। আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। ব্লকহোল ডেলিভারি নিয়ে বললেন, ‘আমার মনে হয় কোনো একটা জায়গায় ত্রুটি রয়েছে। এখন আবার খুব ভালো যাচ্ছে। কিন্তু সেভাবে কনফিডেন্স পাচ্ছি না। আরও অনুশীলন করা লাগবে।’ এর সঙ্গে যোগ করেন, ‘সব কিছু ঠিক আছে। আমার মনে হয় হাতটা হালকা একটু ইয়ে (নিয়ন্ত্রণহীন) হয়েছে। ওটা ঠিক হয়ে যাবে।’