করোনার বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে ইউরোপ
সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত এক লাখ ৬৯ হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে, মারা গেছে সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ৷
ইতালির পর ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ধীরে ধীরে বাড়ছে করোনার বিস্তার৷ ফলে দ্রুত নেয়া হচ্ছে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা৷ ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ৷ ২৪ হাজার ৭৪৭ জন সংক্রমিত, মৃতের সংখ্যা অন্তত এক হাজার ৮০৯৷
ইউরোপে ইতালির পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা স্পেনের৷ সে দেশে এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে আট হাজার ৭৪৪ জন আর মৃতের সংখ্যা ঠেকেছে ২৯৭-এ৷ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর দিক থেকে চীন, ইতালি আর দক্ষিণ কোরিয়ার পরেই রয়েছে তারা৷ রাস্তা এবং ট্রেন স্টেশগুলো পরিষ্কার করার কাজে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী৷
জার্মানিতে সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারের মতো, মৃত্যু হয়েছে এ পর্যন্ত ১২ জনের৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যে ফ্রান্স, লুক্সেমবুর্গ, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং ডেনমার্ক সংলগ্ন সীমান্ত আংশিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে৷
জার্মান অর্থমন্ত্রী বলেছেন, করোনার প্রভাব অর্থনীতিতেও পড়বে৷
জনজীবনেও পড়ছে করোনার প্রভাব৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা শুরু হয়েছে৷ ঘরের বাইরে, কর্মস্থলেও নেয়া হচ্ছে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা৷
জার্মানির পরিবেশমন্ত্রী স্ভেনিয়া শুলৎসে বলেছেন, জনজীবনে পরিবর্তনও জরুরি প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, ‘‘এখন সামাজিকভাবে মেলামেশা বন্ধ রাখতে হবে৷ সবাই জানেন কেন তা প্রয়োজন৷ প্রাত্যহিক জীবনে যে-কোনো পরিবর্তন খুব চোখে পড়ে, তবে আপাতত এভাবেই চলতে হবে৷”
ম্যার্কেল সরকারের মন্ত্রীরাও করোনার ব্যাপারে সতর্ক৷ শিক্ষামন্ত্রী আনইয়া ক্লারিচেক এক সভায় অংশ নিয়েছিলেন৷ সেই সভায় উপস্থিত একজনের দেহে পরে করোনা ধরা পড়ে৷ শিক্ষামন্ত্রী এখন তাই ঘরে বসেই করছেন দাপ্তরিক সব কাজ৷
যেসব জার্মান নাগরিক এখনো ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য লুফথহানসার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ম্যার্কেল সরকার৷
ফ্রান্সের শহরগুলির রাস্তাঘাট, দোকানপাট প্রায় ফাঁকা৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ৷ অন্য দেশের সঙ্গে ট্রেন এবং বিমান যোগাযোগ সীমিত করা হয়েছে৷ দেশের ভেতরেও কিছু ট্রেন এবং বাস এ মুহূর্তে চলছে না৷ পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়া এবং ১২৭জনের মৃত্যুর আগে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বা কম জরুরি ব্যবসা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার৷ তারপরও পরিস্থিতিতে দৃশ্যত তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ করোনায় সংক্রমিত চার শ’ মানুষের অবস্থা বেশ সঙ্কটাপন্ন৷ তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷তবে এমন পরিস্থিতিতেও রোববার সারা দেশে পৌর নির্বাচনের প্রথম পর্ব হয়েছে৷