কৃষকের বাড়িতে পুলিশের হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে কোনো অভিযোগ, মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই মধ্যরাতে এক বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে হোসেনপুর থানার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে ‘আটক’ আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তিন পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার মধ্যরাতে উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মিয়াফর আলীর বাড়িতে। হয়রানি ও ভাঙচুরের বিচার দাবিতে গতকাল রবিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিন জানা যায়, হোসেনপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের অসুস্থ মিয়াফর আলী তার তিন ছেলের সংসার নিয়ে কৃষিকাজ করে নিরীহ জীবিকা নির্বাহ করেন। থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ, মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই গত শনিবার মধ্যরাতে পাঁচ-সাতটি মোটরসাইকেলে থানার তিন-চারজন এসআই ও এএসআইসহ ১০-১২ কনস্টেবল তার বাড়িতে গিয়ে বুটজুতো দিয়ে অনবরত লাথি দিতে থাকে দরজায়। একপর্যায়ে দরজা-জানালা ভাঙচুর করে পুলিশের দলটি ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় নারীদের গালাগাল এবং মিয়াফর আলীর ছেলে আকরাম হোসেন, রিয়াদ মিয়া ও তাজিন আহমেদকে খুঁজতে থাকে। তাদের ঘরে না পেয়ে আরও গালাগাল করে রান্নার চুলা ভেঙে হুমকি দিয়ে ছেলেদের থানার ওসির সঙ্গে দেখা করতে বলে পুলিশের দলটি চলে যায়। এ সময় মিয়াফর আলীর তিন ছেলে জমিতে পানি সেচের কাজ করছিলেন। পুলিশের এমন হামলার কথা শুনে ভয়ে রাতেই তারা অন্যত্র পালিয়ে যান।
মিয়াফর আলীর ছোট ছেলে তাজিন আহমেদ বলেন, আমরা সবাই কৃষিকাজ করে জীবনযাপন করি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। থানায় আমাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। তারপরও পুলিশ আমাদের অন্যায়ভাবে হয়রানি করছে।
গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম হিমেল বলেন, তারা হয়রানির শিকার। এটা দুঃখজনক।
হোসেনপুর থানার ওসি শেখ মোস্তাফিক রহমান বলেন, আকরাম, রিয়াদ ও তাজিনের বিরুদ্ধে থানায় মৌখিক অভিযোগ রয়েছে। তাই পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ফোনে বিস্তারিত বলা যাবে না।কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।