সরকারের ভয়াবহ পরিণতি এগিয়ে আসছে: রিজভী
ক্যাসিনো ব্যবসায়ী আর জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে সরকার লোক দেখানো অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রহস্যজনক কারণে গত দশদিন আগে ক্যাসিনো, জুয়া এবং মাদক বিরোধী অভিযান শুরুর পর আমরা বলেছিলাম লোক দেখানোর জন্য এসব করা হচ্ছে। এখন সেটাই বাস্তব হচ্ছে। ক্রমেই হাস্যকর হয়ে উঠেছে এই কথিত অভিযান। ঢাক-ঢোল-তবলা বাজিয়ে কয়েকটা ‘যদু-মধু’ আটক করার পর এখন মন্ত্রীরা চিৎকার দিয়ে বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অথচ এখনো মূল অপরাধীরা অধরাই থেকে গেছে। এই দেশ বেশিদিন অনাচার-অবিচার-অন্যায়-দুর্নীতি সহ্য করেনি। এদের ভয়াবহ পরিণতি এগিয়ে আসছে। সাদ্দাদের বেহেশতের মতো এই দুরাচারদের স্বর্গ যে কোনো মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়বে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বিক্ষোভ মিছিল রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে রাজধানীতে এই বিক্ষোভ মিছিল হয়।নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। যা কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন রুহুল কবির রিজভী। এসময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ হেলাল, যুবদলের ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি গোলাম মাওলা শাহিন, বিএনপির কর্মী মোর্শেদ আলম সহ কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, পত্র-পত্রিকা-মিডিয়ায় যেসমস্ত গডফাদারদের নাম আসছে তারা বহাল তবিয়তেই রয়েছে, কারণ এই গডফাদারদের পৃষ্ঠপোষক বর্তমান মিডনাইট সরকার। আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে দেশের উন্নয়ন ঘটেছে শুধু মদ, জুয়া ক্যাসিনো, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজির। ঢাকায় কয়েকটি লোক দেখানো অভিযানেই তারা সীমাবদ্ধ। এই সামান্য অভিযানেই জনগণ দেখতে পেয়েছে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ চুনোপুটি নেতাদের ঘরে ঘরে অবৈধ টাকার খনি। কাড়িকাড়ি টাকা, সোনা-দানার খনি। এখন সবার কাছে এটি স্পষ্ট যে, ব্যাংকে কেনো টাকা নাই। ভুয়া উন্নয়নের ঠেলায় তাদের প্রতিটি বাড়ীই এখন টাকশাল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বাড়িতে এখন টাকা গোনার মেশিন বসিয়েছে, মানুষের সম্পদ লুট করে জমানো টাকা হাতে গোনা যায় না, তাই তাদের মেশিন লাগছে! এটা দশ বছরের শিশু থেকে শত বছরের বৃদ্ধ সবাই জেনে গেছে। দেশের সব মানুষ এখনো ভাত পায় না, লাখ লাখ মানুষের জীবন অভাব অনটনে দুর্বিষহ আর আপনাদের হাজার হাজার নেতা বিদেশে লুটের টাকায় বাড়ি কিনছে। শুধু বিদেশেই নয়, দেশেও তারা অবৈধ ক্যাসিনো উৎসবে মেতে উঠেছে। বর্তমান মিড নাইট সরকার দেশটাকে জুয়াড়ীদের আড্ডাখানায় পরিণত করেছে।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ভয়াবহ অসুস্থতার পরও এই মিডনাইটের সরকার তার প্রতি আরো হিংস্র হয়ে উঠেছে। জনগণের প্রিয় নেত্রীকে অন্যায় ও অবিচারমূলকভাবে কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার বেগম জিয়াকে কারাবন্দী রেখে তিলে তিলে নিঃশেষ করতে পারলেই সরকারের লক্ষ্য পূরণ নিশ্চিত হবে। কিন্তু দেশের জনগণসহ জাতীয়তাবাদী শক্তি দেশনেত্রীকে কারামুক্ত করতে প্রবল সাহস ও উদ্যম নিয়ে রাজপথে নেমে আসবে। আমি এই মুহুর্তে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।