পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধের কোনো সুযোগ নেই, তবে ভারতের জবাব দিতে প্রস্তুত: পাকিস্তান সেনাবাহিনী
পাকিস্তান সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার বলেছে যে ভারত আগ্রাসী মনোভাব প্রদর্শন করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। কারণ আগ্রাসনের জবাব হবে আরো প্রচণ্ড।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার বলেন, পরমাণু শক্তিগুলোর মধ্যে যুদ্ধের কোনো সুযোগ নেই। যুদ্ধের পরিণাম নিয়ন্ত্রণের অযোগ্য এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। উদ্দেশ্য রাতারাতি বদলাতে পারে, কিন্তু সক্ষমতা অটুট থাকে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বিমান হামলার বিরুদ্ধে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর প্রতিশোধ গ্রহণের বার্ষিকীতে ‘অপারেশন সুইফট রিটর্ট’-এর আয়োজন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ওই মুখপাত্র ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতেও একইভাবে যেকোনো ধরনের অপপ্রয়াসের জবাব দেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সক্ষমতা যাচাইয়ের চেষ্টা করলে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী বদলা নেবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের নিরাপত্তায় কোনো চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হলে আমরা জবাব দেব, আমাদের সক্ষমতা ও দৃঢ়সংকল্পের পরীক্ষা করা ঠিক হবে না।
ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, সামরিক ব্যয়ের দিক থেকে ভারত শীর্ষ তিন দেশের একটি। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাকিস্তান সক্ষম ও ভারতের মোকাবিলায় যথেষ্টভাবে প্রস্তুত।
তিনি আরো বলেন, ভারতীয় কর্মকর্তা ও সরকারের বিবৃতিগুলো পাকিস্তান গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করে থাকে।
পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মির দখল নিয়ে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে তিনি এই বক্তব্য রাখলেন।
গত সপ্তাহে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেন যে গত আগস্টে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ছিল নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘অখণ্ড ভারত’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথে একটি পদক্ষেপ এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হবে পাকিস্তানের হাতে থাকা কাশ্মির দখল করা।
তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের দখলদারিত্বে থাকা ভারতীয় ভূখণ্ড ফিরিয়ে আনা। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৪ সালে পার্লামেন্টে এ নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে বলেছিলেন যে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মির দখলের নির্দেশ পাওয়ামাত্র সেনাবাহিনী কাজ শুরু করে দেবে।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে একে দুটি এলাকায় ভাগ করে সরাসরি মোদি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। পাকিস্তান অভিযোগ করছে যে ভারত ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিসহ সব আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করছে। দেশটি এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।