আন্দোলনে পাশে থাকায় বাংলাদেশী ছাত্রীকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
সহপাঠীদের এনআরসি, ক্যা–বিরোধী বিক্ষোভে তিনি নাকি পাশে ছিলেন। এমনই অভিযোগে বিশ্বভারতীতে পঠনরত আফসারা অনিকা মিম নামে এক বাংলাদেশী ছাত্রীকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হলো। বুধবার ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) থেকে এই নির্দেশিকা আসা নিয়ে বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তার বন্ধুদের বক্তব্য, এরকম একটি বিক্ষোভের সময় আফসারা কিছুটা দূরে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
আফসারা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে এদেশে এসেছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অফ ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে। বুধবার ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) থেকে পাঠানো নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ভারত–বিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬–এর সেকশন ৩–এর সাব সেকশন (২) অনুযায়ী তাকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হলো। নির্দেশিকা পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তাকে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। তবে নির্দেশিকায় তিনি ভারত–বিরোধী ঠিক কী কার্যকলাপ করেছেন সে–বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, ‘অ্যান্টি গভর্মেন্ট অ্যাক্টিভিটি’তে যুক্ত রয়েছেন।
আফসারার সবে প্রথম সেমেস্টারের পড়া শেষ হয়েছে। বিশ্বভারতীর পঠনপাঠন শেষ করে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছিলেন। ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এই নির্দেশিকা পেয়ে সন্ত্রস্ত আফসারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কী করবেন। কেন এই অভিযোগ? ভারত–বিরোধী কী করেছেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। বাড়িতেও তিনি বিষয়টি জানাতে পারেননি। আফসারার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কেন এমন হলো? কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’
আফসারার এক সহপাঠী জানালেন, আইনের মারপ্যাঁচ কিছুই বুঝি না আমরা। হঠাৎ এই নির্দেশ পেয়ে আফসারা অসুস্থ। আমরা তাকে সঙ্গ দিচ্ছি। ও একটু সুস্থ হলে আমরা কথা বলব এ নিয়ে কী করা উচিত। তবে এটুকু বলতে পারি, এ নিয়ে আগে কখনো যোগাযোগ করা হয়নি। আজ হঠাৎ নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এনআরসি, ক্যা–বিরোধী কোনো বিক্ষোভে সমর্থন দেয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বাংলাদেশ উপ–দূতাবাস সূত্রে খবর, বিষয়টি তারা জেনেছে। কী কারণে এটা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। কবেকার কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা তারা জানার চেষ্টা করছে।