সিরিয়ায় ‘কালো সোনার’ লড়াই

0

সিরিয়ায় কথা উঠলেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘নিরাপত্তা’ এবং ‘সিরিয়ার তেলের’ কথা উল্লেখ করে থাকেন। সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে তার তেমন কোনো সতর্কবাণী এখন আর উচ্চারিত হয় না। হিলারি ক্লিনটন থেকে জাতিসঙ্ঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালি পর্যন্ত সবাই প্রায় প্রতিদিনই বাশার আল আসাদের করুণ বিদায় চাইতেন। অবস্থা তখন এমন একপর্যায়ে দাঁড়ায় যে, বাশার তার পরিবারের সদস্যদের মস্কো পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। যেমনটি গাদ্দাফি সবাইকে লিবিয়া থেকে; বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে ত্রিপোলিতে থেকে গিয়েছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে যখন যুক্তরাষ্ট্র কুর্দি অধ্যুষিত উত্তর সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করছেন, তখন তেলের নিরাপত্তার জন্য তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং মিডিয়ায় বলেন, ‘আমার তেল রক্ষা করা দরকার।’ রাশিয়ার ইন্টেলিজেন্স থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছিল যে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ফোর্স ও বিমান কমান্ডোরা প্রতি মাসে তেলসমৃদ্ধ উত্তর সিরিয়ার দের আজ জোর থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলারের তেল পাচার করে থাকে।’ এটা সিরিয়ার তেলের একটি ভগ্নাংশ মাত্র। অথচ পরিতাপের বিষয়, সিরিয়া কখনো শক্তিশালী তেলসমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারেনি।

২০১০ সালে সবে সিরিয়ার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মধ্যে গোলযোগ শুরু হয়। আরব বসন্তের ধাক্কায় সেখানে প্রশাসনবিরোধীরা নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে দেনদরবার শুরু করলে আসাদ তাদের সাথে কোনো বৈঠক-সমঝোতা করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি হামলা শুরু হয়। তখন সিরিয়া তেল ও গ্যাস খাতে বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করত। গ্যাস ও তেলের কারাখানাগুলো চালু ছিল। তেল সরবরাহে দেশ ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রদত্ত তথ্যমতে, সিরিয়া গড়ে চার লাখ ব্যারেল তেল প্রতিদিন উৎপন্ন করত যার মূল্য ছিল মাসিক ৭৩০ মিলিয়ন ডলার। যুদ্ধ যখন সিরিয়াকে গ্রাস করতে থাকে তখন তেলসমৃদ্ধ এলাকার নিরাপত্তা ধসে পড়ে।

দল-উপদল ও জিহাদি গ্রুপে লোকজন ভিড়ে যায়। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে কামান দাগাতে শুরু করলে সেনাবাহিনীর কয়েক ডজন অফিসার দেশ ছেড়ে পলায়ন করেন। ‘জিহাদিরা’ তেলের খণ্ড খণ্ড কূপগুলো দখল করে যত্রতত্র তেল বিক্রি করতে থাকে। উত্তর-পূর্ব এলাকায় কুর্দিদের অবস্থান মজবুত ছিল। সেখান থেকে বিদ্রোহীরা হাইড্রোকার্বন ফিল্ড আয়ত্তে আনে। সরকারি তেল শোধনাগার ও সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দেয়া হলো। যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় ২০১৩ সালে তেল উৎপাদন প্রতিদিন ৫৯ হাজার ব্যারেলে নেমে আসে, তারপর ৩৩ হাজার ব্যারেলে। অন্যভাবে বলা যায়, যুদ্ধপূর্ব উৎপাদনের ৮ শতাংশে নেমে আসে। ওই সময়টাতে ‘দায়েশ’ পশ্চিম ইরাক ও উত্তর সিরিয়ায় কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠিত করে। দায়েশ তেলসমৃদ্ধ প্রদেশ দের আজ জোরসহ এক-তৃতীয়াংশ তেল কূপ দখল করে নেয়।

সিরিয়া সরকার কুলাতে না পারায়, দায়েশ ২০১৪-১৫ সালে লাখ লাখ ব্যারেল তেল আল আমর, তানাক, দাফরা ও অন্যান্য তেলকেন্দ্র থেকে পাম্প করে, ট্রাকে-ট্যাংকার করে দেশের বাইরে চালান দিতে থাকে। এই ‘কালো সোনা’ জর্দান ও তুরস্কের ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করতে থাকেন। বিনিময়ে আইএস বা দায়েশ প্রতি ব্যারেল ১৫ থেকে ৬০ ডলার করে পেত। ওই এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী অপারেশন চালু থাকলেও দায়েশের নিজস্ব কৌশলে তেল বিক্রি করতে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ওই এলাকায় পাঁচ হাজার ৫০০ বার বিমান থেকে বোমাবর্ষণ করার রেকর্ডও রয়েছে। ২০১৪ থেকে ১৬ পর্যন্ত এই আক্রমণ চরমে উঠে। ২০১৫ সালে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ যোগ দেয়। রাশিয়ার কমান্ডোরা দায়েশের তেল সংগ্রহ ও সরবরাহের লাইন বন্ধ করতে সক্ষম হয়। ওই সময় রাশিয়া দায়েশের এক হাজারেরও বেশি তেল ভর্তি ট্যাংকার, ৩২টি রিফাইনারি বোমা মেরে জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দেয়। সিল করে দেয় ২৪টি পাম্পিং স্টেশন। এর ফলে মাসিক দুই বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যে আয় হতো দায়েশের তা বন্ধ হয়ে যায়। বোমাবর্ষণ ও সিরিয়ার ধ্বংস সাধনের হিসাব মেলালে দেখা যাবে, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেকগুণ বেশি ধ্বংস করেছে রাশিয়া।

২০১৮ সালের হিসাবে দেখা যায়, সিরিয়ায় তেল রির্জাভের পরিমাণ ২.৫ বিলিয়ন, সৌদি আরবের রয়েছে ২৯৭ বিলিয়ন, ইরানের ১৫৫ বিলিয়ন ও ইরাকের ১৪৭ বিলিয়ন ব্যারেল। সিরিয়ায় এই তেল রয়েছে ইরাক সীমান্তের দের আজ জোর প্রদেশে এবং উত্তরপূর্ব হাসসাক এলাকায়। ২০০৮ সালে সিরিয়া চার লাখ ছয় হাজার ব্যারেল প্রতিদিন উৎপাদন করত। ২০১১ সালে তা তিন লাখ ৫৩ হাজার ব্যারেলে নেমে আসে। বহু তেল ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ এখন আর সিরিয়ার হাতে নেই। এটা সিরিয়ার বিরোধী শিবিরের, কুর্দি আর আইএসের হাতে। ২০১৪ সালে আইএস উত্তর সিরিয়ার বেশির ভাগ তেলকূপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। বিদ্রোহীরা ২০১৫ সালে প্রতি মাসে ৪০ মিলিয়ন ডলার আয় করতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বোমার আঘাতে অনেক তেলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আইএসও অনেক তেলকূপ ধ্বংস করেছে।

২০১৭ সাল থেকে কুর্দি অধ্যুষিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিএফ) উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় ফোরাত নদীর পাশে, তেলকূপগুলো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এগুলো একসময় আইএসের হাতে ছিল। এসডিএফ বর্তমানে ৭০ শতাংশ সিরিয়ার তেলসম্পদ নিয়ন্ত্রণ করছে। মূল্যবান গ্যাসসম্পদও তাদের হাতে। মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো চার্লস লিস্টার এই তথ্য দিয়েছেন। তুর্কি হামলার পর অনেক জায়গা কুর্দিদের হাতছাড়া হলেও ফোরাত নদীর পূর্ব তীরের অনেক তেলকূপ এসডিএফের হাতে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ এখন নিজের তেলকূপগুলো নিয়ন্ত্রণ নিতে উদগ্রীব।

দের আজ জোর যেন ছোট এক সিরিয়া। তেলসমৃদ্ধ এই এলাকা দেখে পুরো সিরিয়াকে বোঝা যায়। শুরু থেকেই প্রদেশটি গুরুত্বপূর্ণ। জনসংখ্যা ১.২ মিলিয়ন। আয়তন ৩৩ হাজার বর্গকিলোমিটার। দামেস্ক ও বাগদাদে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও সড়ক এই নামের শহরের ওপর দিয়ে গেছে। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ফোরাত নদী। প্রদেশটি তেলসমৃদ্ধ। রয়েছে প্রচুর খনিজদ্রব্য। এক চুক্তির মাধ্যমে এসডিএফ বা সিরিয়ার কুর্দিরা এবং ২০১৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও এসডিএফ শহরটি নিয়ন্ত্রণ করছে। অনেকটা ইরাকের কিরকুকের মতো। কিরকুক নিয়ে ইরাক সরকার ও কুর্দি রিজিওনের কুর্র্দিদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। ট্রাম্প সেনা প্রত্যাহারের কথা বলে সিরিয়ার দুটি স্পটে সেনাদের সরিয়ে নেন। একটি দের আজ জোর এবং অপরটি ইরাকি সীমান্ত আল তানাফ। দুটি এলাকার তেলসমৃদ্ধ। ট্রাম্পের মতে যদি তেলকূপ এলাকা কেউ ছিনিয়ে নিতে চায় তবে তাকে ‘প্রতিহত করা হবে’।

তুরস্কের বোমাবর্ষণে ও আর্টিলারি শেলের কারণে সিরিয়ান কুর্দিরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হারিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র অনেক চেষ্টা করেও তাদের রক্ষা করতে পারেনি; বরং তুরস্কের সাথে ১৩ দফা চুক্তি করে বাফার জোনে সম্মতি দিয়েছে। কুর্দিরা এতদিন প্রচুর অর্থ কামাই করলেও এখন সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না। আমেরিকার হাতেও অঞ্চল রয়েছে অনেক; সেখান থেকে তারা নিয়মিত তেল আহরণ করে চলেছে।
কুর্দি অধ্যুষিত এসডিএফ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অক্ষশক্তি সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বেশির ভাগ দখল করে রেখেছিল। ফোরাত নদীর পূর্ব পাড়ের তেলসমৃদ্ধ এলাকাগুলোও তাদের হাতে পড়ে যায়। এর মধ্যে নাম করা হলো- আল ওমর তেলক্ষেত্র, আল তাবিয়া গ্যাস ফিল্ড, (যেখান থেকে দৈনিক ১৩ মিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস সংগ্রহ করা যায়)। এগুলো দের আজ জোর প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। যুক্তরাষ্ট্র তেল সংগ্রহের জন্য বেসরকারি ঠিকাদার নিয়োগ করেছে যারা সেনা ইন্টেলিজেন্সের অধীনে কাজ করত। সিরিয়ার ওপর অবরোধ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র তেল সংগ্রহের জন্য নতুন প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি আমদানি করে। পেন্টাগন হিসাব করে দেখেছে, সিরিয়ার তেল চুরি থেকে মাসিক ৩০ মিলিয়ন ডলার আসবে। ফলে পেন্টাগন, সিআইএ ও বেসরকারি ঠিকাদার তেল ক্ষেত্রগুলো ‘পাহারা’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যুক্তরাষ্ট্র নিজে, এসডিএফ বা তুর্কি সহযোগিতায় এলাকায় ‘পাহারা’ ও ‘থেকে যাওয়ার’ কূটনীতি গ্রহণ করে। ট্রাম্প প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘আমার তেল চাই।’

যুক্তরাষ্ট্রের মতো রাশিয়াও তেল সংগ্রহে উদগ্রীব। এত দূর থেকে দৃশ্যত অন্য কোনো লাভ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। রাশিয়া বাঁকা পথ না ধরে সোজা আসাদ সরকারের সাথে দেনদরবার শুরু করে তেলের জন্য। রাশিয়া Uraltekhnostroy নামে জ্বালানি এবং এনার্জি কোম্পানির মাধ্যমে সিরিয়ায় পাম্প স্টেশন, বিপুল পরিমাণ গ্যাস ফিল্ডের সরঞ্জাম, তেল, পানি ও গ্যাস ট্রিটমেন্ট প্লান্টের যন্ত্রপাতি নিয়ে আসে। উত্তর সিরিয়ায় তারা বৃহদাকার দুটি তেল শোধনাগার সৃষ্টি করেছে। এরপর রাশিয়া সিরিয়ার পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে দেশটির অন্যান্য স্থানে অবস্থিত কূপের সংস্কার, তেল সংগ্রহ ও শোধনের প্রস্তাব দিয়েছে। এটা অনুমোদনে কোনো বাধা নেই। মূলত সিরিয়ার ‘না’ বলার ক্ষমতাই নেই। সিরিয়ার থার্মাল পাওয়ার স্টেশন আধুনিকীকরণ, পুনর্নির্মাণ ও গ্যাস সঞ্চালনের জন্য উভয় দেশ চুক্তি করেছে। বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের জন্য প্রকল্প রয়েছে দুটি দেশের মধ্যে।

সিরিয়ার যুদ্ধকালীন অবস্থায়ও পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য দরকার প্রচুর অর্থ। বৈদেশিক সহায়তা না ধরলে, সিরিয়ার তেল-গ্যাসসম্পদ থেকে রাজস্ব আহরণ একটি বড় খাত। এখন সিরিয়া নামক ‘শ্মশান’কে পুনর্জীবিত করতে হলে কম পক্ষে ২০০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন ডলার দরকার। এই মুহূর্তে কাজ শুরু করা গেলেও এক দশক লাগবে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসতে। ইরাকের বেলায়ও এমন হিসাব করা হয়েছিল। দুই বছর পার হলেও এখনো কোনো সহায়তা বা উন্নয়নের কিছু শোনা যাচ্ছে না। সিরিয়া বা লিবিয়ার বেলায়ও তার ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও আইএস ভোমরার মতো সিরিয়ার কালো মধু খাচ্ছে। এদের তাড়ানোর কোনো ওষুধ দামেশক সরকারের নেই। তার ওপর রয়েছে বিভিন্ন বিদ্রোহীগোষ্ঠী।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোনো উন্নয়ন সহায়তা এখন দেয়া হবে না। তাই প্রেসিডেন্ট আসাদের উন্নয়ন চিন্তা বাদ দিয়ে কোনো মতে জান রক্ষা করার চিন্তা করাই উত্তম। এর মধ্যে উপকূলবর্তী প্রদেশ লাটাকিয়ায় রয়েছে রাশিয়ার উচ্চপ্রযুক্তির এয়ার বেজ এবং এস ৪০০ মিসাইল সিস্টেম। ২০১৫ সালে এই ঘাঁটি আনুষ্ঠানিক অপারেশন শুরু করে, মূলত আইএসের বিরুদ্ধে। রাশিয়া এই ঘাঁটির ব্যাপারে সিরিয়ার সাথে ৪৯ বছরের চুক্তি করেছে যা ‘প্রয়োজনে’ ২৫ বছর বৃদ্ধি করা যাবে। এই বেজকে সহায়তা করার জন্য তারতুস নৌ-বেজকেও নতুনভাবে সজ্জিত করা হয়েছে। এ অবস্থায়, দ্রুত সিরিয়ায় শান্তি ফিরে আসা, বিশ্ব শক্তিগুলোর সিরিয়া থেকে বিদায় কিংবা সিরিয়ার পুনর্গঠন, প্রভৃতি কোনো কিছুই সম্ভব নয়।

রাশিয়ার অর্থনীতি প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানির ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। অপর দিকে, ইউরোপ প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর বেশি নির্ভরশীল। রাশিয়া বিশ্বের সেরা প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের দেশ, তার পরই ইরানের স্থান। রাশিয়া চায় নিরাপদ কোনো অঞ্চলে সঞ্চালন লাইন হোক। তাই সিরিয়া ও তুরস্ক রাশিয়ার কাছে কৌশলগত এলাকা। সিরিয়ায় রাশিয়ার উপস্থিতি সরকারকে রক্ষা করার চেয়ে পাইপলাইন রক্ষা করার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া সিরিয়ায় সবই চায়। সামরিক ঘাঁটি, নৌঘাঁটি, পুনর্বাসন, তেল ও গ্যাস পাইপলাইন, বিনিয়োগ, সিরিয়া পুনর্গঠনে ঠিকাদারি ও সহায়তাসহ সবই। আমেরিকা ও ইউরোপের সাথে কোনো দর কষাকষির সময় রাশিয়ার কাছে তাই ‘সিরিয়া কার্ড’ এক মোক্ষম অস্ত্র।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com