‘শিক্ষকরা আজীবন বঞ্চনার শিকার’

0

‘শিক্ষকরা আজীবন বঞ্চনার শিকার। তাদের সম্মান-মর্যাদার কথা বলা হয়। তাদের পেশা মহান বলে বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া হয়। কিন্তু বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধায় তারা সবচেয়ে নিম্ন স্তরে। শিক্ষকের যেন ক্ষুধা নেই, সংসার নেই, সন্তান নেই। তিনি মহাপুরুষ। তার কিছুই লাগবে না- এমন ধারণা শিক্ষকতা পেশার জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু।’

কথাগুলো বলেছেন রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি শিক্ষকদের এমন বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন।

সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৫ ও সরকারি সাত কলেজ শিক্ষা ক্যাডারের স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ক’ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের অনেক সহকর্মী প্রভাষক হিসেবেই অবসর নিয়েছেন। একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিতে আটকে আছি আমরা। কেউ কথা রাখেনি…। আমাদের প্রাথমিকের শিক্ষকরা একজন ক্লার্ক বা অ্যাকাউন্টেন্টের চেয়েও কম বেতন পান। শিক্ষকের যেন ক্ষুধা নেই, সংসার নেই, সন্তান নেই। তিনি মহাপুরুষ, তাই তার কিছুই লাগবে না—এ ধারণাই আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু।’

তিনি বলেন, আমাদের ‘ফ্রিজ’ করে রাখা হয়েছে। প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার। একজন প্রাথমিক শিক্ষক, একজন প্রাইভেট টিউটর কিংবা একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক- সবাই শিক্ষক। কিন্তু বিসিএস শিক্ষক হলে কেন তাকে আলাদা করে দেখা হয়? আমাদের মর্যাদা কোথায়? আমরা শুভঙ্করের ফাঁকিতে আটকে আছি। শিক্ষক সমাজের এ অবস্থা জাতির জন্য শুভ নয়।

সাত কলেজের বিষয়ে অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, শিক্ষকরা যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন, তা বিকৃতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। আমাদের সন্তানদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আমরা ক্যাডার চাই, ঢাকা থাকতে চাই; যেন এটা অপরাধ। অথচ আমরা আমাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও স্বীকৃতির জন্য লড়ছি। আমরা যদি এক হয়ে দাঁড়াই, তাহলে কেউ আমাদের দাবিকে অগ্রাহ্য করতে পারবে না।

বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক তামান্না বেগম বলেন, রাষ্ট্র শিক্ষকদের কিছু দিতে গেলেই দরিদ্র হয়ে পড়ে। এমন ধারণা বদলানো দরকার। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও শিক্ষকরা এখনো প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। তবু সীমিত সুযোগ ও সামর্থ্য নিয়ে তারা জাতি গঠনের কাজ করে যাচ্ছেন নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের সঙ্গে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.